প্রশ্ন॥ কার্ল মার্কসের মতবাদ ও এম. এন রায়ের র্যাডিক্যাল হিউম্যানিজমের উপর একটি তুলনামুলক আলোচনা পেশ কর। Karl Marx's theory and M. A comparative discussion on Radical Humanism by N Roy
![কার্ল মার্কসের মতবাদ ও এম. এন রায়ের র্যাডিক্যাল হিউম্যানিজমের উপর একটি তুলনামুলক আলোচনা কার্ল মার্কসের মতবাদ ও এম. এন রায়ের র্যাডিক্যাল হিউম্যানিজমের উপর একটি তুলনামুলক আলোচনা](https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhCyHoIpkVrg-a_uYmxS7PM9oRwyVrHZttBuya-bFN5J-IAWM1EQAbMzaGKT9aravNcDIy1EPTsr3HMP_USyOvCAbGsPod0gwIWcMf4yZl796IbOeVgE2B7FBm29ydHeruUq5UM_VjVMNGa_GXhRbecQ3QBLtbpn39pOtu10yzGeY4Ypb2_fVPzRAaz/w400-h225/%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%B6%E0%A7%8D%E0%A6%A8%E0%A5%A5%20%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%B2%20%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%95%E0%A6%B8%E0%A7%87%E0%A6%B0%20%E0%A6%AE%E0%A6%A4%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%A6%20%E0%A6%93%20%E0%A6%8F%E0%A6%AE.%20%E0%A6%8F%E0%A6%A8%20%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A7%87%E0%A6%B0%20%E0%A6%B0%E2%80%8C%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%A1%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%B2%20%20%E0%A6%B9%E0%A6%BF%E0%A6%89%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%9C%E0%A6%AE%E0%A7%87%E0%A6%B0%20%E0%A6%89%E0%A6%AA%E0%A6%B0%20%E0%A6%8F%E0%A6%95%E0%A6%9F%E0%A6%BF%20%E0%A6%A4%E0%A7%81%E0%A6%B2%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A7%81%E0%A6%B2%E0%A6%95%20%E0%A6%86%E0%A6%B2%E0%A7%8B%E0%A6%9A%E0%A6%A8%E0%A6%BE%20%E0%A6%AA%E0%A7%87%E0%A6%B6%20%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A5%A4.jpg)
কার্ল মার্কসের মতবাদ ও এম. এন রায়ের র্যাডিক্যাল হিউম্যানিজমের উপর একটি তুলনামুলক আলোচনা
উত্তর : ভূমিকা : মানবেন্দ্রনাথ রায় জীবনের এক পর্যায়ে বিপ্লবী মার্কসবাদী ছিলেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদী ব্যাডিক্যাল হিউম্যানিজমের প্রবক্তা হয়ে উঠেন। কিন্তু তিনি মার্কসবাদে এতই প্রভাবিত হয়েছিলেন যে, তিনি এ মতাবাদের সমালোচনা করলেও তা সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করেননি। তবে মানবেন্দ্রনাথ রায়ের হিউম্যানিজম এবং কার্ল মার্কসের মার্কসবাদের মধ্যে কোনো কোনো দিক দিয়ে সাদৃশ্য থাকলেও এ দুয়ের মধ্যে বৈসাদৃশ্যই অধিকতরভাবে লক্ষ্য করা যায়।
