নাটক: সিরাজউদ্দৌলা গুরুত্বপূর্ণ অনুধাবন ও জ্ঞানমূলক প্রশ্ন

নাটক: সিরাজউদ্দৌলা গুরুত্বপূর্ণ অনুধাবন ও জ্ঞানমূলক প্রশ্ন, সিরাজউদ্দৌলা নাটকের প্রশ্ন ও উত্তর
Follow Our Official Facebook Page For New Updates


Join our Telegram Channel!

নাটক: সিরাজউদ্দৌলা গুরুত্বপূর্ণ অনুধাবন ও জ্ঞানমূলক প্রশ্ন


নাটক: সিরাজউদ্দৌলা

সিকান্দার আবু জাফর (১৯১৮-১৯৭৫)


মূলপাঠের আলোকে গুরুত্বপূর্ণ অনুধাবন:

১। প্রাণপণে যুদ্ধ করো সাহসী ব্রিটিশ সৈনিক।

উ: নাটকের প্রথম এই সংলাপটি ক্যাপ্টেন ক্লেটনের। তাঁর সৈনিকদের নবাবের বিরুদ্ধে লড়ার জন্য উৎসাহিত করতে তিনি একথা বলেন ।

২। ভিক্টরি অর ডেথ,ভিক্টরি অর ডেথ।

উঃ নবাব বাহিনী কর্তৃক ফোর্ট উইলিয়ম দুর্গ আক্রান্ত হলে ইংরেজ সেনাপতি ক্লেটন সৈনিকদেরকে উৎসাহিত করতে এ কথা বলেন ।

৩। ইংরেজদের হয়ে যুদ্ধ করছি কোম্পানির টাকার জন্য । তা বলে বাঙ্গালি কাপুরুষ নয় ।

উঃ ক্যাপটেন কেটন বাঙালিকে কাপুরুষ বলে অবজ্ঞা করলে ইংরেজ বাহিনীতে চাকরি করা বাঙালি সেনিক ওয়ালি খান তার প্রতিবাদ করে বলেন, কেবল জীবিকার জন্যে তিনি ইংরেজ বাহিনীতে চাকরি করছেন বলে বাঙালিকে অবজ্ঞা করা তিনি মেনে নিতে পারেন না। তাই প্রতিবাদস্বরূপ কথাটা বলেন ।

৪। কাপুরুষ বেইমান। জ্বলন্ত আগুনের মুখে বন্ধুদের ফেলে পালিয়ে যায়।

উঃ ক্যপ্টেন মিনচিন, কাউন্সিলর ফকল্যান্ড আর ম্যানিংহাম নৌকাযোগে পালিয়ে গেলে ক্ষুব্ধ ক্লেটন একথা বলেন।

৫। ডাচরা,ফরাসিরা কেউ ইংরেজদের সাহায্য করেনি কেন? 

উ: ভারতবর্ষে ইংরেজরা সবার পরে আসে বাণিজ্য করতে অথচ অন্যদের কোণঠাসা করে তারাই ব্যবসায়- বাণিজ্যে একাধিপত্য বিস্তার করতে সচেষ্ট থাকে। তাই অন্য বিদেশিরা সবাই তাদের ওপর ক্ষিপ্ত ছিল বলে ইংজেদের বিপদের সময় কেউ সাহায্য করতে এগেিয় আসে নি।

৬। আমি গভর্নর ড্রেকের ধ্বংস দেখতে চাই ।

উঃ উর্মিচাঁদ ইংরেজদের সাহায্যকারী হলেও ক্ষোভ ও অভিমানবশত তিনি এ কথা বলেছেন। নবাবের কথা মত ইংরেজরা উর্মিচাঁদকে বন্দি বরে রেখেছিল। তাই রাগে তিনি একথা বলেন।

৭। ব্রিটিশ সিংহ ভয়ে লেজ গুটিয়ে নিলেন,এ বড় লজ্জার কথা ৷

উঃ ইংরেজদের পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন ক্যাপ্টেন ক্লেটন। কিছুক্ষণ আগেও তিনি তার সৈনিকদেরকে মৃত্যু না আসা পর্যন্ত যুদ্ধে উৎসাহিত করছিলেন। কিন্তু দেখা গেল, তিনি নিজে পালিয়ে গেলেন। তখন হলওয়েল এই লজ্জার কথা বলে ।

৯। বাংলার বুকে দাঁড়িয়ে বাঙালির বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরবার স্পর্ধা ইংরেজ পেল কোথা থেকে আমি তার কৈফিয়ত চাই ৷

উ: ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ জয়ের পর ডাক্তার হলওয়েলের কাছে নবাব বাঙালির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার স্পর্ধা দেখানোর জন্য কৈফিয়ত চেয়ে একথা বলেন। একথার মধ্যে সিরাজের সাহস ও বীরত্ব ফুটে ওঠে।

১০। তোমরা ভেবেছ তোমাদের অপকীর্তির কোনো খবর আমি রাখি না?

অথবা, তোমরা কি ভেবেছ এইসব অনাচার আমি সহ্য করব।

উ: কাশিমবাজারে গোলাগুলি আমদানি করা, কলকাতার আশপাশের গ্রামগুলো ক্রমান্বয়ে দখল করা, দুর্গ সংস্কার করে সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করা, নবাবের নিষেধ অমান্য করে কৃষ্ণবল্লভকে আশ্রয় দেওয়া এবং মসনদে বসার পর নিয়মমাফিক নবাবকে নজরানা পাঠিয়ে আনুগত্য স্বীকার না করে ধৃষ্টতা দেখানো— এইসব অপকীর্তি ও অনাচারের বিরুদ্ধে নবাবের ক্ষোভ প্রকাশ পেয়েছে।

১১। ‘দিল্লির বাদশা' বলতে নাটকে সম্রাট ফররুখ শিয়রকে বোঝানো হয়েছে।

১২। সিরাজ কেন ইংরেজদের বাণিজ্য করবার অধিকার প্রত্যাহার করে নেন?

উঃ বাণিজ্যের নামে ইংরেজরা গোপনে অস্ত্র গোলা-বারুদ সংগ্রহ করছিল এবং নবাবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছিল তাই তাদের বাণিজ্য করবার অধিকার প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।

১৩। ফরাসিরা ডাকাত আর ইংরেজরা অতিশয় সজজন, কেমন?

