পড়ে পাওয়া গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর - অষ্টম শ্রেণি (PDF) | Pore Pawa : Creative Questions and Answers - Class VIII (PDF)

পড়ে পাওয়া গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর - অষ্টম শ্রেণি (PDF) | Pore Pawa : Creative Questions and Answers - Class VIII (PDF)
Follow Our Official Facebook Page For New Updates


Join our Telegram Channel!

পড়ে পাওয়া গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর - অষ্টম শ্রেণি (PDF) | Pore Pawa : Creative Questions and Answers - Class VIII (পিডিএপ)


পড়ে পাওয়া গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর


প্রশ্ন -১ : নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:

আরিফ ট্যাক্সিক্যাব চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে। একবার একজন আরোহীকে গন্তব্যে পৌঁছে দিয়ে সে বিশ্রাম নিচ্ছিল। সহসা গাড়ির ভিতরে দৃষ্টি পড়তে সে দেখতে পেল একটি মানিব্যাগ পড়ে আছে সিটের ওপর। ব্যাগে অনেকগুলো ডলার। কিন্তু ব্যাগে কোনো ঠিকানা পাওয়া গেল না। সে সন্ধ্যা অবধি অপেক্ষা করল। নিরুপায় হয়ে সে পত্রিকা অফিসে গিয়ে সম্পাদককে একটি বিজ্ঞপ্তি ছাপিয়ে দেবার অনুরোধ জানায়।

ক. ‘পড়ে পাওয়া’ কী ধরনের রচনা?

খ. ‘ওর মতো কত লোক আসবে’। বিধুর এ কথাটির অর্থ বুঝিয়ে লেখ।

গ. উদ্দীপকের আরিফকে কোন যুক্তিতে বিধুদের সঙ্গে তুলনা করা যায়?-বুঝিয়ে লেখ।

ঘ.কলেবরে ক্ষুদ্র হলেও আরিফ চরিত্রটি ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের মূল সুরকেই ধারণ করে আছে। - মূল্যায়ন কর।

 

১নং প্রশ্নের উত্তর:

 

ক. ‘পড়ে পাওয়া’ বিভ‚তিভ‚ষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত একটি বিখ্যাত কিশোর গল্প।

খ. ‘ওর মতো কত লোক আসবে’ - ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পে বিধু, লোভী চরিত্রের মানুষদের উদ্দেশে এ কথাটি বলেছে।

 আম কুড়াতে গিয়ে একটি বাক্স কুড়িয়ে পেয়ে বিধু ও তার বন্ধুরা মিলে বাক্সটি প্রকৃত মালিকের কাছে ফিরিয়ে দিতে কাগজে খবরটি লিখে রাস্তার ধারে গাছে গাছে লাগিয়ে দেয়। খবর পেয়ে নানা ধরনের অসৎ লোকেরা ভুয়া মালিক সেজে আসতে থাকে। প্রকৃত অর্থে লোভ সামলাতে না পেরে নিজেদের বাক্স না হওয়া সত্তে¡ও তারা বাক্স নিতে আসে। এসব লোভী অসৎ মানুষদের উদ্দেশে বিধু এ মন্তব্যটি করেছে।

গ. সৎ ও দায়িত্বশীল চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে আরিফকে বিধু চরিত্রের সঙ্গে তুলনা করা যায়।

 পড়ে পাওয়া’ গল্পের বিধুরা বাক্সের প্রকৃত মালিকের কাছে বাক্সটা ফিরিয়ে দিতে চেয়েছিল এবং নিজেদের মধ্যে পরামর্শ করে লিফলেট ছাপিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করল। এতে তাদের নির্লোভ মনমানসিকতা ও দায়িত্বশীলতার পরিচয় ফুটে উঠেছে।

 উদ্দীপকের আরিফ ট্যাক্সিক্যাব চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে। একবার একজন আরোহীকে গন্তব্যে পৌঁছে দিয়ে সে বিশ্রাম নিচ্ছিল। এমন সময় গাড়ির ভেতরে একটি মানিব্যাগ পড়ে থাকতে দেখে এবং ব্যাগে অনেক ডলার দেখতে পায়। কিন্তু সে লোভের বশবর্তী না হয়ে মালিককে ব্যাগটি ফিরিয়ে দেয়ার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি ছাপানোর ব্যবস্থা করে।

 কোথাও কোনো জিনিস কুড়িয়ে পেলে তা মালিকের নিকট ফিরিয়ে দেয়া মানব চরিত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ নৈতিক গুণ। এই গুরুত্বপূর্ণ নৈতিক গুণটিরই প্রতিফলন লক্ষ করা যায় উদ্দীপকের আরিফ এবং গল্পের বিধুদের মধ্যে। উপরিউক্ত আলোচনা শেষে বলা যায় - নৈতিকতা ও সৎ মানসিকতার দিক থেকে আরিফ ও বিধু চরিত্রটি সাদৃশ্যপূর্ণ।

ঘ. “কলেবরে ক্ষুদ্র হলেও আরিফ চরিত্রটি ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের মূল সুরকেই ধারণ করে আছে।”  -মন্তব্যটি যথার্থ।

 পড়ে পাওয়া’ গল্পের লেখক এ গল্পটিতে একদল কিশোরের নির্লোভ মানসিকতার পরিচয় তুলে ধরেছেন।

 গল্পে এক ঝড়ের রাতে বাদল ও গল্পকথক একটি টিনের বাক্স কুড়িয়ে পায়। বিধুর নেতৃত্বে একদল গ্রাম্য কিশোর লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে উঠে সেই টিনের বাক্সের প্রকৃত মালিককে খুঁজে বের করতে তৎপর হয়ে ওঠে। শেষ পর্যন্ত তারা টিনের বাক্সের প্রকৃত মালিক খুঁজেও পায় এবং তাকে টিনের বাক্সটি ফিরিয়ে দেয়। উদ্দীপকের আরিফও তার ট্যাক্সিক্যাবে কোনো এক আরোহীর ফেলে যাওয়া মানিব্যাগটি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য যে প্রচেষ্টা চালিয়েছে, তা এ সততা ও নৈতিকতারই পরিচায়ক।

 সততা, দায়িত্ববোধ, কর্তব্যপরায়ণতা এগুলো একজন সৎ লোকের গুরুত্বপূর্ণ চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। এসব আদর্শে উজ্জীবিত মানুষ নৈতিক চেতনায় সবার ঊর্ধ্বে থাকেন। আর এ আদর্শেরই প্রতিফলন লক্ষ করা যায় উদ্দীপকের আরিফের মধ্যে।

পড়ে পাওয়া’ গল্পের মূল বিষয় সততা ও নৈতিকতা ও দায়িত্বশীলতার প্রতিফলন উদ্দীপকের স্বল্প পরিসরে আরিফের মধ্যে উঠে আসায় প্রশ্নে উল্লিখিত মন্তব্যটি যথার্থ।

 

পড়ে পাওয়া গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর - অষ্টম শ্রেণি (PDF) | Pore Pawa : Creative Questions and Answers - Class VIII (পিডিএপ)



প্রশ্ন -২ : নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

সন্ধ্যায় দেখা গেল, নিজেদের ছাগলের সাথে অতিরিক্ত একটি ছাগলও আথালে ঢুকছে। এশার নামাজ পার হয়ে গেল, কিন্তু কেউ খোঁজ নিতে এলো না। দাদু বললেন, না, না, চুপ করে থাকা ঠিক হবে না। এক কাজ কর, রফিক-শফিক বেরিয়ে পড়। প্রতিবেশী নাবিল আর তালিমকে সাথে নিয়ে দুজন দুদিকে যেও। মসজিদ থেকে চোঙ্গা নিয়ে গাঁয়ে ঘোষণা দিয়ে আস। কিছুক্ষণের মধ্যে দু ভাই দাদুর পরামর্শমতো বলতে লাগল, ভাইসব, একটি ছাগল পাওয়া গেছে। যাদের ছাগল তারা দয়া করে মতিন শিকদারের বাড়ি থেকে নিয়ে যান।

ক. লেখক বিভ‚তিভ‚ষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, কোন ধরনের লেখক হিসেবে সমধিক পরিচিত?