"" কার্ল মার্কসের মতবাদ ও এম এন রায়ের র্যাডিক্যাল হিউম্যানিজমের তুলনামূলক আলোচনা কার্ল মার্কস ও মানবতাবাদী এম এন রায় উভয়ের মতবাদে বিশ্বাসী ছিলেন। কিন্তু এম এন রায়ের বস্তুগত মার্কসের বাস্তবাদ হতে মূলত পৃথক ছিল। কেননা, মানবেন্দ্রনাথ রায় বস্তুর গতিধারার আইনে বিশ্বাসী হওয়ার পাশাপাশি ভাবধারার ভূমিকার উপরও গুরুত্ব আরোপ করেন। এম এন রায়ের বস্তুবাদে দ্বন্দ্বমূলক প্রক্রিয়ার কোনো স্থান ছিল না। দ্বন্দ্বমূলক প্রক্রিয়া বস্তুবাদের ক্ষেত্রে নয় বরং ভাবধারার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হতে পারে বলে এম এন রায় মনে করতেন। এম এন রায় মার্কসীয় দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ ও দ্বন্দ্বমূলক প্রক্রিয়াকে পুরোপুরি গ্রহণ না করলেও তিনি ধর্ম ও ধর্মতত্ত্বের সমালোচনার ক্ষেত্রে কার্ল মার্কসের সত্যিকারের অনুসারী ছিলেন। এম এন রায় যুক্তিতে বিশ্বাসী এবং ঐতিহ্য ও ধর্মতত্ত্বের বিরোধী ছিলেন।
কর্ল মার্কসের ন্যায় এম এন রায়ও একচেটিয়া পুজিবাদের অসাম্য ও অন্যায়, অবিচারের উৎস হিসেবে দেখতে পান। কিন্তু যে স্থলে মার্কস উৎপাদন মাধ্যমের উপর সামাজিক মালিকানা কায়েম করতে চান সে স্থলে এম এন রায় সমবায়ভিত্তিক অর্থনীতি কায়েমের আহ্বান জানান। কার্ল মার্কস সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতির সমর্থক ছিলেন। কিন্তু এম এন রায় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কায় সমাজতন্ত্রের বিরোধিতা করেন।
মার্কসবাদ ও র্যাডিক্যাল হিউম্যানিজম উভয় মতবাদেই বিপ্লবে বিশ্বাস করা হয়। কার্ল মার্কসের মত এম এন রায় ও বিপ্লবকে প্রকৃতির নির্ধারিত প্রক্রিয়া বলে গণ্য করেন। কিন্তু মার্কসবাদী বিপ্লবের ধারণা হতে এম এন রায়ের বিপ্লবের ধারণা পৃথক ছিল। কার্ল মার্কস সর্বহারার বিপ্লবের মাধ্যমে পুঁজিবাদ উৎখাত করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু রায় হিংসা বা সশস্ত্র বিদ্রোহের পথে নয়; বরং শিক্ষাদানের মাধ্যমেই তার র্যাডিক্যাল হিউম্যানিজম বিপ্লব সম্পন্ন করতে চেয়েছিলেন। এম এন রায়ের বিপ্লব ছিল দার্শনিক বিপ্লব। জনগণকে তাদের সৃজনশীল শক্তি ও স্বাধীনতা সম্পর্কে সজাগ করে তোলাই শিক্ষাদানের উদ্দেশ্য। ব্যক্তির ভূমিকার স্বীকৃতির প্রশ্নে কার্ল মার্কস ও এম এন রায়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। কার্ল মার্কস শ্রেণি মানদণ্ডেই সবকিছু বিচার করেন এবং শ্রেণির ভূমিকাকেই প্রধান বলে মনে করেন। কিন্তু এম এন রায় ব্যক্তির মানদণ্ডেই সবকিছু বিচার করেন এবং সৃজনশীলতা ও কথা দৃঢ়ভাবে ব্যক্ত করেন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, এম এন রায়ের মতে, বস্তুবাদ একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ ও পূর্ণাঙ্গ দর্শন। তিনি কার্ল মার্কসের পূর্বকালীন ভাববাদী দর্শন গ্রহণ করেননি। আবার মার্কসের বস্তুবাদও তার কাছে যুক্তিসঙ্গত নয় বলে মনে হয়েছে। চিন্তনকে তিনি বস্তুর নিছক প্রতিফলনস্বরূপ বিচার করেননি। তাঁর মতে ভাব ও বস্তুর মধ্যে পারস্পরিক প্রভাব দেখা যায়। কোনটিই কারও অগ্রবর্তী নয়। জড় ও চেতনার দ্বৈত অস্তিত্বের প্রত্যয় নতুন বৈজ্ঞানিক গবেষণায় ভ্রান্ত বলে প্রমাণিত হয়েছে। শারীরবৃত্ত ও মনস্তত্ত্বের মাঝে এক সেতুবন্ধন রচিত হওয়ায় তিনি জড় ও ভাবে অন্বয় প্রত্যয়ে নতুন দৃষ্টিতে নামকরণ হওয়া উচিত Physical Realism।
নিত্য নতুন সকল আপডেটের জন্য জয়েন করুন
If any objections to our content, please email us directly: helptrick24bd@gmail.com