ঙ দলের কাজ - ৭ম শ্রেণির ডিজিটাল প্রযুক্তি সামষ্টিক মূল্যায়ন সমাধান

0
ফেইসবুকে আমাদের সকল আপডেট পেতে Follow বাটনে ক্লিক করুন।




ঙ দলের কাজ - ৭ম শ্রেণির ডিজিটাল প্রযুক্তি সামষ্টিক মূল্যায়ন সমাধান

ঙ দলের কাজ - ৭ম শ্রেণির ডিজিটাল প্রযুক্তি সামষ্টিক মূল্যায়ন সমাধান

ঙ দলের কাজ

ঙ দলের কাজ - ৭ম শ্রেণির ডিজিটাল প্রযুক্তি সামষ্টিক মূল্যায়ন সমাধান

ছুটি পেলেই ঘুরে আসতে পারেন সবুজে ঘেরা কোনো নির্জন জায়গা থেকে। যদি সবুজ প্রকৃতির পাশাপাশি ঐতিহ্যের মিশেল খোঁজেন, ঘুরে আসতে পারেন বাগেরঘাটের ষাট গম্বুজ মসজিদ থেকে। ঐতিহ্যের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে খান জাহান আলী নির্মিত এ মসজিদ। লিখেছেন আসমাউল হুসনা।
যানজটে ঠাসা শহরে একদম হাঁপিয়ে উঠেছিলাম। 
অনেক দিন হলো ঢাকার বাইরে যাওয়া হয় না। পাখির মতো মেলা হয় না ডানা। সবুজের প্রাচুর্যের মধ্যে প্রাণভরে নিঃশ্বাস নেওয়া হয় না। এক বিকেলে ঘরের সব কাজ শেষে বারান্দার গ্রিল ধরে দাঁড়িয়ে ছিলাম। হঠাৎ ফোন বেজে উঠল। হাতে নিয়ে দেখলাম রাশিদা আপার কল রিসিভ করা মাত্রই আপা বলে উঠলেন, 'গ্রামের বাড়ি যাবি? ব্যাগ গুছিয়ে চলে আয় আমার বাসায়। সবকিছু ঠিক থাকলে আমরা আগামীকাল গ্রামে যাব 
গ্রাম! তার মানে খোলা আকাশ দেখার সুযোগ। আর আপার সঙ্গে বের হওয়া মানেই অ্যাডভেঞ্চার। সাত পাঁচ না ভেবেই আপাকে কথা দিয়ে ফেললাম। সকালে ব্যাগ গুছিয়ে আপার বাসায় চলে এলাম।
দুপুর ২টায় রওনা হলাম গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্য। নারায়ণগঞ্জ থেকে গাড়ি চলছে দ্রুতগতিতে। বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে এগোতেই বাংলার গৌরবময় পদ্মা সেতু দেখতে উৎসুক দৃষ্টি নিয়ে তাকালাম। কাঙ্ক্ষিত পদ্মা সেতু ধরে এটি আমার প্রথম যাত্রা। আমাদের দীর্ঘ অপেক্ষা ও আক্ষেপের অবসান ঘটিয়ে সাঁ সাঁ করে গাড়ি চলছে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে।

দীর্ঘদিন পর এমন একটা ভ্রমণ যাত্রা যেন অনেকটাই সতেজ করে তুলছে আমাদের। আর পুরো যাত্রাপথজুড়ে ভাগনে রাইশাদ ও রুহানের খুনসুটি আনন্দ দিয়েছে আমাদের। গোপালগঞ্জে যাত্রাবিরতি দিয়ে সন্ধ্যা ঠিক ৫টা ৩০ মিনিটে আমরা পৌঁছে গেলাম পিরোজপুর শহরে। গন্তব্য কাউখালী উপজেলার সয়না গ্রাম।

আগেই বলেছিলাম, আমাদের রাশিদা আপার সঙ্গে বের হওয়া মানেই অ্যাডভেঞ্চার। পিরোজপুর সদর থেকে সয়না যাওয়ার পথে হঠাৎই আপা বলে উঠলেন, 'চল সবাই অষ্টম চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী সেতু ঘুরে আসি।' যার আঞ্চলিক নাম ভেকুটিয়া সেতু। গাড়ি ঘুরিয়ে চলে গেলাম কচা নদীতীরে। সেতুর ওপর দাঁড়িয়ে সূর্যাস্তের দৃশ্যটা সত্যিই অপরূপ ছিল।