খ. ‘দুজনই হঠাৎ ধার্মিক হয়ে উঠলাম।’ কথাটি দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?

গ.  রফিক-শফিকের চোঙ্গা ফোঁকার ঘটনাটি ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের কোন ঘটনার সাথে সংগতিপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর। 

ঘ. উদ্দীপকের দাদু যেন ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের মূল চেতনারই প্রতিভ‚ - বিশ্লেষণ কর।

 

  ২নং প্রশ্নের উত্তর :

ক. লেখক বিভ‚তিভ‚ষণ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকৃতিপ্রেমী ও জীবনধর্মী লেখক হিসেবে সমধিক পরিচিত।

খ. ‘দুজনেই হঠাৎ ধার্মিক হয়ে উঠলাম’ - কথাটিতে কিশোরদের সৎ ও নির্লোভ মানসিকতার দিকটিকে বোঝানো হয়েছে।

 পড়ে পাওয়া’ গল্পে এ দুজন হচ্ছে বাদল এবং গল্পকথক। আম কুড়াতে গিয়ে কুড়িয়ে পাওয়া বাক্সটি হয়তো কোনো গরিব লোকের হবে, সে হয়তো বাক্সের চিন্তায় রাতে ঘুমোচ্ছে না, তার কষ্ট হবে এই চিন্তা করে কথক বাদলকে বাক্সের তালা ভাঙতে নিষেধ করে এবং বাক্সটি ফেরত দেয়ার কথা চিন্তা করে। গরিব মানুষের প্রতি তাদের এ ভালোবাসা ও সহানুভ‚তি ধর্মেরই অঙ্গ। তাই বলা হয়েছে, দুজনেই হঠাৎ ধার্মিক হয়ে উঠলাম।

গ. রফিক-শফিকের চোঙা ফোঁকার ঘটনাটি ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের বিধু, নিধু, বাদলদের গাছে কাগজের লিফলেট লাগানোর ঘটনার সাথে সংগতিপূর্ণ।

সততা, নির্লোভ মানসিকতা, কর্তব্যপরায়ণতা প্রভৃতি মানব চরিত্রের মহৎ গুণ। ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পটির মধ্যে এই নীতিবোধগুলোর প্রকাশ লক্ষণীয়। লেখক এখানে গল্প বলার ছলে একদল কিশোরের নির্লোভ ও দায়িত্বশীল মানসিকতার চিত্র অঙ্কন করেছেন।

গল্পে বিধুরা নদীর ধারে রাস্তায় ভিন্ন ভিন্ন গাছে কাগজের লিফলেট লাগায়। কারণ তারা বাক্সের প্রকৃত মালিককে খুঁজে বের করে বাক্সটি ফেরত দিতে চায়। এর মধ্য দিয়ে তাদের উন্নত নৈতিকতাবোধের পরিচয় পাওয়া যায়। উদ্দীপকে রফিক ও শফিকের বাড়িতে নিজেদের ছাগলের সঙ্গে অন্য একজনের ছাগল আথালে ঢুকে পড়ে। তাই তারা দাদুর পরামর্শমতো ছাগলের প্রকৃত মালিককে খুঁজে বের করার জন্য চোঙ্গা নিয়ে গাঁয়ে ঘোষণা দেয় -যার ছাগল সে যেন এসে মতিন শিকদারের বাড়ি থেকে নিয়ে যায়। সুতরাং রফিক-শফিকের চোঙ্গা ফোঁকার ঘটনাটি ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের বাক্সটি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য গাছে লিফলেট টানানোর ঘটনার সাথে সংগতিপূর্ণ।

ঘ. “উদ্দীপকের দাদু যেন ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের মূল চেতনারই প্রতিভ‚” মন্তব্যটি যথার্থ।

পড়ে পাওয়া’ গল্পে কিশোরদের ঐক্যচেতনার যেমন পরিচয় পাওয়া যায়, তাদের চারিত্রিক দৃঢ়তার পাশাপাশি তীক্ষè বিবেচনাবোধও পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। কিশোরদের এমন সততা, নিষ্ঠা ও কর্তব্যবোধে বয়োজ্যেষ্ঠরাও বিস্মিত, অভিভ‚ত। গল্পকার কিশোরদের চরিত্রের দ্বারা আলোচ্য চেতনাকে ফুটিয়ে তুলেছেন। তারা বাক্সের মালিককে খুঁজে বের করে তার হাতে বাক্সটি বুঝিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করেছে।

 উদ্দীপকের রফিক, শফিক দাদুর কথামতো মসজিদ থেকে চোঙ্গা নিয়ে ছাগল পাওয়ার ঘোষণার প্রচার করে। কারণ দাদু জানে ছাগলটি তাদের নয়, আর যে ব্যক্তির ছাগলটি হারিয়েছে সে হয়তো ছাগলের চিন্তায় রাতে ঘুমাতে পারবে না। তাই তিনি তাদেরকে ঘোষণা দিতে বলেন। অথচ ইচ্ছা করলে তিনি ছাগলটি নিজের সম্পত্তিতে পরিণত করতে পারতেন। কিন্তু তার নির্লোভ মানসিকতা এবং কর্তব্যবোধ তাকে সততার ব্যাপারে অটল থাকতে সাহায্য করেছে, যা গল্পের মূল চেতনাকে ধারণ করেছে।

 তাই বলা যায়, উদ্দীপকের দাদু ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের মূল চেতনার প্রতিভ‚।

 পড়ে পাওয়া গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন 

 

প্রশ্ন -৩: নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

অর্ণব তার মায়ের অপারেশনের টাকা জোগাড় করার জন্য দিশেহারা। হঠাৎ সে হাসপাতালের সিঁড়িতে পাঁচশ টাকার এক বান্ডিল নোট দেখতে পায়। তার মন আনন্দে ভরে ওঠে। পরক্ষণেই যার টাকা তার কথা ভেবে সে মর্মাহত হয়। অবশেষে সে টাকাগুলো থানায় জমা দেয় এবং প্রকৃত মালিক তা ফেরত পায়।

ক. বালকদের মধ্যে কার হাতের লেখা ভালো ছিল?         

খ. “দুজনে হঠাৎ ধার্মিক হয়ে উঠলাম।” - ব্যাখ্যা কর।  

গ. উদ্দীপকের অর্ণবের সাথে ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের কিশোরদের সাদৃশ্য দেখাও।     

ঘ.“উদ্দীপকটিতে যেন ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের মূল চেতনারই সন্ধান মেলে।” - উক্তিটির যথার্থতা নিরূপণ কর।  

 

৩নং প্রশ্নের উত্তর: 

ক. বালকদের মধ্যে বাদলের হাতের লেখা ভালো।

খ. পাঠ্যপুস্তকের ২নং অনুশীলনী অংশের ‘খ’ নং উত্তর দ্রষ্টব্য।

গ. কুড়িয়ে পাওয়া অর্থসম্পদ প্রকৃত মালিককে ফিরিয়ে দেয়ার মাধ্যমে গল্পের কিশোরদের সাথে উদ্দীপকের অর্ণবের সাদৃশ্য রয়েছে।

 অর্থসম্পদের প্রতি লোভ চিরন্তন। তা পড়ে পাওয়া বা যেকোনোভাবেই হোক না কেন। তবে এ লোভ সংবরণের জন্য ভালো মানসিকতার অধিকারী হতে হয়। এ ধরনের মন-মানসিকতার পরিচয় দিয়েছে উদ্দীপকের অর্ণব ও গল্পের কিশোররা।

 উদ্দীপকের অর্ণব মায়ের অপারেশনের টাকার ভাবনায় অস্থির। এ অবস্থায় হাসপাতালের সিঁড়িতে পেয়ে যায় অনেক টাকা। সে ক্ষণিকের জন্য উৎফুল্ল হলেও টাকার মালিকের কথা ভেবে পরক্ষণেই মর্মাহত হয়। যথাযথ ব্যবস্থা নিয়ে প্রকৃত মালিককে টাকা ফিরিয়ে দেয় সে। গল্পের কিশোররাও পড়ে পাওয়া অর্থসম্পদ অত্যন্ত সতর্কতার সাথে প্রকৃত মালিককে ফিরিয়ে দেয়। তাই বলা যায়, অর্ণব ও কিশোরদের ঘটনা সাদৃশ্যপূর্ণ।