উঃ বাংলাদেশে নানা অপকর্ম করেও ইংরেজরা নিজেদেরকে সজজন বলে দাবি করলে নবাব ব্যাঙ্গ করে

এ কথা বলেন ।

১৪। নবাবের আদেশ অমান্য করে ড্রেকের কৃষ্ণবল্লভ কে আশ্রয় দেওয়ার কারণ কী?

উঃ অর্থ লোভী ড্রেক মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে কৃষ্ণবল্লভকে আশ্রয় দেন।

১৫। উই হ্যাভ কাম টু আর্ন মানি নট টু গেট ইনটু পলিটিক্স। রাজনীতি আমরা কেন করব ।

উঃ নবাব তার বিরুদ্ধে ইংরেজদের গোপন চক্রান্তের অভিযোগ আনলে ওয়াটস সেই অভিযোগ অস্বীকার করে উপর্যক্ত কথাটি বলেন ৷

১৬। তোমরা বাণিজ্য কর? কোমরা কর লুট। আর তাতে বাধা দিতে গেলেই তেমারা শাসন ব্যবস্থায় ওলটপালট আনতে চাও ।

উ: ইংরেজদের রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং বাণিজ্যের নামে তাদের অপতৎপরতা সম্পর্কে সম্যক জ্ঞাত নবাব তাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক কূটকৌশলের অভিযোগ আনতে একথা বলেছেন।

১৭। ইংরেজরা শাসন ক্ষমতা করায়ত্ত করে অবাধ লুটতরাজের পথ পরিষ্কার করেছে- কর্ণাটকে, দাক্ষিণাত্যে।

১৮। আমরা আমাদের ভবিষ্যৎটাই জানতে চাইছি ।

উঃ গভর্নর রজার ড্রেকের ধৃষ্টতার কারণেই সাধারণ সৈনিক ও ইংরেজ জনসাধারণের জীবনে যে অনিশ্চয়তা নেমে এসেছে সে ব্যাপারে উৎকণ্ঠিত সৈনিক মার্টিন তার ক্ষোভ প্রকাশ করে ড্রেকের উদ্দেশ্যে এ কথা বলেছে। ১৯। সাধারণ সৈনিক হ্যারির মতে, “ঘুষের টাকা বড় বেশি মোটা হবার কারণেই নবাবের ধমকানি সত্ত্বেও কৃষ্ণবল্লভকে ত্যাগ করতে পারেন নি মি. ড্ৰেক” । ২০। 'আমি ঘুষ খাইনে।'- কথাটা রজার ড্রেকের। ২১। ‘ঘুষ খেয়ে খেয়ে ঘুষ কথাটার অর্থই বদলে আপনার কাছে।'- কথাটা রজার ড্রেকের উদ্দেশ্যে ক্ষুব্ধ হ্যারি বলেছে।

২২। ইংরেজের আধিপত্য এত সহজেই মুছে যাবে না কি? - এই দম্ভ ড্রেকের।

২৩। ‘বড়াই করে কোনো লাভ হবে না, মি. ড্রেক। আপনারকর্তৃত্ব মানবো না।'[— এই প্রতিবাদী অবস্থান মার্টিনের। 

২৪। ড্যাম ইউর কাউন্সিল, প্রাণ বাচাবে কী করে তার ব্যবস্থা নেই,কর্তৃত্ব ফলাচ্ছেন সব ।

উঃ নবাবের সঙ্গে যুদ্ধে পরাজিত ইংরেজরা মেয়েদের নৌকা যোগে জাহাজে আশ্রয় নেয়, সেখানে পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের উপায় না করে নিজেরা কলহে লিপ্ত হলে ইংরেজ মহিলা বিরক্ত হয়ে এ কথা বলেন।

২৫। অহোরাত্র এক কাপড় পরে মানুষের মনুষ্যত্ব ঘুচে যাবার জোগাড়।

উঃ নবাবের আক্রমণের মুখে পালিয়ে জাহাজে আশ্রয় নেওয়া অন্যান্যদেও মতো মহিলারাও যে চরম দুরবস্থার শিকার সেকথা ক্ষোভের সাথে এখঅনে ব্যক্ত হয়েছে। ২৬। ‘পিটিএবল অ্যানাটমিক একক্সিবিশন' বলতে জীবন বাঁচাতে এক কাপড়ে পালিয়ে আসার কারণে নিদারুণ বস্ত্ৰ সংকটকে বোঝানো হয়েছে।

২৭। ‘আমি চিরকালই ইংরেজের বন্ধু।' কথাটা উমিচাঁদের। 

২৮। কাজেই উদ্দেশ্যের দিক দিয়া বিচার করিলে আমি আপনাদেরই সমগোত্রীয় ।

উঃ বৈধ-অবৈধ যেকোনোভাবেই ইংরেজদের মতো উমিচাঁদেরও উদ্দেশ্য অর্থ উপার্জন সেই দিকটি এখানে প্রকাশ পেয়েছে।

২৯। ‘এ পারফেক্ট স্কাউড্রেল ইজ দিস উমিচাঁদ'- প্রচণ্ড অর্থলোলুপ উমিচাঁদের স্বার্থান্ধতার কারণে ড্রেক এভাবে তাকে গালি দেয়।

৩০। ‘ওর লোভের অন্ত নেই'- কথাটা উমিচাঁদ সম্পর্কে ড্রেক বলেছেন।

৩১। ‘দশদিকের দশটি হাত ভর্তি করতে হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে ইংরেজ, ডাচ আর ফরাসিরা'- অমাত্যবর্গের আর্থিক অসততার দিকটি কিলপ্যাট্রিকের এ উক্তিতে প্রকাশ পায়।

৩২। ‘শওকতজঙ্গ নবাব হলে সকলের উদ্দেশ্যই হাসিল হবে।'- কথাটা ওয়ার্টসের।

৩৩। ‘বিচিত্ৰবেশী অতিথি' অথবা 'সঙ্গের মেহমানটি আমাদের অচেনা বলে মনে হচ্ছে'- রাইসুল জুহালা সম্পর্কে। 

