
অর্থনৈতিক পরিকল্পনা কি? অথবা, অর্থনৈতিক পরিকল্পনা বলতে কি বুঝ?
ভূমিকা: আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় মানবজীবনকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য পরিকল্পনার প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। কৃষি, শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য, বাসস্থান প্রভৃতি যাবতীয় বিষয় মানুষ পরিকল্পনার ভিত্তিতে করে থাকে।
রাষ্ট্রীয়ভাবে পরিকল্পনা গ্রহণের সূচনা হয় সাবেক সমাজতান্ত্রিক সোভিয়েত ইউনিয়নে। বর্তমানে অর্থনৈতিক পরিকল্পনার গুরুত্ব সারা পৃথিবী ব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে।
সীমিত সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই পরিকল্পনা গৃহীত হয়। বর্তমানে উন্নত, উন্নয়নশীল এবং অনুন্নত দেশে অর্থনৈতিক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে।
অর্থনৈতিক পরিকল্পনা:
সাধারণত কোনো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য সুচিন্তিত এবং সুপরিকল্পিত কর্মসূচিকেই অর্থনৈতিক পরিকল্পনা বলা হয়। অন্যভাবে বলতে গেলে বলা যায় যে, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে উদ্দেশ্যমূলক ও ধারাবাহিকভাবে কোনো কর্মকাণ্ড গ্রহণ এবং তা বাস্তবায়নের নামই হচ্ছে অর্থনৈতিক পরিকল্পনা।
প্রমাণ্য সংজ্ঞা :
অর্থনৈতিক পরিকল্পনা সম্পর্কে বিখ্যাত অর্থনীতিবিদদের মতামত তুলে ধরা হলো : অর্থনৈতিক পরিকল্পনার সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য সংজ্ঞা প্রদান করেছেন,
বিশিষ্ট ধনবিজ্ঞানী অধ্যাপক এল. রবিনস (L. Robbins) তার মতে,
“অর্থনীতি এমন এক বিজ্ঞান যা মানুষের চরম উদ্দেশ্য এবং পরিবর্তন ব্যবহারযোগ্য সসীম সম্পদের মধ্যে সমন্বয় সাধনকারী কার্যাবলি আলোচনা করে।"
অধ্যাপক হায়েক (Hayek) এর মতে,
“অর্থনৈতিক পরিকল্পনা হচ্ছে, একটি কেন্দ্রীয় কর্তৃত্বের দ্বারা উৎপাদনমুখী কর্মকাণ্ডের নির্দেশ।”
অর্থনীতিবিদ ডিকিনসনের মতে,
“সমগ্র অর্থনীতির ব্যাপক জরিপের ভিত্তিতে কোনো নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক কোনো দ্রব্য কি পরিমাণে উৎপাদন করতে হবে এবং কিভাবে তা বন্টন করতে হবে সে বিষয়ে যে সকল বিশেষ অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাই অর্থনৈতিক পরিকল্পনা"
উপসংহার:
পরিশেষে বলা যায় যে, কোনো নির্দিষ্ট সময়ে একটি দেশের প্রাপ্ত সম্পদের সুষ্ঠু ও সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে পূর্ব নির্ধারিত ও স্বচ্ছভাবে বর্ণিত অর্থনৈতিক লক্ষ্যসমূহ অর্জনের উদ্দেশ্য কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষকে সুচিন্তিত কর্মসূচি ও কৌশল গ্রহণ করে তাই হলো অর্থনৈতিক পরিকল্পনা।