ঘ. “উদ্দীপকটিতে যেন ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের মূল চেতনারই সন্ধান মেলে।” উক্তিটি যথার্থ।

 লোভ লালসা জীবনেরই অনুষঙ্গ। তারপরও নৈতিকতা ও দায়িত্বশীলতা থাকবে। থাকবে মানবীয় গুণের বহিঃপ্রকাশ। এ চেতনারই মূর্ত প্রতীক উদ্দীপকের অর্ণব ও পড়ে পাওয়া গল্পের কিশোররা। তাদের মধ্যে লোভ থাকলেও কেউই লোভের কাছে নতি স্বীকার করেনি।

 উদ্দীপকের অর্ণবের মায়ের অপারেশন। টাকা জোগাড় করতে না পেরে সে দিশেহারা। এ পরিস্থিতিতে হাসপাতালের সিঁড়িতে অনেক টাকা পেয়েও অর্ণব লোভ সংবরণ করেছে। মায়ের চিকিৎসার খরচ হিসেবে ব্যবহার না করে প্রকৃত মালিককে তার অর্থ ফিরিয়ে দেওয়াকে শ্রেয় মনে করেছে। অর্ণবের এ চেতনাই প্রতিফলিত হয়েছে ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের কিশোরদের মধ্যে। তারা পড়ে পাওয়া অর্থ সম্পদ প্রথমে ভোগ দখলের চিন্তা করলেও পরক্ষণে সে চিন্তা বিসর্জন দিয়েছে। প্রকৃত মালিকের খোঁজে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েছে। এ চেতনায় অর্ণবের চেতনারই বহিঃপ্রকাশ ঘটে।

 উল্লিখিত আলোচনায় বলা যায়, প্রশ্নোক্ত উক্তিটি যথার্থ।

  পড়ে পাওয়া গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন

 

প্রশ্ন -৪: নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

রিকশাওয়ালা জাভেদ রাস্তায় ব্যাগ ভর্তি টাকা পড়ে পেল। প্রথমে সে মনে করল এই টাকা দিয়ে সে ব্যবসা করে বড়লোক হবে। কিন্তু সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে ভাবল যার টাকা সে কতটা কষ্ট পাচ্ছে। একথা ভেবে সে সিদ্ধান্ত নিল যে, পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে প্রকৃত মালিককে টাকা ফিরিয়ে দিবে। এজন্য সে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিল।

ক. ‘পত্রপাঠ বিদায়’ কথাটির অর্থ কী?       

খ. ‘এখন জলে নামব না’ -কথাটির প্রাসঙ্গিকতা বর্ণনা কর। 

গ. উদ্দীপকের জাভেদের সিদ্ধান্ত ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের যে  দিকটির সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ তা ব্যাখ্যা কর। 

ঘ.“উদ্দীপকে জাভেদের মনোভাব ও ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের বালকদের অনুভ‚তি একই সূত্রে গাঁথা।” - উক্তিটির যথার্থতা বিচার কর।

 

 

 ৪নং প্রশ্নের উত্তর:

ক. ‘পত্রপাঠ বিদায়’ কথাটির অর্থ হচ্ছে তৎক্ষণাৎ বিদায়।

খ. ঝড় শুরু হতে পারে সে কারণে বিধু বন্ধুদেরকে বলেছিল ‘এখন পানিতে নামব না।’

 কালবৈশাখীর ঝড় শুরু হলে আম কুড়ানোর আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়। বিশেষ করে বাড়–য্যেদের মাঠের বাগানে চাঁপাতলীর আম যেমন সুস্বাদু, তেমনি মিষ্টি। বন্ধুদের মধ্যে বিধুর কথা সকলে মানে। তাই যদি ঝড় শুরু হয় তাহলে আম কুড়াতে হবে, শুধু শুধু আর নদীতে স্থান করে লাভ নেই। বিধুর বিজ্ঞতাসুলভ উক্তিটি এক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক।

গ. ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের গুরুত্বপূর্ণ দিক কিশোরদের সততা, নিষ্ঠা ও কর্তব্যবোধ। গল্পের এ দিকটির সাথে উদ্দীপকের জাভেদের সিদ্ধান্ত সাদৃশ্যপূর্ণ।

 লোভ সহজাত হলেও উদ্দীপক ও গল্পে তা ক্ষণস্থায়ী হয়েছে দায়িত্বশীলতার কাছে। বয়সে ছোট হলেও গল্পের কিশোররা দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছে পড়ে পাওয়া অর্থ সম্পদ ফিরিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে। অনুরূপ দায়িত্বশীলতা ও কর্তব্যবোধের পরিচয় দিয়েছে রিকশাওয়ালা জাভেদ।

 উদ্দীপকের রিকশাওয়ালা জাভেদ ব্যাগভর্তি টাকা পেয়ে বড়লোক হবার স্বপ্ন দেখে। কিন্তু তার সততা, নিষ্ঠা ও কর্তব্যবোধের কাছে সব স্বপ্ন যেন ধূলিসাৎ হয়ে যায়। সে প্রকৃত মালিকের খোঁজে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়ে। অনুরূপ পরিকল্পনা দেখা যায় গল্পের কিশোরদের মধ্যে। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের জাভেদের সিদ্ধান্ত ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের কিশোর চরিত্রের গুরুত্বপূর্ণ দিক সততা, নিষ্ঠা ও কর্তব্যবোধের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।

ঘ. “উদ্দীপকের জাভেদের মনোভাব ও ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের বালকদের অনুভ‚তি একই সূত্রে গাঁথা।” উক্তিটি যেকোনো বিচারেই যথার্থ।

 মানুষ অনেক ক্ষেত্রেই উন্নত মানবিক বোধের পরিচয় দেয়। স্বার্থের বেড়াজাল থেকে মুক্ত হয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে হয়ে ওঠে অনুসরণীয় ও অনুকরণীয়। এ ধরনের দৃষ্টান্তের দেখা পাওয়া যায় প্রশ্নোক্ত উক্তিটিতে।

 উদ্দীপকের জাভেদ রিকশাওয়ালা। অবর্ণনীয় কষ্টে তার জীবিকা নির্বাহ হয়। এ অবস্থায় ব্যাগভর্তি টাকা তার চরম প্রার্থিত। যে টাকার লোভ সংবরণ করা অত্যন্ত দুরূহ। কিন্তু উন্নত মানবিকতাবোধসম্পন্ন জাভেদ তার মনোভাব পাল্টে ফেলে। সে উন্নত কর্তব্যবোধের পরিচয় দেয়। তার মনের পর্দায় ভেসে ওঠে যে ব্যক্তির টাকা হারিয়েছে তার কষ্টের চিত্র। এ মনোভাবের যথাযথ মূল্য দিয়ে সে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয় প্রকৃত মালিককে টাকা ফিরিয়ে দিতে। অনুরূপ মনোভাবের পরিচয় মেলে ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের বালকদের অনুভ‚তিতে। বালকরা অর্থ সম্পদ পেয়ে তা ভোগের চিন্তা পরিহার করে প্রকৃত মালিককে ফিরিয়ে দেয়ার চেষ্টায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে।

 উল্লিখিত আলোচনায় বলা যায়, প্রশ্নোক্ত উক্তিটি যথার্থ।

   পড়ে পাওয়া গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন

 

প্রশ্ন -৫: নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

জসিম মাইক্রোবাস চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে। একবার এক যাত্রীকে গন্তব্যে পৌঁছে দিয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিল। সহসা তার গাড়ির ভিতরে দৃষ্টি পড়তেই দেখতে পেল, একটি তালা বন্ধ সুটকেস পড়ে আছে। কিন্তু ঐ ব্যাগে কোনো ঠিকানা পাওয়া না যাওয়ায় সে ঘটনা কাগজে লিখে প্রচার করল।

ক. পড়ে পাওয়া কী ধরনের রচনা?   

খ. “ওর মত কত লোক আসবে” -কথাটি বুঝিয়ে লেখ।  

গ. উদ্দীপকে জসিমকে কোন যুক্তিতে বিধুদের সঙ্গে তুলনা করা যায়?    