৩৪। আমি তো বেশক জাহেল । তা না হলে আপনারা সরশুদ্ধ দুধ খেয়েও গোঁফ শুকনো রাখেন, আর আমি দুধের হাঁড়ির কাছে যেতে না যেতেই হাঁড়ির কালি মেখে গুলবাঘা বনে যাই ।

উঃ কথাটি দ্বারা উমিচাঁদ অনৈতিক পথে অন্য অমাত্যদের অর্থ উপার্জনের পটুতা এবং নিজের অপটুতা সম্পর্কে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।

৩৫। পক্ষীকুলের একটি বিশেষ শ্রেণি, ধার্মিক হিসেবে যার জবরদস্ত নাম, সেই পাখির নৃত্যকলা আপনারা দেখবেন।দেশের বর্তমান অবস্থা বিবেচনা করে এই বিশেষ নৃত্যটি আমি জনপ্রিয় করতে চাই ।

উ: এখানের অমাত্যবর্গের বক ধার্মিকতা বা কপটতা সম্পর্কে ইঙ্গিতপূর্ণ ব্যঙ্গ আছে।

৩৬। ‘বর্তমান অবস্থায় এ ধরনের আলোচনা দীর্ঘ করা বিপজ্জনক।'- ঝানু রাজনীতিক রাজবল্লভ ধরা পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে কথাটা বলেছেন । 

৩৭। ‘শওকতজঙ্গ নিতান্তই অকর্মণ্য'- কথাটা জগৎশেঠের। 

৩৮। ঠিক এই ধরনের একটা সম্ভাবনার উল্লেখ করার ফলেই হোসেন কুলি খাঁকে প্রাণ দিতে হয়েছে।

উঃ জগৎশেঠ কর্তৃক ঘষেটি বেগমের সাথে রাজবল্লভের সম্পর্কের ইঙ্গিতপূর্ণ উক্তির প্রেক্ষিতে রায়দুর্লভ এ বিষয়টির অবতারণা করেন।

৩৯। ‘আমার তো কোনো বিষয়ে কোনো দাবি দাওয়া নেই, আমি সকলের খাদেম।'- কথাটি উমিচাঁদের।

৪০। ‘সিরাজউদ্দৌলা নবাবিতে নির্বিঘ্ন হতে পারলে আমাদের সকলের স্বার্থই রাহুগ্রস্ত করে তুলবে।”- এ আশঙ্কা উমিচাঁদের।

৪১। দওলত আমার কাছে ভগবানের দাদামশায়ের চেয়েও বড়। আমি দওলতের পূজারী।'- উমিচাঁদের এ উক্তিতে তার অপরিসীম অর্থলোলুপতা প্রকাশ পায়। 

৪২। সিরাজকে অপসারণ করতে উমিচাঁদের কাছে যে কারণটি মুখ্য— অর্থনৈতিক কারণ ।

৪৩। “দরবারে এ পর্যন্ত কোনো জরুরি বিষয়ের মীমাংসা হয় নি।”- কথাটা রাজবল্লভের ।

৪৪। ‘আমার নালিশ আজ আমার নিজের বিরুদ্ধে।'- বাংলার প্রজা সাধারণের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য বিধান করতে পারেন নি বলে আত্মপীড়িত সিরাজ নিজেকে অপরাধী সাব্যস্ত করে কথাটা বলেন।

৪৫। ‘এর এই অবস্থার জন্য দায়ী সিরাজের দুর্বল শাসন'- নবাব সিরাজ নিজের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উত্থাপন করলেও প্রচ্ছন্নভাবে অমাত্যবর্গের বিরুদ্ধেই এই অভিযোগ ।

৪৬। উৎপীড়িত ব্যক্তি নবাবের কাছে ইংরেজদের বিরুদ্ধে নালিশ করেছিল কেন?

উঃ উৎপীড়িত লবণ উৎপাদনকারী ব্যক্তি ইংরেজদের অত্যাচারের শিকার হওয়ায় নবাবের কাছে নালিশ করেছিল I

৪৭। আমি দেখতে চাই, আমার রাজত্বে হৃদয়হীন জালিমের বিরুদ্ধে অসহায়, মজলুম কঠিনতর জালিম হয়ে উঠছে। 

উ: কথাটার দ্বারা ক্ষুব্ধ নবাব অত্যাচারিত প্রজা- সাধারণকে অত্যাচারী বিদেশীদের বিরুদ্ধে কঠিন প্রত্যাঘাত হানবার আহ্বান জানিয়ে কথাটি বলেছেন। 

৪৮। ‘দুশ্চরিত্রতা এবং উচ্ছৃঙ্খলতার জন্যে দেশ থেকে নির্বাসিত না করে ভারতে বাণিজ্যের জন্যে তোমাদের পাঠানো হয়েছে।'- ড্রেক এবং ওয়াটস সম্পর্কে নবাব এ কথা বলেছেন।

৪৯। ‘রাজস্বের পরিমাণ বাড়লে দেশের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড মজবুত হয়ে উঠবে'- এসব বুঝিয়ে ইংরেজদেরকে লবণের ইজারাদারি দিতে নবাবকে প্ররোচিত করেন তাঁর অমাত্যবর্গ।

৫০। ‘ব্যক্তিগত অর্থলালসায় বিচারবুদ্ধি হারিয়ে আমি এই কুঠিয়ালদের প্রশ্রয় দিয়েছি কি না?’- এখানে, ‘ব্যাক্তিগত অর্থলালসা' বলতে সিরাজ বুঝিয়েছেন রাজস্বকে ।

৫১। 'জাঁহাপনার বুদ্ধির তারিফ না করে পারা যায় না'- ব্যঙ্গাত্মক বাক্যটি রাজবল্লভের ।

৫২। ‘নবাবের কাছে আমাদের পদমর্যাদার কোনো মূল্যই নেই'- উক্তিটি জগৎশেঠের।

৫৩। ‘এই অযথা দুর্ব্যবহারআমরা হৃষ্ট মনে গ্রহণ করতে পারব কি না সন্দেহ।'- নবাবকে এভাবে ভীতি প্রদর্শনের চেষ্টা করেন মিরজাফর।

৫৪। নাবাবের মতে, অসংখ্য ভুল বোঝাবুঝি, অসংখ্য ছলনা এবং শাঠ্যের ওপর' প্রতিষ্ঠিত— মৌলিক সম্প্রীতির ভিত্তি

৫৫। দেশের কল্যাণের কথা ভেবে উৎকণ্ঠিত হয়ে উঠবেন'- মিরজাফর

৫৬। 'দেশের স্বার্থের জন্যে নিজেদের স্বার্থ তুচ্ছ করে আমরা আজ্ঞাবহ হয়েই থাকব।'- উক্তিটি

নবাবের মিরজাফরের।

৫৭। ‘চন্দননগরের দেওয়ান'- নন্দকুমার

৫৮ । নবাব কোম্পানিকে লবণের ইজারাদারি দিয়েছিল কেন? 

