সামাজিকীকরণের বাহন হিসেবে খেলার সাথীর ভূমিকা

0
ফেইসবুকে আমাদের সকল আপডেট পেতে Follow বাটনে ক্লিক করুন।




প্রশ্ন : সামাজিকীকরণের বাহন হিসেবে খেলার সাথীর ভূমিকা আলোচনা কর।

সামাজিকীকরণের বাহন হিসেবে খেলার সাথীর ভূমিকা

ভূমিকা : মানুষ সমাজে বাস করে। তাই সমাজের সাথে ব্যক্তি মানুষের একটি সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আর এ সম্পর্কটি যে প্রত্যয়ের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয় তাই হলো সামাজিকীকরণ। 

সামাজিকীকরণ হলো এমন একটি পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়া যার মাধ্যমে ব্যক্তি জন্মগ্রহণের পর থেকে নিজস্ব সমাজে প্রচলিত রীতিনীতি, আচার, মূল্যবোধ, আদর্শ, সংস্কৃতি, শিক্ষা ইত্যাদি আয়ত্ত করে। 

অর্থাৎ, জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ব্যক্তি তার সামাজিক পরিবেশ ও পরিস্থিতির সাথে উপযোজন করে তাই সামাজিকীকরণ।

সামাজিকীকরণের মাধ্যমে হিসেবে খেলার সাথীর ভূমিকা : 

সামাজিকীকরণের মাধ্যমে হিসেবে শিশুর সামাজিকীকরণে Peer group এর বিরাট অবদান আছে। Peer group হলো একই বয়সের ছেলেমেয়ে। Peer group সাধারণত বিভিন্ন বয়সে বিভিন্ন রকম হয়। 

শিশু যখন বড় হয় তখন তার সমবয়সী বন্ধুদের সাথে সময় কাটায় এবং পরিবার আস্তে আস্তে ত্যাগ করে। বন্ধুদের দ্বারা সে প্রভাবিত হতে থাকে। সমবয়সীদের প্রভাব বাড়তে থাকলে পিতা-মাতার প্রভাব কমতে থাকে। 

সমবয়সীদের মাঝে পারস্পরিক সম্পর্ক হলো পারস্পরিক বোঝাপড়া, পরামর্শ ও সহযোগিতা। ব্যক্তি যখন পরিবারের গণ্ডির বাইরে গিয়ে বন্ধুদের সাথে সময় কাটায় তখন সে অনেক কিছু শিক্ষা অর্জন করে। যেমন-

১. অন্যের সাথে কিভাবে মিশতে হবে তা শিখে 

২. কিভাবে নেতৃত্ব দিতে হবে তা অর্জন করে।

৩. সঙ্গীদেরকে সহনশীল মনোভাব সৃষ্টি করে। 

৪. সাথীদের সাথে মেশার ফলে প্রতিযোগিতার মনোভাব অর্জিত হয়।

৫. একে অপরকে কিভাবে সহযোগিতা করতে হবে তার শিক্ষা গ্রহণ করে।

৬. সামাজিক মূল্যবোধের প্রতি সচেতন হয়।

৭. অন্যের বিপদে সাহায্য করার মনোভাব জাগ্রত হয়।

Peer group-এ যেহেতু সঙ্গীরা একই বয়সের থাকে এবং একই দৃষ্টিসম্পন্ন হয় তাই তাদের ভিতরে Interaction-টা খুব ভালো হয়। 

তারা সবাই পৃথিবীটাকে একই দৃষ্টিতে দেখে, peer group এর মাধ্যমে নীতিজ্ঞান, অধিকার ও কর্তব্য সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করে। এ সময়ে খেলার সাথীর ভূমিকা বৃদ্ধি পেতে থাকে অন্যদিকে পিতামাতা বা পরিবারের ভূমিকা হ্রাস পেতে থাকে। 

বলা হয়ে থাকে পরিবারে পিতামাতার পরই শিশুর সামাজিকীকরণে খেলার সাথী বা peer group গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।

উপসংহার : 

পরিশেষে বলা যায় যে, সমাজ ও সংস্কৃতির সাথে নিজেকে খাপ খাইয়ে নেওয়ার নামই হলো সামাজিকীকরণ। 

সামাজিকীকরণের মাধ্যম হিসেবে পরিবারের পরই খেলার সাথী বা বন্ধুদের গুরুত্ব অনস্বীকার্য। শিশুর মানসিক বৃদ্ধি, পৃথিবী সম্পর্কে জ্ঞান লাভ, সহযোগিতার মনোভাব বন্ধুদের সাথে মেশার ফলে শিখে।

Post a Comment

0Comments
Post a Comment (0)