ঘ. “জসিমের ঘটনাটি ক্ষুদ্র হলেও চরিত্রটি পড়ে পাওয়া গল্পের মূল চরিত্রকেই লালন করে আছে” -মূল্যায়ন কর।

 

 

৫নং প্রশ্নের উত্তর  : 

 [সৃজনশীল ১ নং প্রশ্নের উত্তর দ্রষ্টব্য। শুধু আরিফের জায়গায় জসীম হবে এবং ট্যাক্সি ক্যাব চালকের স্থলে হবে মাইক্রো বাস চালক আর মানিব্যাগের স্থলে হবে তালাবদ্ধ সুটকেস]

   পড়ে পাওয়া গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন

 

 

প্রশ্ন -৬ : নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

রাস্তায় যাওয়ার পথে একটি লোককে চিৎকার করে কাঁদতে দেখে থমকে দাঁড়ায় মুহসীন। কী হয়েছে জানতে চাইলে লোকটি বলে একটি চোর তার মানিব্যাগ চুরি করেছে। মুহসীন চারদিকে তাকিয়ে চোরের গতিবিধি লক্ষ করে তার পিছু নিল। অনেক কষ্টে চোরটিকে ধরল, কিন্তু ততক্ষণে মানিব্যাগের মালিক অন্যত্র চলে গেল। মানিব্যাগ ভর্তি টাকা ছিল। মানিব্যাগে পাওয়া ঠিকানা অনুযায়ী টাকাসহ মানিব্যাগটি ফেরত দিয়ে আসল মুহসীন।

ক. কোথায় ভ‚ত আছে বলে সবাই জানে?  

খ. কালবৈশাখীর ঝড় মানেই আম কুড়ানো! উক্তিটি দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে? 

গ. উদ্দীপকের ঘটনাটি ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের কোন কোন ঘটনাকে ইঙ্গিত করে? ব্যাখ্যা কর।

ঘ.‘সততা ও নির্লোভ মানসিকতায় উদ্বুদ্ধ হয়েই মুহসীন মানিব্যাগ ফেরত দিয়েছিল’ - ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের আলোকে বিশ্লেষণ কর

 

 

  ৬নং প্রশ্নের উত্তর  : 

ক. তেঁতুলগাছে ভ‚ত আছে বলে সবাই জানে।

খ. ‘কালবৈশাখীর ঝড় মানেই আম কুড়ানো!’ - উক্তিটি দ্বারা গ্রামবাংলার বৈশাখের চিত্রকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

 কালবৈশাখীর ঝড় এলেই গ্রামের দুরন্ত ছেলেরা আম কুড়াতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। কালবৈশাখী মানেই ধ্বংস আর দুর্যোগের ঘনঘটা। কিন্তু বিভীষিকাময় এ ঝড়ও ছেলেমেয়েদের দুরন্তপনার কাছে পরাজিত হয়। বৈশাখে আম পাকে। আর দুরন্ত গতির হাওয়ায় সেসব পাকা আম টপাটপ গাছ থেকে ঝরে পড়ে। গ্রামের ছেলে-মেয়েরা শত দুর্যোগের মধ্যেও মনের আনন্দে সেসব আম কুড়ায়।

গ. উদ্দীপকের ঘটনাটি ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের কিশোরদের বাক্স পেয়ে সেটি প্রকৃত মালিকের কাছে ফেরত দেয়ার ঘটনাকে ইঙ্গিত করে।

 গল্পে লেখক ও বাদল এক ঝড়ের রাতে একটি টিনের বাক্স পায়। এ বাক্সটি তারা নিজেরা আত্মসাৎ না করে প্রকৃত মালিকের কাছে ফেরত দেয়ার জন্য প্রচেষ্টা চালায় এবং অবশেষে তারা সফল হয়। প্রকৃত মালিকের কাছে শেষ পর্যন্ত বাক্সটি ফিরিয়ে দেয় কিশোররা।

 উদ্দীপকে দেখা যায়, মুহসীন রাস্তায় কাঁদতে দেখা লোকটিকে বিপদ থেকে উদ্ধারের জন্য সে চোরের পেছনে ছোটে। অবশেষে কান্নারত লোকটির মানিব্যাগ সংগ্রহ করে তাতে প্রচুর টাকা থাকা সত্তে¡ও সে মানিব্যাগটি লোকটিকে ফেরত দিতে চায়। লোকটিকে না পেয়ে তার ঠিকানামতো মানিব্যাগটি পৌঁছে দেয়।

 পথেঘাটে বা অন্য কোথাও কারও কোনো জিনিস পেলে তা মালিকের কাছে পৌঁছে দেয়াই প্রকৃত বিবেকবান মানুষের কাজ। এমনই একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পে ও উদ্দীপকে সাদৃশ্য লক্ষণীয়। এ ঘটনাটি প্রকৃতপক্ষে ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের বাক্স ফেরত দেয়ার ঘটনাটিকেই ইঙ্গিত করে।

ঘ. সততা ও নির্লোভ মানসিকতায় উদ্বুদ্ধ হয়েই মুহসীন মানিব্যাগ ফেরত দিয়েছিল। মন্তব্যটি যথার্থ।

 পড়ে পাওয়া’ গল্পে গল্পকথক ও তার বন্ধু একটি টিনের বাক্স পড়ে পায়। ইচ্ছা করলে তারা এটি নিজেরা নিতে পারত। কিন্তু সততায় উৎসাহিত হয়ে নির্লোভ মানসিকতা থেকে তারা দায়িত্বশীলতার সাথে প্রকৃত মালিককে বাক্সটি ফেরত দেয়।

 বর্তমান সমাজে লোভ ও অসততা মহামারীর মতো ছড়িয়ে পড়েছে।

 উদ্দীপকে রাস্তায় যাওয়ার পথে একজন লোকের মানিব্যাগ চুরি হলে সেটি উদ্ধারে মুহসীন চোরের পিছু নেয়। কিন্তু মানিব্যাগ উদ্ধার করে নিয়ে এসে সেই লোকটিকে আর পায় না। সে ইচ্ছা করলে এই মানিব্যাগ নিজেই হস্তগত করতে পারত। কিন্তু সততা ও নির্লোভ মানসিকতা থাকলে কেউ অন্যের জিনিস আত্মসাৎ করতে পারে না। সততা এবং নির্লোভ মানসিকতা মানুষকে সত্যিকারের মানুষে উন্নীত করতে পারে। এই মানসিকতার কারণেই মুহসীন মানিব্যাগে পাওয়া ঠিকানা অনুযায়ী ব্যাগের মালিককে ব্যাগটি ফেরত দিয়ে আসে। এই উন্নত নীতিবোধেরই প্রকাশ দেখা যায় উদ্দীপক এবং ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পে।

 সুতরাং বলা যায়, সততা ও নির্লোভ মানসিকতায় উদ্বুদ্ধ হয়েই উদ্দীপকের মুহসীন ও ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের কিশোররা প্রকৃত মালিককে জিনিসটি ফেরত দেয়।

 

 

 

প্রশ্ন -৭ : নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

মাঠে অনেক শিশু-কিশোর মিলে খেলা করছিল। হঠাৎ মিল্টন বলল তার বলটি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ওদের মধ্যে শফিক ছিল সবার বড়। তাই শফিক মিল্টনকে শান্ত হতে পরামর্শ দিল। এবং সবাইকে বলল, বলটি খুঁজে বের করার চেষ্টা কর। শফিকের নির্দেশমতো সবাই বল খোঁজা শুরু করল এবং বিজু বলটি খুঁজে পেয়ে মিল্টনকে দিয়ে দিল।

ক. ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পটি লেখকের কোন গ্রন্থ থেকে নেয়া হয়েছে?

খ. ‘অল্পক্ষণ পরেই প্রমাণ হলো, ও আমাদের চেয়ে কত বিজ্ঞ।’ উক্তিটি কেন করা হয়েছে?