উঃ ইজারাদারির বিনিময়ে ইংরেজদের নিকট থেকে যে রাজস্ব পাওয়া যাবে তা দিয়ে দেশের অর্থনৈতিক ভিত্তি মজবুত হবে এ বিবেচনায় তাদের কে ইজারাদারি দিলেন।

৫৯। আমার নালিশ আজ আমার নিজের বিরুদ্ধে?

উঃ বাংলার সাধারণ প্রজাদের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য রক্ষা করতে পানে নি বলে নবাব নিজেই নিজেকে দায়ী করেছেন। 

৬০। ঘসেটি বেগম নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে অভিসম্পাত করলেন কেন?

উঃ ক্ষমতার লোভে প্রতিহিংসাবশত খালা ঘসেটি বেগম সিরাজকে অভিসম্পাত কালেন ।

৬১। ঘসেটি বেগম কেন সিরাজের ধ্বংস কামনা করেন?

উঃ ক্ষমতার লোভে প্রতিহিংসাবশত খালা ঘসেটি বেগম সিরাজকে অভিসম্পাত কালেন ।

৬২। মতিঝিল ছেড়ে আমি এক পা নড়ব না ।

উঃ সিরাজকে ক্ষমতাচ্যুত করতে ইংরেজদের সাথে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হওয়ার খবর সিরাজ জানতে পারলে মতিঝিলের প্রাসাদ থেকে ঘসেটি বেগমকে রাজ প্রাসাদে চলে আসার আদেশ করলে একগুঁয়েমি করে খালা ঘসেটি এই প্রশ্নোক্ত কথাটি বলেন।

৬৩। চক্রান্তকারীরা শওকত জঙ্গকে কেন নবাব করতে সমর্থন দিতে চাইলেন?

উঃ দুশ্চরিত্র শওকত জঙ্গ নবাব হলে ষড়যন্ত্রকারীদের স্বার্থ উদ্ধার হবে তাই চক্রান্তকারীরা শওকত জঙ্গকে নবাব করতে সমর্থন দিতে চাইলেন।

৬৪। উর্মিচাঁদ কেন নিজেকে 'দওলতের পূজারি হিসাবে জাহির করেন? ব্যাখ্যা কর ।

উঃ সিরাজকে ক্ষমতাচ্যুত করে শওকতজঙ্গকে সিংহাসনে বসানোর ষড়যন্ত্রে নিজেদের লাভ-ক্ষতি হিসাবের সময় উর্মিচাঁদ উল্লিখিত কথাটা বলেছেন ঘসেটি বেগমের কাছে, যাতে তার অর্থলোভী মনোভাব প্রকাশিত হয়েছে।

৬৫। ঘরের লোক অবিশ্বাসী হলে বাইরের লোকের পক্ষে সবই সম্ভব।

উঃ প্রশ্নোক্ত কথাটা দ্বারা নবাব আত্মীয় পরিজনদের বিশ্বাসঘাতকতা বুঝিয়েছেন।

৬৬। শুধু ওই একটি পথেই আবার আমরা উভয়ে উভয়ের কাছাকাছি আসতে পারি ।

উঃ এখানে দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য নবাব সবাইকে আবার এক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

৬৭। নবাব সিরাজউদ্দৌলা কেন মিরজাফর চক্রকে বন্দী করেননি?

উঃ বাইরের শত্রুকে আগে দমন করে পরে বিশ্বাস ঘাতকচক্রকে শাস্তি দিতে ছেয়েছিলেন নবাব । তাই কৌশলগত কারণে নবাব মিরজাফরচক্রকে বন্দি করেন নি ।

৬৮। আমি নিস্তব্ধ হয়েছি অগ্নিগিরির মতো প্রচণ্ড গর্জনে ফেটে পড়বার জন্যে তৈরি হচ্ছি।

উ: প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে মিরজাফর কথাটি বলেছেন। ৬৯। বুকের ভেতর আকাঙ্ক্ষার আর অধিকারের লাভা টগবগ করে ফুটে উঠছে ঘৃণা আর বিদ্বেষের অসহ্য উত্তাপে। মিরজাফরের প্রবল ক্ষমতাকাঙ্ক্ষা।

৭০। ‘আমাদের কারও অদৃষ্ট মেঘমুক্ত থাকবে না শেঠজি।'- মিরজাফরের এ উক্তির মধ্যে সবারই বিপদাশঙ্কা ব্যক্ত হয়েছে।

৭১। ‘আজ আমরা সবাই সন্দেহ-দোলায় দুলছি। কেউ কাউকে বিশ্বাস করতে পারছিনে।'- মিরজাফরের এ উক্তিতে পারস্পরিক আস্থাহীনতা প্রকাশ পেয়েছে

৭২। একটা দিন, মাত্র একটা দিনও যদি ওই মসনদে মাথা উঁচু করে বসতে পারতাম?

উঃ প্রশ্নোক্ত বাক্যটিতে সিরাজকে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে সরিয়ে দিয়ে মিরজাফরের সিংহাসনে বসার উচ্চাকাঙ্ক্ষা প্রকাশ পেয়েছে।

৭৩। 'চারিদিকে শুধু অবিশ্বাস আর ষড়যন্ত্র। এর ভেতরে কর্তব্য স্থির করাই দায় হয়ে উঠেছে।'- রায়দুর্লভের এ উক্তিতে পারস্পরিক আস্থাহীনতার কারণে মানসিক অস্থিরতা প্রকাশ পেয়েছে।

৭৪। ‘সবাই উচ্চাভিলাষী। সবাই সুযোগ খুঁজছে।'- রায়দুর্লভ সম্পর্কে রাজবল্লভের এ উক্তি ।

৭৫। 'রমণীর ছদ্মবেশে' মিরনের আবাসে এলেন- রবার্ট ক্লাইভ ও ওয়াটস

৭৬। নবাব কে আমার ভয় নেই, কারণ সে আমার কিছুই করতে পারবে না ।

উঃ নবাবের প্রায় সকল সভাসদ যখন ক্লাইভকে সহযোগিতা করছে তখন নবাবকে ক্লাইভের কোনো ভয় থাকে না।

৭৭। ওরা বেনিয়ার জাত। পয়সা ছাড়া কিছু বোঝেনা ।

উঃ ইংরেজদের অর্থলিপ্সার কথা বোঝাতেই রাজবল্লভ মিরজাফরকে আলোচ্য কথাটি বলে।

৭৮। মিরজাফর উমিচাঁদকে কালকেউটে বলেছেন কেন?