পরের দিন পাখির কিচিরমিচির শব্দে খুব ভোরেই ঘুম ভাঙল। আমাদের বড় ভাগনে রাইশাদকে নিয়ে বের হয়ে বাড়ির পাশে বিস্তৃত সূর্যমুখী বাগান দেখে থমকে গেলাম। মাঠের পর মাঠ হলুদ সূর্যমুখী যেন হাতছানি দিয়ে ডাকছে।

সূর্যমুখী বাগান ঘুরে বাসায় এলাম। চট করে নাশতা সেরেই চলে গেলাম তিন নদীর মোহনায়। সন্ধ্যা, কচা ও কালীগঙ্গা নদী যেন একই বন্ধনে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে। পরের দিন খুব ভোরে আপার ডাকে ঘুম ভাঙল। আপা বললেন, 'খালে জোয়ার এসেছে, চল আমরা সবাই বেরিয়ে পড়ি। প্রথমে আমরা ট্রলারে ঘুরব; এর পর বাগেরহাটের ষাট গম্বুজ মসজিদে যাব।' ব্যস, মন সতেজ হতে আর কী লাগে। তাড়াতাড়ি নাশতা সেরে সবাই ট্রলারে উঠলাম।

ষাট গম্বুজ মসজিদটি বাংলাদেশের তিনটি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের মধ্যে একটি। মসজিদের গায়ে কোনো শিলালিপি না থাকলেও এর স্থাপনাশৈলী বলে দেয় এটি হজরত খান-উল-আজম-উলুঘ- খান-ই-জাহান আলী কর্তৃক নির্মিত। 
হজরত খানজাহান আলী (রা.) এ দেশে এমন অনেক মসজিদ নির্মাণ করে ইসলাম প্রচার করেছেন। ছোটবেলায় বইয়ের পাতায় পড়া এই অপূর্ব স্থাপনাটি আজ নিজ চোখে দেখতে যাব। এই ভেবে আনন্দের আর সীমা থাকল না।
গাড়ি চলছে আপন গতিতে। বলেশ্বর নদী ও দাঁড়টানা নদী পেরিয়ে আমরা পৌঁছে গেলাম বাগেরহাটের ষাট গম্বুজ মসজিদের সামনে। গাড়ি যথাস্থানে পার্ক করে জনপ্রতি ২০ টাকা টিকিট কেটে প্রবেশ করলাম। মসজিদের গেট দিয়ে ঢুকতেই দেখতে পেলাম বাগেরহাট জাদুঘর। 
তিন গ্যালারিবিশিষ্ট একতলা ভবনের জাদুঘরটিতে ঢুকে বেশ কিছু পুরোনো মুদ্রা, তৈজসপত্র, মানচিত্র এবং বিভিন্ন ধ্বংসাবশেষ থেকে পাওয়া স্মৃতিচিহ্ন চোখে পড়ল। জাদুঘরটির সবচেয়ে আকর্ষণীয় জিনিস হচ্ছে কুমিরের মমি। যতদূর জানা যায়, হজরত খান জাহান আলী (রা.) এর পালিত কুমির কালাপাহাড় বা ধলাপাহাড়ের মৃত শরীরকে মমি করে অথবা শুধু চামড়া দিয়ে এই ডামি বানানো হয়েছে। 
যদিও মাথাটি ছিল সম্পূর্ণই কৃত্রিম। জাদুঘরটিতে ঢুকতে কাটতে হবে জনপ্রতি ১৫ টাকা করে টিকিট। সপ্তাহে ৬ দিন খোলা থাকলেও প্রতি রোববার জাদুঘরটি পূর্ণ দিবস বন্ধ থাকে।

মসজিদটির নাম ষাট গম্বুজ হলেও এটি আসলে ৭০টি গোলাকার গম্বুজ, ৭টি চারচালা গম্বুজ ও ৪টি কর্নার বুরুজসহ মোট ৮১টি গম্বুজবিশিষ্ট একতলা মসজিদ। মসজিদটির ষাট গম্বুজ নামকরণের পেছনে একাধিক কথা প্রচলিত আছে। কেউ কেউ বলেন, সারিবদ্ধভাবে সাতটি করে গম্বুজ থাকায় এটি ষাট গম্বুজ নামকরণ করা হয়। আবার অনেকে বলেন, মসজিদটি ৬০টি স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে থাকায় এটির নাম দেওয়া হয় ‘ষাট খাম্বা মসজিদ; যা কালে কালে ষাট গম্বুজ হয়ে উঠেছে।