গ. উদ্দীপকের শফিকের সাথে ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের কোন চরিত্রের মিল রয়েছে? বর্ণনা কর।

ঘ.উদ্দীপকে ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের শিক্ষণীয় বিষয়ের পরিপূর্ণ প্রয়োগ ঘটেছে’ - মন্তব্যটির যথার্থতা নিরূপণ কর।

 

৭নং প্রশ্নের উত্তর  : 


ক. ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পটি লেখকের ‘নীলগঞ্জের ফালমন সাহেব’ গ্রন্থ থেকে নেয়া হয়েছে।

খ. ‘অল্পক্ষণ পরেই প্রমাণ হলো, ও আমাদের চেয়ে কত বিজ্ঞ’ ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পে বিধু সম্পর্কে লেখক উক্তিটি করেছিলেন।

 একদিন পশ্চিম আকাশে মেঘের ক্ষীণ গুড় গুড় আওয়াজ শুনে বিধু বুঝতে পারে এটি ঝড়ের পূর্বাভাস। তার সঙ্গীরা প্রথমে সে কথা বিশ্বাস করেনি কিন্তু বিধু চাঁপাতলীর আম কুড়াতে একাই যেতে চাইলে সবাই ততক্ষণে তার সাথে একমত হয়। এর কিছুক্ষণ পরই প্রচÐ বেগে ঝড় শুরু হয়। এ প্রসঙ্গেই গল্পকথক বলেন, ‘অল্পক্ষণ পরেই প্রমাণ হলো ও আমাদের চেয়ে কত বিজ্ঞ।’

গ. সৎ মানসিকতা এবং দায়িত্বশীল নেতৃত্বের দিক থেকে উদ্দীপকের শফিকের সাথে ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের বিধু চরিত্রের মিল পাওয়া যায়।

 পড়ে পাওয়া’ গল্পে বিধুর নির্দেশেই অন্যরা আম কুড়াতে গিয়েছিল এবং কুড়িয়ে পাওয়া টিনের বাক্সটির মুখ খোলা থেকে বিরত করেছিল। পরে বিধুর নির্দেশেই বাক্সটি যথাযোগ্য মালিককে ফিরিয়ে দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয় এবং অনেকদিন অপেক্ষার পর বাক্সটি প্রকৃত মালিকের কাছে ফিরিয়ে দেয়া সম্ভব হয়েছিল। এখানে দেখা যাচ্ছে বিধুই গল্পের মূল নায়ক এবং দলনেতা হিসেবে গল্পের অন্য চরিত্রগুলো বিধুকে মান্য করছে। দলনেতার নির্দেশমতো কাজ করে তারা সুন্দর ও সুচারুভাবে একটি মহৎ কাজ করতে সক্ষম হয়েছে।

  উদ্দীপকেও দেখা যায়, মিল্টনের বলটি হারিয়ে গেলে শফিক বিজ্ঞের মতো মিল্টনকে শান্ত হওয়ার পরামর্শ দেয়। সবাইকে বলটি খুঁজে বের করতে বলে। তার নির্দেশমতো বলটি খুঁজে বের করে মিল্টনকে ফেরত দেওয়া হয়। এখানে শফিক বিধুর মতো দলনেতা হয়ে বিজ্ঞতার পরিচয় দিয়েছে। তাই বলা যায় যে, চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে উদ্দীপকের শফিক চরিত্রের সাথে বিধু চরিত্রের মিল রয়েছে।

ঘ. উদ্দীপকে ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের শিক্ষণীয় বিষয়ের পরিপূর্ণ প্রয়োগ ঘটেছে - মন্তব্যটি যথার্থ।

 পড়ে পাওয়া’ গল্পের শিক্ষণীয় বিষয়গুলো হলো কিশোরদের সুদৃঢ় নৈতিক অবস্থান। এ গল্পে কিশোরদের ঐক্যচেতনার যেমন পরিচয় পাওয়া যায় তেমনি তাদের উন্নত মানবিক বোধেরও প্রকাশ ঘটেছে। এখানে কিশোরদের সততা, নিষ্ঠা, কর্তব্যবোধ ও তীক্ষè বিবেচনাবোধ পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এছাড়া ঐক্যচেতনা ও নেতার নির্দেশ মান্য করাও এ গল্পের শিক্ষণীয় দিক।

 উদ্দীপকে মিল্টনের বল হারিয়ে গেলে শফিক দলনেতার ভ‚মিকায় অবতীর্ণ হয়ে বলটি খোঁজার পরামর্শ দেয়। অন্য বালকরা তার নির্দেশমতো বল খুঁজে বের করে মিল্টনকে ফেরত দেয়। এতে ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের বিবেচনাবোধ, ঐক্যচেতনা ও নেতার নির্দেশ মান্য করার বিষয়গুলো প্রতিফলিত হয়েছে। যা উদ্দীপকের মূলসুরের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।

 সুতরাং বলা যায়, ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের শিক্ষণীয় বিষয় পরিপূর্ণভাবে উদ্দীপকে প্রতিফলিত হয়েছে। অর্থাৎ প্রশ্নে উল্লিখিত মন্তব্যটি যথার্থ।

   পড়ে পাওয়া গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন

 

 

প্রশ্ন -৮ : নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :


মানিক-তপন-শিবলুদের পুকুরঘাটে গতকাল দুপুরে মানিব্যাগসহ একটি জামা পাওয়া গেছে। যথাযথ প্রমাণসহ জামাটি নেয়ার জন্য অনুরোধ করে সর্বত্র মাইকিং করা হলো - পরের দিন জামা নিতে আসা চারজন লোককে ফিরিয়ে দিল শিবলু। কারণ প্রমাণের অভাব ছিল। অবশেষে দশ-বারো দিন পর পুকুরঘাটে আসা একটি লোকের মুখের বর্ণনা শুনে তপন ভাবল জামাটি তারই হবে। তাই শিবলুকে ডেকে নিয়ে এসে জামাটি তারা লোকটিকে ফেরত দিল।

ক. বিভ‚তিভ‚ষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ কীর্তি কী?   

খ. ‘না-ও উকিলই হবে’ কার সম্পর্কে কেন একথা বলা হয়েছে? ব্যাখ্যা কর।

গ. উদ্দীপকটি ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের কোন দিকটি উদ্দীপকে প্রকাশিত হয়েছে? ব্যাখ্যা কর। 

ঘ.“শিবলুর চরিত্রের সঙ্গে ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের বিধুর চরিত্রের বেশি মিল খুঁজে পাওয়া যায় কি?” মতের পক্ষে যুক্তি দাও

 

 

৮নং প্রশ্নের উত্তর:


ক. ‘পথের পাঁচালী’ এবং ‘অপরাজিত’ উপন্যাস দুটি বিভ‚তিভ‚ষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ কীর্তি।

খ. ‘না-ও উকিলই হবে’ - এ কথাটি বিধুর সম্পর্কে বলা হয়েছে।

 পড়ে পাওয়া’ গল্পের কুড়িয়ে পাওয়া বাক্সটি প্রকৃত মালিকের কাছে ফিরিয়ে দিতে গিয়ে বিধু যে বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছে তা উকিলদের মতোই। বিধু সাক্ষী হিসেবে সিধু, তিনুকে হাজির করার পাশাপাশি বাক্সের মালিকের কাছ থেকে সব মালামাল বুঝে নেয়ার প্রমাণও রাখল। মূলত সূ² বিবেচনাবোধের জন্যই বিধু সম্পর্কে এ কথাটি বলা হয়েছে।

গ. উদ্দীপকে ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পে বাদল, বিধু, তিনু, সিধুদের কুড়িয়ে পাওয়া বাক্সের খবর প্রচার করার দিকটির প্রতিফলন ঘটেছে।

 পড়ে পাওয়া’ গল্পে বিধু, সিধু, তিনু, নিধু, বাদল - এরা কালবৈশাখী ঝড়ে আম কুড়াতে যায়। আম কুড়িয়ে বাড়ি ফেরার পথে রাস্তার মধ্যে একটি বাক্স বাদলের পায়ে লাগে। নৈতিক মূল্যবোধের কারণে তারা কুড়িয়ে পাওয়া বাক্সটি না খুলে প্রকৃত মালিকের কাছে ফেরত দিতে চায়। এজন্য বিধু কৌশল বের করে। ঘুড়ির মাপে কাগজ কেটে তাতে বাক্স পাওয়ার খবরটি লিখে গাছের গায়ে লাগিয়ে দেয়।