উঃ উর্মিচাঁদ অর্থছাড়া আর কিছুই বোঝেন না। অর্থের জন্য তিনি দুপক্ষের সঙ্গেই যোগাযোগ রাখতেন। তাই তার ধূর্ততার জন্য কালকেউটে বলেছেন । 

৭৯। 'তোমরা বড় বেহায়া।'— ইংরেজরা কলকাতায় নবাবের কাছে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হওয়া সত্ত্বেও যখন ক্ষমতার বড়াই করে তখন জগৎশেঠ ক্লাইভকে উদ্দেশ্য করে কথাটা বলেন।

৮০। ‘আজ নবাবকে ডোবাচ্ছেন,কাল আমাদের পথে বসাবেন না তা কি বিশ্বাস করা যায়?'- নবাবের আস্থাভাজনরা যখন সবাই নবাবের বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতায় লিপ্ত তখন ইংরেজদের সাথেও তারা বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারেন এমন আশঙ্কার কথা বলেছেন ক্লাইভ। 

৮১। ‘আমি বরং নবাবকে বিশ্বাস করতে পারি - মিরজাফরচক্রের সাথে কথা প্রসঙ্গে ক্লাইভ এ কথা বলেন।

৮২। 'উমিচাঁদ এ যুগের সেরা বিশ্বাসঘাতক।'- উমিচাঁদের স্বার্থান্ধতার পরিচয় পেয়ে ক্লাইভ কথাটা বলেছেন।

৮৩। ‘আসল ও নকল দলিলে' প্রধান্য পেয়েছে- আর্থিক বিষয়।

৮৪। ‘এই দলিল অনুসারে সিপাহসালার শুধু মসনদে বসবেন কিন্তু রাজ্য চালাবেন কোম্পানি।'- কথাটিতে প্রকাশ পায় রাজবল্লভের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ।

৮৫। ‘কিন্তু দেশের শাসন ক্ষমতায় আপনারা হাত দেবেন এ তো ভালো কথা নয়।'- সিরাজের প্রতি ঘৃণা, বিদ্বেষভাব পোষণ থেকে তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরাতে আগ্রহী হলেও জগৎশেঠ শাসনব্যবস্থায় ইংরেজদের হস্তক্ষেপ মেনে নিতে পারেন না।

৮৬। ‘শুভকাজে অযথা বিলম্ব করা বুদ্ধিমানের কাজ নয়।'- মিরজাফরের স্বার্থান্ধতা ।

৮৭। ‘বুকের ভেতর হঠাৎ যেন কেঁপে উঠল। বাইরে কোথাও মরাকান্না শুনতে পাচ্ছেন শেঠজি?'- ক্ষমতার মোহে অন্ধ হলেও বাংলার সার্বভৌমত্ব বিদেশি শক্তির নিকট হস্তান্তওের বিবেকের যেন সাঁয় নেই। তাই বিবেকের ক্রন্দনই যেন মিরজাফরের নিকট বাইরে মরাকান্না বলে মনে হয়।

৮৮। ‘আমরা এমন কিছু করলাম যা ইতিহাস হবে।'- মিরজাফরচক্র সংকীর্ণ স্বার্থ চরিতার্থ করতে ইংরেজদের সাথে গোপন চুক্তি করে যে চুক্তির কারণে পরাধীনতার পথ সুগম হয় এবং দীর্ঘকাল পাকভারতকে পরাধীনতার জালে আবদ্ধ হতে হয়। এই চুক্তির পর ক্লাইভ উৎফুল্ল হয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ এ উক্তিটি করেন।

৮৯। সিরাজের বিরুদ্ধে ঘষেটি বেগমের আক্রোশের কারণ- রাজনৈতিক প্রাধাণ্য লাভের দুর্বার আকাঙ্ক্ষা। 

৯০। রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ গোলযোগের সময়ে কোনো ক্ষমতাভিলাষী, স্বার্থপরায়ণ নারীর পক্ষে রাজনীতির সঙ্গে যোগাযোগ রাখা দেশের পক্ষে অকল্যাণকর।’- ঘষেটি বেগম সম্পর্কে এ মন্তব্য নবাবের।

৯১। ওর কাছে সব কিছুই যেন বড় রকমের জুয়ো খেলা।

উঃ ক্লাইভের কাছে সবকিছুই যেন বড় রকমের জুয়ো খেলা। কারণ তার মতলব হাসিল করার জন্য যেকোনো অবস্থার ভেতর ঝাঁপিয়ে পড়তে পারেন।

৯২। সবই মিলে সত্যিই আমরা বাংলাকে বিক্রি করে দিচ্ছি না তো?