মসজিদটি ৮ ফুটের দেয়াল দ্বারা বেষ্টিত। পোড়ামাটির তৈরি টালিইট, চুন-সুরকি, পাথর দ্বারা নির্মিত মসজিদটি প্রশংসার দাবিদার। এতে রয়েছে পোড়ামাটির ফলক। কিবলা দেয়ালে বিশেষ একটি দরজা থাকলেও খিলান দরজা আছে ২৫টি। বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ প্রাচীন আয়তাকার এ মসজিদটিতে রয়েছে ১০টি মেহরাব। 
মসজিদের চারদিকে সবুজ ঘাসে ঘুরে বেড়ালাম বেশ কিছুক্ষণ। গাছের নিচে বসে জিরিয়ে নিলাম। আর মসজিদের সামনে শিশুদের জন্য থাকা প্লে গ্রাউন্ড পেয়ে রাইশাদ, রুহানের তো আনন্দের অন্ত নেই।

এরপর গেলাম মসজিদের ঠিক পশ্চিম পাশে সুদীর্ঘ দিঘির দিকে। দিঘির বাঁধানো ঘাটের সিঁড়িতে বসে পা ভিজিয়ে নিলাম জলে। শ্যাওলাযুক্ত দিঘির পানিতে রয়েছে লাল শাপলা। মসজিদ থেকে ১০ মিনিটের দূরত্বে আছে হজরত খান জাহান আলি (রা.)-এর সমাধি। সেখানে বহু মানুষ আসেন তাদের ইচ্ছে পূরণের আশ্বাস নিয়ে, করে থাকেন মানতও। মানুষের আশা পূরণের এই বিশ্বাস বহুযুগের। 

তাই এ জায়গাটিতে প্রতিদিন অনেক মানুষের সমাগম হয়। সমাধি স্থানের সামনে আছে একটি বিশাল দিঘি। দিঘির চারপাশে ঘনসবুজ গাছ। বলা হয় খান জাহান আলি (রা.) এই দিঘিতেই কুমির পালন করতেন। যার ধারা এখনও বজায় আছে। সমাধিস্থলের বাইরে রয়েছে অনেকগুলো দোকান। দোকানগুলোয় গৃহস্থালির জিনিসপত্রসহ বাহারি ধরনের উপহার সামগ্রী পাওয়া যায়। সবগুলো দোকান ঘুরে এবার আমাদের ফেরার পালা।

কীভাবে যাবেন

চাইলে যে কেউ ঘুরে আসতে পারেন ঐতিহাসিক ষাট গম্বুজ মসজিদ থেকে। সে ক্ষেত্রে ঢাকা থেকে বাগেরহাটের বাস ভাড়া গুনতে হবে প্রতিজন ৪০০-৬০০ টাকা। বাগেরহাট বাসস্ট্যান্ট থেকে সিএনজি, অটো, ভ্যানগাড়িযোগে পৌঁছাতে পারেন ষাট গম্বুজ মসজিদ প্রাঙ্গণে। আবার ঢাকা থেকে গাড়ি ভাড়া করেও যেতে পারেন। 
ঐতিহাসিক ষাট গম্বুজ মসজিদ দেখার পাশাপাশি একটু সময় নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন সুন্দরবন, মোংলা বন্দর, রেজা খোদা মসজিদ, জিন্দা পীর মসজিদ, ঠান্ডা পীর মসজিদ, সিংগাইর মসজিদ, বিবি বেগুনি মসজিদ, চুনাখোলা মসজিদ, নয় গম্বুজ মসজিদ, কোদলা মঠ, রণবিজয়পুর মসজিদ, দশ গম্বুজ মসজিদ, সুন্দরবন রিসোর্ট, বারাকপুর, চন্দ্রমহল ইত্যাদি।
ঙ দলের কাজ - ৭ম শ্রেণির ডিজিটাল প্রযুক্তি সামষ্টিক মূল্যায়ন সমাধান

Tag: ঙ দলের কাজ - ৭ম শ্রেণির ডিজিটাল প্রযুক্তি সামষ্টিক মূল্যায়ন সমাধান, ঙ দলের কাজ - ৭ম শ্রেণির ডিজিটাল প্রযুক্তি সামষ্টিক মূল্যায়ন সমাধান, ঙ দলের কাজ - ৭ম শ্রেণির ডিজিটাল প্রযুক্তি সামষ্টিক মূল্যায়ন সমাধান, ঙ দলের কাজ - ৭ম শ্রেণির ডিজিটাল প্রযুক্তি সামষ্টিক মূল্যায়ন সমাধান,m

Post a Comment

0Comments
Post a Comment (0)