 উদ্দীপকের ঘটনাটিও বিধুদের এ ঘটনার সঙ্গে মিলে যায়। মানিক-তপন-শিবলুদের পুকুরঘাটে মানিব্যাগসহ একটি জামা পাওয়া যায়। তারা মানিব্যাগসহ পাওয়া জামাটি প্রকৃত মালিককে ফেরত দিতে প্রচার করে। সুতরাং বলা যায়, প্রকৃত মালিককে তার প্রাপ্য ফিরিয়ে দেয়ার জন্য প্রচারের দিক দিয়ে উদ্দীপক ও গল্পের মিল রয়েছে।

ঘ. শিবলুর চরিত্রের সঙ্গে ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের বিধুর চরিত্রের সবচেয়ে বেশি মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

 পড়ে পাওয়া’ গল্পের প্রধান চরিত্র বিধু। আম কুড়াতে গিয়ে একটি টিনের বাক্স কুড়িয়ে পায় তারা। এ বাক্সে টাকা পয়সা এবং সোনার গহনা ছিল। কিন্তু লোভ পরিহার করে কিশোররাও বাক্স খোলা থেকে বিরত থাকে এবং বাক্সটি ফেরত দেয়ার উদ্যোগ নেয়। বিধুই কৌশল বের করে এবং বাক্স পাওয়ার খবর সবাই মিলে প্রচার করে। পরবর্তীতে বাক্স ফেরত দেয়ার সময় উকিলের মতো কৌশল অবলম্বন করে প্রকৃত মালিকের হাতে বাক্সটি ফিরিয়ে দেয় বিধু এবং অন্য কিশোররা।

 উদ্দীপকে শিবলু পুকুরপাড়ে মানিব্যাগসহ জামা পেলে মাইকিং করে তা জানায়। এতে পরের দিন চারজন ভÐ লোক জামা নিতে এ শিবুল তাদের ভÐামি বুঝতে পারে। অবশেষে যথার্থ প্রমাণ পেয়ে দায়িত্বের সাথে শিবলু জামাটি যথাযথ মালিকের কাছে ফেরত দেয়।

 সুতরাং দেখা যায়, দলনেতা হিসেবে সৎ ও কর্তব্যপরায়ণতার পাশাপাশি তীক্ষè বিবেচনাবোধ প্রভৃতি দিক দিয়ে বিধুর সঙ্গে শিবলুর মিল রয়েছে।

   পড়ে পাওয়া গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন


 

প্রশ্ন -৯ : নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

শীতলক্ষ্যা নদীর পাড়ে বাস করে কিছু জেলে পরিবার। বন্যায় পাড় ভাঙনের ফলে তারা আশ্রয়হীন হয়ে গেছে। তাই পাশের থানা হরিপুরে আশ্রয় নিয়েছে। এক জেলে হরিপুরের এমপি সাহেবের কাছে গিয়ে তার দুঃখের কথা বর্ণনা করল। তখন এমপি সাহেব জেলেকে খেয়ে যেতে বললেন। জেলে যেন আগামীতে পরিবারসহ ঠিকমতো চলতে পারে সেজন্য একটি রিকশা কেনার টাকা দিয়ে দিলেন। জেলে এতে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলে তিনি বলেন - মানুষ তো মানুষেরই জন্য।

ক. টিনের বাক্সের ভেতরে কত টাকা ছিল?  

খ. ‘এখানে দুটি ডাল-ভাত খেও।’ - ঠাকুরমশাই কথাটি কেন বলেছেন?

গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত এমপি সাহেবের সাথে ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের ঠাকুরমশাইয়ের মিল কোথায়? নির্ণয় কর।  

ঘ.‘মানুষ তো মানুষেরই জন্য’ - উক্তিটি ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের আলোকে মূল্যায়ন কর।

 

 ৯নং প্রশ্নের উত্তর  : 


ক. টিনের বাক্সের ভেতরে পঞ্চাশ টাকা ছিল।

খ. অনেক দূর থেকে কাপালি ঠাকুরমশাইয়ের সাথে দেখা করতে এলে তিনি কাপালিকে ‘এখানে দুটি ডাল-ভাত খেও’-এ কথা বলেছিলেন।

 কাপালি ঠাকুরমশাইয়ের দরবারে কাজের খোঁজে এসে নিজের পরিচয় দেয়। পরিচয়ের সাথে তার অতীতের অবস্থা বর্ণনা করে। সাথে সে এটিও বলে একটি কাজ তার অনেক বেশি দরকার। বন্যায় নিঃস্ব হয়ে যাওয়ার কথা শুনে ঠাকুরমশাইয়ের মনে সহানুভ‚তির জন্ম হয় কাপালির জন্য। তখন ঠাকুরমশায় তাকে দুটো ডাল-ভাত খেয়ে যেতে বলেন।

গ. দরিদ্র্যের প্রতি সহানুভ‚তিশীলতার দিক থেকে ঠাকুরমশাই এবং এমপি উভয়ের চরিত্রেরই মিল রয়েছে।

 তৎকালীন সমাজের উচ্চশ্রেণির জমিদাররা গরিব চাষিদের অত্যাচার করত, শোষণ করত। কিন্তু ঠাকুরমশাই নামে খ্যাত ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের জমিদারের মধ্যে প্রজাদের প্রতি বেশ সহানুভ‚তি দেখা যায়। চাকরির খোঁজে আসা নিঃস্ব কাপালিকে চাকরি দিয়েছেন কিনা তা গল্পকথকের বক্তব্যে স্পষ্ট হয়ে না উঠলেও জমিদারসুলভ আতিথিয়েতা ঠাকুরমশাইয়ের মধ্যে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। কাপালিকে তিনি খেয়ে যেতে বলেছেন।

 উদ্দীপকে বর্ণিত হরিপুর থানার এমপি সাহেবও জনগণের প্রতিনিধি। কিন্তু জনগণের জন্য এমপি হলেও অনেক এমপির আচরণেও তা বোঝা যায় না। কিন্তু হরিপুরের এমপি ছিলেন সৎ এবং জনদরদি। তিনি গরিব জেলেকে খাবার দিয়েই ক্ষান্ত হননি সাথে একটি রিকশা কেনার টাকাও তার হাতে তুলে দিয়েছেন।

 সমাজে উঁচু-নিচু, ধনী-গরিবের ব্যবধান ভুলে পরস্পরের সহায়তায় এগিয়ে আসাই আদর্শ মানুষের কাজ। উদ্দীপকের এমপি সাহেবের ও গল্পের ঠাকুর মশাইয়ের চরিত্রে একই বৈশিষ্ট্য প্রতিফলিত হয়েছে।

 উল্লিখিত আলোচনায় বলা যায়, অসহায়, দরিদ্র, পীড়িত মানুষের প্রতি সহানুভ‚তির দিক থেকে উভয় চরিত্রেরই মিল রয়েছে।

ঘ. ‘মানুষ তো মানুষেরই জন্য’ - ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের আলোকে মন্তব্যটি বস্তুনিষ্ঠ।

 পড়ে পাওয়া’ গল্পের সমাজে মানবতাবোধ, সততা, অপরের প্রতি ভালোবাসা, শ্রদ্ধাবোধ হাতিয়ার হিসেবে কাজ করেছে। গল্পে কিশোর চরিত্ররা আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তারা পড়ে থাকা একটি বাক্সকে সঠিক মালিককে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য বিচক্ষণতার সাথে তার মালিকের সন্ধান করেছে। এই গল্পে গোয়ালারা ধান দিয়ে, আশ্রয় দিয়ে বাঁচিয়েছে অসহায় কাপালিদেরকে। সমাজের যারা প্রধান তারাও বিশ্বাস করে অপরের দুঃখে এগিয়ে আসতে হবে। এ কারণেই গরিব চাষি ঠাকুরমশাইয়ের কাছে গিয়ে নিজের দুঃখের কথা বলে চাকরি চাইতে পেরেছে।

 উদ্দীপকের এমপি সাহেবও একজন মানবতাবাদী মানুষ। গরিবের দুঃখে তারও প্রাণ কেঁদে ওঠে। তাই তিনি জেলেকে কিনে দিয়েছেন একটি রিকশা। যা দিয়ে সে জীবিকা অর্জন করতে পারবে। এখানেই মানুষের প্রকৃত পরিচয় নিহিত।