উঃ নবাবকে ক্ষমতা থেকে উৎখাতের চূড়ান্ত ষড়যন্ত্র করে চক্রান্তকারী মিরজাফর যখন ক্লাইভের সাথে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করতে যান তখন তার সাময়িক আত্ম-উপলদ্ধি ও দেশপ্রেমের আবেগ জাগ্রত হলে মিরজাফর এ কথা বলে।

৯৩। শুভ কাজে অযথা বিলম্ব করা বুদ্ধিমানের কাজ নয় ।

উঃ প্রশ্নোক্ত কথাটি মিরজাফর ইংরেজদের সঙ্গে ক্ষমতা ভাগাভাগির দলিলে দস্তখত করা প্রসঙ্গে বলেছেন।

৯৪। অমার সারা অস্তিত্ব জুড়ে কেবল যেন দেয়ালের ভিড়। 

উঃ বাংলার নবাব হওয়ার পর থেকেই সিরাজউদ্দৌলা তার নিকট আত্নীয়স্বজন দ্বারা ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন। বারবার ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে ক্লান্ত সিরাজ কথাটি বলেছেন।

৯৫। ‘মসনদে বসবার পর থেকে প্রতিটি মুহূর্ত যেন দুপায়ের দশ আঙুলের ওপর ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে আছি।'- একনিষ্ঠতা বোঝানো হয়েছে।

৯৬। তারা শৃঙ্খলা জানে, শাসন মেনে চলে।'— ইংরেজ জাতি সম্পর্কে প্রচলিত ধারণা ব্যক্ত করেন নবাব । 

৯৭। ‘যেন নিশ্চিন্তে আত্মীয় বাড়ি যাচ্ছে।'- যুদ্ধের আগের রাতে নবাব সার্বিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করতে গিয়ে মিরজাফরের বাহিনী কীভাবে ক্লাইভের সাথে বিনা বাধায় মিলিত হবে সে প্রসঙ্গে কথাটা বলেছেন।

৯৮। মিরজাফরের সমস্ত কুকীর্তির কথা জানতে পারা সত্ত্বেও নবাব যুদ্ধের সর্বময় কর্তৃত্ব সিপাহশালার মিরজাফরের হাতে ন্যাস্ত করেন— যুদ্ধক্ষেত্রে সেনাবাহিনীতে অভ্যন্তরীণ গোলযোগ এড়াবার জন্য ।

৯৯। নবাব সিরাজউদ্দৌলা শেষ পর্যন্ত ভরসা রাখতে চান— যদি স্বাধীনতার চিহ্ন মুছে যাচ্ছে দেখে মিরজাফরচক্রের মধ্যে দেশপ্রীতি জেগে ওঠে!

১০০ । সাফ্রের বর্ণনায় 'নবাবের বিরাট সেনাবাহিনী দাঁড়িয়ে আছে ‘স্টান্ডিং লাইক পিলার্স' ।

১০১। শ্রেষ্ঠ বাঙালি বীর যুদ্ধে শহিদ হয়েছে।'- মিরমদান সম্পর্কে সিরাজের উক্তি ।

১০২। ‘আত্মাভিমানের সময় নেই।'- যুদ্ধে পরাজয় নিশ্চিত হয়েছে দেখে মোহনলাল নবাবকে রাজধানীতে ফিওে শক্তি সঞ্চয়ের তাগিদ দিয়ে এ কথা বলেন। 

১০৩। এ দেশে থেকে এ দেশকে ভালোবেসেছি। গুপ্তচরের কাজ করেছি দেশের স্বাধীনতার খাতিরে। সে কি বেইমানির চেয়ে খারাপ? মোনাফেকির চেয়ে খারাপ?'- উক্তিটি রাইসুল জুহালা ওরফে নারান সিঙের।

১০৪। পেছন থেকে আক্রমণ করবার সুযোগ দিলে মৃত্যুর হাত থেকে পালানো যায় না।'- পলায়নপর ভীতসন্ত্রস্ত জনগণকে পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করে না পালিয়ে লড়াই করার জন্য সংগঠিত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে নবাব এ কথা বলেন।

১০৫।‘ভীরু প্রতারকের দল চিরকালই পালায়।'- সেনাবাহিনী সংগঠনের প্রতিশ্রুত দিয়ে নবাবের নিকট থেকে যারা অর্থ নিয়েছে অথচ পওে তারা যখন পালিয়ে যাচ্ছে বলে নবাব জানতে পারেন তখন এ কথা বলেন।

১০৬। ‘স্বার্থন্ধ প্রতারকের কাপুরুষতা বীরের সংকল্প টলাতে পারে না।'- স্বার্থান্ধ প্রতারকচক্রের বিপরীতে দেশপ্রেমিক মিরমদান, মোহনলাল প্রমুখের বীরত্বের তুলনা করতে গিয়ে নবাব এ কথা বলেন।

১০৭। ‘অস্ত্র আমাদের আছে, কিন্তু তার চেয়ে যা বড়, সবচেয়ে যা বড় আমাদের আছে সেই দেশপ্রেম এবং স্বাধীনতা রক্ষার সংকল্প। এই অস্ত্র নিয়ে আমরা কাপুরুষ দেশদ্রোহীদের অবশ্যই দমন করতে পারব।'- জনগণকে উজ্জীবিত করতে সিরাজ এভাবে আহ্বান জানান।

১০৮। ‘এখন কিছু দিন তীর্থ কর— ঈশ্বরকে ডাক। মন ভালো হবে।'- কূটকৌশলী ক্লাইভ প্রতারিত উমিচাঁদকে এ কথা বলেন।

১০৯। ‘আমি আশা করি কেউ তার জন্য সহানুভূতি দেখিয়ে নিজের বিপদ ডেকে আনবেন না।'- সিরাজের প্রতি কেউ যাতে অনুকম্পা না দেখায় সে দিকে সতর্ক করে মির জাফর সভাসদকে এ কথা বলেন।

১১০। তোমার প্রাণ বিপন্ন হবে অথচ স্বাধীনতা রক্ষা হবে না। উঃ পলাশির যুদ্ধের আগের দিন মিরমদান নবাবের কাছে প্রানপন লড়াই করার প্রতিশ্রুতি দিলে নবাব দুঃখভারাক্রান্ত মনে আলোচ্য উক্তিটি করেন।

১১১ । পলাশির যুদ্ধে নবাবের পরাজয় হয়েছিল কেন?

উঃ পলাশির যুদ্ধে নবাবের কতিপয় আত্মীয় এবং অমাত্যবর্গের ষড়যন্ত্রের কারনে তার পরাজয় হয়েছিল। ১১২। মিরজাফরদের সেনাবাহিনীকে নবাব কেন যুদ্ধে নিয়ে আসেন?

উঃ মিরজাফর যাতে নবাবের অনুপস্থিতিতে রাজধানী দখল করতে না পারেন সে জন্যই তার সেনাবাহিনীকে যুদ্ধে এনেছিলেন।

১১৪। তোমাদের অপরাধের জন্য নবাবের দণ্ডাজ্ঞা শোনাতে এসেছি।'- সিরাজকে হত্যার জন্য চক্রান্তকারী ক্লাইভের পরামর্শে মিরন নবাবের কাছে মিথ্যা দণ্ডাজ্ঞা শোনাতে এসে ‘নাবব' বলতে তার বাবা মিরজাফরকে বুঝিয়েছে । 

১১৫। সাহিত্যে ঐতিহাসিকতা' প্রবন্ধের রচয়িতা- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

১১৬।বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সামন্ত শ্রেণির প্রতিনিধি হয়েও তিনি হয়ে উঠেছেন— স্বাধীনতাকামী মানুষের চিরায়ত আইকন

১১৭। সিরাজের পক্ষে কুচক্রীদের ষড়যন্ত্রজাল ছিন্ন করা সম্ভব হয় নি- অপরিণত বয়সের কারণে 

১১৮।সিরাজউদ্দৌলাকে নতুন রূপে আবিষ্কারের পেছনে সিকান্দার আবু জাফরের উদ্দেশ্য— নতুন মূল্যবোধের তাগিদ,ইতিহাসের ভ্রান্তিমোচন ও প্রেরণার উৎস নির্ণয় 

১১৯। সিকান্দার আবু জাফর নির্মিত সিরাজ মূলত- স্বাধীনতাকামী জনমানুষের মুক্তির কণ্ঠস্বর 

১২০।'সিরাজউদ্দৌলা' নাটক— করুণ রসাত্মক 

১২১। নিয়তিবাদ কোন নাটকের প্রতিপাদ্য- গ্রিক ট্রাজেডি 

১২২।নায়কের বিবেচনাগত ভুল কোন নাটকের প্রতিপাদ্য- শেক্সপিয়রীয় ট্রাজেডি

১২৪। মরণাপন্ন মোগল সম্রাট ফররুখ শিয়রকে সুস্থ করে তোলেন— ইংরেজ ডাক্তার হ্যামিল্টন

১২৫। সিরাজ চরিত্রকে অসামান্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে— জনসম্পৃক্ততা

১২৬।ভাস্কর পণ্ডিত ছিলেন- বর্গি প্রধান

১২৭। ক্লাইভের গাধা' বলে পরিচিত ছিলেন- মির জাফর


নাটক: সিরাজউদ্দৌলা গুরুত্বপূর্ণ জ্ঞানমূলক প্রশ্ন

১। সিকান্দার আবু জাফর কত সালে জন্মগ্রহণ করেন? উত্তর: ১৯১৮ সালে।

২। সিকান্দার আবু জাফর কোথায় জন্মগ্রহণ করেন? উত্তর: সাতক্ষীরা জেলায়।

৩। কোন স্কুল থেকে সিকান্দার আবু জাফর এন্ট্রান্স পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন?

উত্তর: তালা বি.ডি ইংরেজি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে।

৪। সিকান্দার আবু জাফর কবি কাজী নজরুল ইসলামের কোন পত্রিকার সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন? উত্তর: ‘দৈনিক নবযুগ'।

৫। সিকান্দার আবু জাফর কোন সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন?

উত্তর: ‘সমকাল'।

৬। মুক্তিযুদ্ধের সময় সিকান্দার আবু জাফরের সম্পাদনায় কোন পত্রিকা প্রকাশিত হয়?

উত্তর: ‘সাপ্তাহিক অভিযান'।

৭। সিকান্দার আবু জাফর কবে মারা যান?

উত্তর: ১৯৭৫ সালের ৫ই আগস্ট।

৮। সিরাজউদ্দৌলা ট্র্যাজিক ইতিহাস নিয়ে প্রথম নাটক রচনা করেন কে?

উত্তর: গিরিশচন্দ্র ঘোষ ।

৯। ‘সিরাজউদ্দৌলা' নাটকে কয়টি অঙ্ক আছে?

উত্তর: চারটি।

১০। কত সালে পলাশী যুদ্ধ সংঘটিত হয়?

উত্তর: ১৭৫৭ সালে।

১১। ক্লেটন কাকে বেঈমান বলে থামিয়ে দেয়?

উত্তর: ওয়ালী খানকে।

১২। কে ইংরেজদের হয়ে যুদ্ধ করেছেন কোম্পানির টাকার জন্য?

উত্তর: ওয়ালী খান।

১৩। জর্জ হলওয়েল কার পতনের সংবাদ ক্যাপ্টেন ক্লেটনের কাছে পৌঁছে দেন?

উত্তর: এনসাইন পিকার্ডের।

১৪। নবাব সৈন্যরা কোন ছাউনী ছারখার করে দিয়েছে? উত্তর: পেরিন্স পয়েন্টের ছাউনী।

১৫ । কে নবাব ছাউনীতে খবর পাঠিয়েছে?

উত্তর: উমিচাঁদের গুপ্তচর।

১৬। কারা শিয়ালদহের মারাঠা খাল পেরিয়ে বন্যার স্রোতের মতো ছুটে আসছিল?

উত্তর: নবাবের গোলন্দাজ বাহিনী।

১৭। কে গভর্নর রজার ড্রেকের সাথে পরামর্শ করে

আত্মসমর্পনের কথা বলেন?

উত্তর: হলওয়েল।

১৮। নবাব সিরাজউদ্দৌলার সেনাধ্যক্ষ কে ছিলেন?

উত্তর: রাজা মানিকচাঁদ।

১৯। কে গভর্নর ড্রেকের ধ্বংস দেখতে চান?

উত্তর: উমিচাঁদ।

২০। ব্রিটিশ পক্ষে কে যুদ্ধ করে জীবন দিতে প্রতীজ্ঞা করেছিল?

উত্তর: ক্যাপ্টেন ক্লেটন।

২১। ‘বৃটিশ সিংহ ভয়ে লেজ গুটিয়ে নিলেন এ বড় লজ্জার কথা।'-এ সংলাপটি কার?

উত্তর: উমিচাঁদের।

২২। জর্জ হলওয়েল যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য কাকে নবাব শিবিরে চিঠি পাঠাতে বলেন?

উত্তর: উমিচাঁদকে।

২৩। উমিচাঁদ জর্জ হলওয়েলকে দুর্গ প্রাচীরে কী রঙের নিশান উড়িয়ে দিতে বলেন?