 উল্লিখিত আলোচনায় বলা যায়, ‘মানুষ মানুষের জন্য’ - এই বিষয়টি উদ্দীপক এবং ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পে যথার্থতার সাথে ফুটে উঠেছে।

   পড়ে পাওয়া গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন

 

 

প্রশ্ন -১০ : নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

একদিন রাত দশটায় সামান্য কৃষক মনু মিয়া বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিল। হাতে রয়েছে মাছ, তরকারি আর চালের পুঁটলি। গাছপালা ঘেরা রাস্তায় প্রকট অন্ধকারে হাত বাড়ালে হাত দেখা যায় না। মনু মিয়া গুনগুন করে গান গাইতে গাইতে পথ চলছিল। ভাগ্যিস চেনা রাস্তা। নতুবা হাঁটতেই পারত না। হঠাৎ তার পায়ের সাথে কিসের যেন ধাক্কা লাগল। বস্তু যে নিরেট মাটির ঢেলা বা ইট নয়, এটা বুঝেই অন্ধকারে হাতড়িয়ে মনু মিয়া বস্তুটা নিল। ম্যাচ জ্বালিয়ে দেখল ছোট্ট লোহার বাক্স। ভেতরে রয়েছে সোনার অলঙ্কার ও টাকা। রাতে আর মনু মিয়ার বাড়ি যাওয়া হলো না। বাঁশতলায় বসে রইল চুপচাপ। শেষরাতে দেখা গেল এক বৃদ্ধকে। ফুঁপিয়ে বিলাপ করতে করতে রাস্তায় যেন কী খুঁজছে। বাক্সের প্রকৃত মালিক বুঝতে পেরে মনু মিয়া বৃদ্ধকে বাক্সটা বুঝিয়ে দিয়ে যখন বাড়ি ফিরল, তখন সে প্রশান্তি অনুভব করল।

ক. কাদের মাঠের বাগানে চাঁপাতলীর আমগাছ আছে? 

খ. ‘তেঁতুলগাছে ভ‚ত আছে সবাই জানে।’ - বাক্যটি ব্যাখ্যা কর। 

গ. উদ্দীপকের ঘটনা তোমার পাঠ্য কোন গল্পের ঘটনাকে নির্দেশ করে? ব্যাখ্যা কর।

ঘ.“তাৎপর্যগত দিক থেকে ‘পড়ে পাওয়া’ গল্প ও উদ্দীপক একই আদর্শ শিক্ষা দেয়।” - মূল্যায়ন কর।   

 

 

 

১০নং প্রশ্নের উত্তর: 


ক. বাড়–য্যেদের মাঠের বাগানে চাঁপাতলীর আমগাছ আছে।

খ. ‘তেঁতুলগাছে ভ‚ত আছে সবাই জানে।’ - বাক্যটি দ্বারা গ্রামের মানুষের কুসংস্কারাচ্ছন্ন মনোভাব ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

 গ্রামে বিভিন্ন ধরনের কুসংস্কার প্রচলিত আছে। তার মধ্যে অন্যতম হলো ভ‚ত। গ্রামের প্রায় সবার মনেই ভ‚তের ভয় কাজ করে। ভ‚তের আবাসন হিসেবেও বিভিন্ন স্থান নির্দিষ্ট আছে। তেঁতুলগাছ এগুলোর অন্যতম। আকার-আয়তনে একটু বড় বা পুরাতন তেঁতুলগাছ মানেই সেখানে ভ‚তের আস্তানা - এটা গ্রামের মানুষ মাত্রই বিশ্বাস করে।

গ. উদ্দীপকের ঘটনা ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের টিনের বাক্স কুড়িয়ে পাওয়ার ঘটনাকে নির্দেশ করে।

 পড়ে পাওয়া’ গল্পে কালবৈশাখী ঝড়ে আম কুড়িয়ে অন্ধকার সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরছিল কথক আর তার বন্ধু বাদল। তারা একটা টিনের বাক্স রাস্তায় কুড়িয়ে পায়। গ্রামের মানুষ এরূপ বাক্সে তাদের টাকা-পয়সা ও গহনা সংরক্ষণ করে। তারা দুজনেই সংকল্প করে যে, যেভাবেই হোক প্রকৃত মালিককে বাক্স ফিরিয়ে দেবে। বন্ধুদের সঙ্গে এ নিয়ে মিটিংও করে। অবশেষে অনেকদিন পর তারা প্রকৃত মালিককে বাক্স ফিরিয়ে দিতে সক্ষম হয়।

 উদ্দীপকেও এ ঘটনার মতোই একটি ঘটনার অবতারণা লক্ষণীয়। গরিব কৃষক মনু মিয়া বাজার থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে বাড়ি ফিরছিল। পথিমধ্যে অন্ধকারে সে একটা বাক্স কুড়িয়ে পায়। বাক্স খুলে দেখতে পায় টাকা আর সোনার অলঙ্কার। কিন্তু মনু মিয়ার মনে লোভ না থাকায় সে প্রকৃত মালিককে বাক্স ফিরিয়ে দেয়ার সংকল্প করে। সারারাত সে নির্জন বাঁশতলায় বসে থাকে বাক্সের মালিকের অপেক্ষায়, শেষে মনু মিয়া বৃদ্ধকে তার বাক্স ফিরিয়ে দিয়ে সকালবেলা বাড়ি যায়।  সুতরাং বলা যায়, উদ্দীপকের ঘটনা ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের ঘটনাকে নির্দেশ করে।

ঘ. “তাৎপর্যগত দিক থেকে ‘পড়ে পাওয়া’ গল্প ও উদ্দীপক একই আদর্শ শিক্ষা দেয় মন্তব্যটি যথার্থ।”

  পড়ে পাওয়া’ গল্পে লেখকের বন্ধু বাদল অন্ধকার রাস্তায় একটা মূল্যবান বাক্স খুঁজে পায়। অনেকদিন পর ঘটনাক্রমে লেখক বাক্সের মালিককে খুঁজে পান। তখন বন্ধুদের ডেকে বাক্সটি প্রকৃত মালিকের হাতে তুলে দেন। এর দ্বারা মূলত তাদের লোভহীন উন্নত চরিত্রের স্বরূপ প্রকাশিত হয়েছে।

 উদ্দীপকেও মনু মিয়া নামক এক কৃষকের সন্ধান পাওয়া যায়। দরিদ্র কৃষক মনু মিয়া গভীর রাতে বাজার থেকে নিয়ে বাড়ি যাওয়ার পথে একটা মূল্যবান বাক্স দেখতে পায়, যা টাকা ও গহনায় ভর্তি ছিল। প্রকৃত মালিককে বাক্স ফিরিয়ে দেয়ার জন্য মনু মিয়া আর রাতে বাড়ি যায়নি। অন্ধকারাচ্ছন্ন বাঁশঝাড়ের নিচে বসে অপেক্ষা করতে থাকে। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর যখন রাত প্রায় শেষের দিকে, তখন কান্নারত এক বৃদ্ধকে পথে কিছু খুঁজতে দেখতে পায়। তখন মনু মিয়া তাকে সেই বাক্স ফেরত দেয়। এতে মনু মিয়ার চরিত্রের লোভহীন, সৎ ও দায়িত্বশীলতার পরিচয় পাওয়া যায়। যে আদর্শ ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পেও লেখক ও তার বন্ধুরা মূল্যবান বাক্স ফিরিয়ে দেয়ার মাধ্যমে মূর্ত করেছে।

 উপরিউক্ত আলোচনার সমাপ্তিতে বলা যায়, তাৎপর্যগত দিক থেকে উদ্দীপক ও পড়ে পাওয়া গল্প একই আদর্শ শিক্ষা দেয়।

 

 

 

প্রশ্ন -১১ : নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

ক’ নদীর তীরবর্তী ‘খ’ একটি ছোট দ্বীপ। একটি প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ে এ দ্বীপে বন্যার পানি ওঠে। বন্যার তীব্র স্রোত এ দ্বীপের বিভিন্ন ফসলের সাথে অবলা পশুপাখিকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। জীবিকা নির্বাহের একমাত্র অবলম্বন কৃষি জমি পানির নিচে তলিয়ে যায়। বড় বড় শিম, লাউ ও কুমড়োর মাচা নদীতে ভেসে যায়। বন্যার পানি নেমে গেলে এ দ্বীপের সংগ্রামী ও অসহায় মানুষগুলো তাদের অবস্থা পরিবর্তন করতে সমর্থ হয়। কঠোর পরিশ্রম করার মাধ্যমে নিঃস্ব কৃষকেরা তাদের স্ত্রী-সন্তানের মুখে হাসি ফোটায়।

ক. বাক্স ফেরত পেয়ে লোকটি কী করল?  

খ. পশ্চিম আকাশে মেঘের আওয়াজ শুনে বিধু কী বোঝাতে চাইল? ব্যাখ্যা কর

গ. উদ্দীপকে ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের কোন চিত্রটি অঙ্কিত হয়েছে? ব্যাখ্যা কর।

ঘ.ভাগ্য পরিবর্তনে উদ্দীপকের কৃষেকরা সমর্থ হলেও ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের কাপালিরা ব্যর্থ হয়েছে -বিশ্লেষণ কর।

 

১১নং প্রশ্নের উত্তর: 


ক. বাক্স ফেরত পেয়ে লোকটি হকচকিয়ে গেল এবং কাঁদতে লাগল।

খ. বিধু পশ্চিম আকাশে মেঘের গুড়গুড় আওয়াজ শুনে বোঝাতে চাইল কালবৈশাখীর ঝড়ের কথা।

 বৈশাখ মাসে পশ্চিম দিকে মেঘ ডাকার মানে কালবৈশাখীর ঝড় উঠবে। তাই বিধু সবাইকে ঝড়ে বাড়–য্যেদের মাঠের বাগানে আম কুড়াতে যাওয়ার কথা বলল। মূলত বিধু বোঝাতে চাইল পশ্চিম আকাশে এমন মেঘ ডাকলে ঝড় আসবেই।

গ. উদ্দীপকের ‘খ’ দ্বীপের বন্যার ঘটনার মাধ্যমে যেন ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের অম্বরপুর চরের মানুষের দুঃখদুর্দশার চিত্রই অঙ্কিত হয়েছে।

 গল্পে অম্বরপুর চরের লোকজনের প্রধান জীবিকা কৃষিকাজ। তারা জমিতে শাকসবজির আবাদ করে। কিন্তু বন্যা অম্বরপুর চরবাসীর ফসল, ঘরবাড়ি সবকিছু ভাসিয়ে নিয়ে যায়। তাদের দুঃখ-দুর্দশার অন্ত থাকে না।

 উদ্দীপকে দেখা যায়, ‘খ’ লোকজন অসহায় হয়ে যায় প্রলয়ঙ্করী বন্যায়। বন্যায় ভেসে যায় এ দ্বীপের জমির শিম ও লাউ-কুমড়োর মাচা। ভেসে যায় তাদের গবাদিপশু। ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পে অম্বরপুর চরের বাসিন্দাদের যেভাবে সর্বস্বান্ত করে দেয় প্রলয়ঙ্করী বন্যা, উদ্দীপকেও একইভাবে বন্যায় সর্বস্বান্ত হয় ছোট দ্বীপের বাসিন্দা। উদ্দীপকে ‘ক’ দ্বীপের একমাত্র অবলম্বন জমি তলিয়ে যায় পানির নিচে। আর ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পে অম্বরপুরবাসীর বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন জমিগুলোও বন্যায় তলিয়ে যায়। সুতরাং উদ্দীপকে ছোট দ্বীপের বাসিন্দা এবং ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পে অম্বরপুরবাসীর সর্বস্বান্ত হওয়ার চিত্রই অঙ্কিত হয়েছে।

ঘ. “ভাগ্য পরিবর্তনে উদ্দীপকের কৃষকরা সমর্থ হলেও ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের কাপালিরা ব্যর্থ হয়েছে” মন্তব্যটি যথার্থ।

 পড়ে পাওয়া’ গল্পে অম্বর চরের কাপালিরা ভয়ঙ্কর বন্যায় অসহায় হয়ে যায়। বন্যায় ভেসে যায় তাদের ঘরবাড়ি, গবাদিপশু, ফসলসহ সবকিছু। বন্যায় সবকিছু হারিয়ে অনেকেই আশ্রয় নেয় নির্বিষখোলার বিভিন্ন বাড়িতে। তারা তাদের ভাগ্য পরিবর্তনে সক্ষম হয় না। অসহায় মানুষগুলো তাদের জীবনে দুঃখ কষ্টকেই বরণ করে নেয়।

 উদ্দীপকেও ‘খ’ দ্বীপের কৃষকরা বন্যায় সব হারিয়ে সর্বস্বান্ত হয়। বন্যায় সব হারিয়ে দ্বীপের অসহায় মানুষগুলো বন্যা-পরবর্তী সময়ে ভাগ্য ফেরাতে কঠোর পরিশ্রম করে।  বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ কৃষকদের সহায় সম্বলসহ কৃষি জমি তলিয়ে নিয়ে যায়। বন্যা পরবর্তী সময়ে কেউ কেউ আবার তাদের ভাগ্য পরিবর্তনে কঠোর পরিশ্রম করে। ফিরে পেতে চায় আগের সুখ সমৃদ্ধি।

 উদ্দীপকের কৃষকরা কঠোর পরিশ্রম করে স্ত্রী-সন্তানদের মুখে হাসি ফোটায় - অবশেষে সফল হয় ভাগ্য পরিবর্তনে। উদ্দীপকের কৃষকরা পরিশ্রমের মাধ্যমে তাদের অবস্থার উন্নতি ঘটায়।

 উল্লিখিত আলোচনায় বলা যায়, বন্যাপরবর্তী সময়ে ভাগ্য পরিবর্তনে উদ্দীপকের কৃষকদের ও ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের কাপালিদের অবস্থা বিপরীতমুখী।

 

 সৃজনশীল প্রশ্নব্যাংক


প্রশ্ন-১২ : শানু বৈশাখ মাসে মামার বাড়ি বেড়াতে যায়। একদিন আকাশের অবস্থা ও মেঘের গুড়গুড় শব্দ শুনে বুঝতে পারে কালবৈশাখী ঝড় আসছে। সে তার মামাতো ভাই মনু ও বনুকে একথা বলে। কিন্তু তারা বিশ্বাস করতে চায় না। তবে সত্যি সত্যি ঝড় আসে। তখন শানু, মনু ও বনুকে নিয়ে মামার হীমসাগর আমগাছ তলায় যায় আম কুড়ানোর জন্য। কারণ এ গাছের আম অনেক মিষ্টি। তারা সেখানে গিয়ে দেখে আম কুড়ানোর জন্য তাদের আগে আরও অনেকে এসে জড়ো হয়েছে।

ক. নরহরি বোষ্টমের ডোবায় কী ডাকছে?

খ. গল্পকথকরা বিধুর কথা বিশ্বাস করতে পারছিল না কেন?

গ. উদ্দীপকে বর্ণিত ঘটনার সাথে ‘পড়ে পাওয়া’ রচনার কোন বিষয়ের মিল পাওয়া যায়? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. উদ্দীপকটি ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের মূলভাব ধারণ করে কী? ব্যাখ্যা কর।

   পড়ে পাওয়া গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন

প্রশ্ন-১৩ : সাজ্জাদ হোসেন একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে দীর্ঘদিন কর্মরত আছেন। কোম্পানির মালিকের সাথে তার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। গত বছর কোম্পানির মালিক চৌধুরী সাহেব কোম্পানির সমস্ত দায়িত্ব সাজ্জাদ হোসেনের ওপর দিয়ে নিশ্চিন্তে হজে চলে যায়। তখন সাজ্জাদ হোসেনের মধ্যে লোভী মানসিকতা কাজ করে। সে সুযোগ পেয়ে মালিকের প্রচুর টাকা আত্মসাৎ করে।

ক. বাদল কীসে হোঁচট খেয়ে পড়ে গেল?  

খ. বাক্সের প্রকৃত মালিককে খুঁজে পেতে বাদলরা কী করেছিল? ব্যাখ্যা কর।

গ. উদ্দীপকের সাথে ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের বৈসাদৃশ্য নির্ণয় কর।

ঘ. উদ্দীপকটি ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের সাথে কোনো সাদৃশ্য সূচিত করে কি? মতের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন কর।


Post a Comment

Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.