উত্তর: সাদা রঙের।

২৪। কারা গঙ্গার দিকটার ফটক ভেঙ্গে পালিয়ে গেছে? উত্তর: একদল ডাচ সৈন্য।

২৫ । কে হলওয়েলকে কোম্পানির ঘুষখোর ডাক্তার বলেছেন? উত্তর: নবাব সিরাজউদ্দৌলা।

২৬। ‘বাঙলার বুকে দাঁড়িয়ে বাঙালির বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরার স্পর্ধা ইংরেজ পেলো কোথা থেকে আমি তার কৈফিয়ত চাই ।'-এ সংলাপটি কার?

উত্তর: নবাব সিরাজউদ্দৌলার।

২৭। ইংরেজরা কোথায় গোপনে অস্ত্র আমদানি করেছিল? উত্তর: কাশিমবাজার কুঠিতে।

২৮। ওয়াটসন নবাবের অভিযোগগুলো কার কাছে পেশ করবে?

উত্তর: কাউন্সিলের কাছে।

২৯। নবাব কাদের ধৃষ্টতার জন্য তাদের বাণিজ্য করার অধিকার প্রত্যাহার করে?

উত্তর: ইংরেজদের ধৃষ্টতা

৩০। কে ইংরেজদের এদেশে বাণিজ্য করার অনুমতি দিয়েছে?

উত্তর: নবাব আলীবর্দী খাঁন ।

৩১। মাদ্রাজে বসে ক্লাইভ লন্ডনের কোন কমিটির সাথে পত্রালাপ করে?

উত্তর: 'Secret Committee' র সাথে।

৩২। সিরাজের বিরুদ্ধে ইংরেজ পক্ষ কোথায় বসে ষড়যন্ত্র করেছে?

উত্তর: ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গে।

৩৩। সিরাজ কার বাড়ি কামানের গোলায় রায়দুর্লভকে উড়িয়ে দিতে বললেন?

উত্তর: গভর্নর ড্রেকের।

৩৪। সিরাজ রায়দুর্লভকে কোথায় আগুন ধরিয়ে দিতে নির্দেশ দিলেন?

উত্তর: গোটা ফিরিঙ্গি পাড়ায়।

৩৫ । নবাব কাদের কাছে সওদা বিক্রি করতে দোকানদারদের নিষেধ করেছেন?

উত্তর: ইংরেজদের কাছে ।

৩৬। নবাব কাকে কোম্পানি ও প্রত্যেকটি ইংরেজদের ব্যক্তিগত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেন?

উত্তর: রায়দুর্লভকে।

৩৭। নবাব কোথায় মসজিদ তৈরির নির্দেশ দেন? উত্তর: নাসারার দুর্গে।

৩৮। উমিচাঁদ কার মুক্তির জন্য সিরাজের কাছে অনুরোধ করেন?

উত্তর: কৃষ্ণবল্লভের ।

৩৯। সিরাজ কোথায় ফিরে গিয়ে বন্দিদের বিচার করবে? উত্তর: মুর্শিদাবাদে।

৪০। সিরাজ কোথা থেকে ইংরেজদের বিতাড়িত করেন? উত্তর: কলকাতা থেকে ।

৪১। ‘অদৃষ্টের পরিহাস তাই ভুল করেছিলাম।' সংলাপটি কার?

উত্তর: ঘসেটি বেগমের ।

৪২। কলকাতা থেকে তাড়া খেয়ে ড্রেক, হ্যারী, মার্টিনরা কোথায় আশ্রয় নিয়েছে?

উত্তর: ফোর্ট উইলিয়াম জাহাজে আশ্রয় নিয়েছে।

৪৩ । কিলপাট্রিক কোথা থেকে ফিরে এসেছে?

উত্তর: মাদ্রাজ থেকে।

৪৪। পলাশী কোন নদীর তীরে অবস্থিত?

উত্তর: ভাগীরথী নদীর তীরে।

৪৫। কিলপাট্রিক কতজন সৈন্য নিয়ে জাহাজে হাজির হয়েছেন?

উত্তর: ২৫০ জন।

৪৬। ইংরেজদের মূল দামের চেয়ে কতগুণ বেশি দামে জিনিসপত্র কিনতে হয়?

উত্তর: চারগুণ।

৪৭। কার হটকারিতার জন্য ইংরেজ সৈন্যদের দুর্ভোগ? উত্তর: ড্রেকের।

৪৮। কিলপাট্রিক এবং মার্টিন কোম্পানির কত টাকা বেতনের কর্মচারী ছিল?

উত্তর: সত্তর টাকা ।

৪৯। ‘ঘুষ খেয়ে খেয়ে ঘুষ কথাটার অর্থ বদলে গেছে আপনার

কাছে’–এ সংলাপটি কার?

উত্তর: মার্টিনের।

৫০ । কে কলকাতার দেওয়ান মানিকচাঁদকে হাত করেছে? উত্তর: উমিচাঁদ।

৫১। ভাগীরথী নদীর দু পাশে কোন জিনিস ছিল?

উত্তর: ঘনজঙ্গল ছিল।

৫২। হলওয়েল অনুমতি পেলে জঙ্গল কেটে কী বসানোর কথা বলে?

উত্তর: হাট-বাজার।

৫৩ । কারা ইংরেজদের সাথে ব্যবসা করতে চায়?

উত্তর: নেটিভরা।

৫৪। কে চিরকালই ইংরেজদের বন্ধু?

উত্তর: ড্রেক।

৫৫। কে ইংরেজদের কলকাতায় ব্যবসা করার অনুমতি দিয়েছে?

উত্তর: মানিকচাঁদ।

৫৬। কত টাকা উৎকোচের বিনিময়ে মানিকচাঁদ ইংরেজদের কলকাতায় ব্যবসার অনুমতি দেন?

উত্তর: ১২,০০০ টাকার বিনিময়ে।

৫৭। ড্রেক কোথা থেকে বাংলাদেশে এসেছে? উত্তর: লাহোর থেকে ।

৫৮। মানিকচাঁদের কাছে ব্যবসার অনুমতি নেবার জন্য উমিচাঁদ কত টাকা ড্রেকের কাছে দাবি করে?

উত্তর: ১৭,০০০ টাকা ।

৫৯ । কে নবাব হলে সকলের উদ্দেশ্যই হাসিল হবে? উত্তর: শওকতজঙ্গ ।

৬০। ঘসেটি বেগম কাকে অচেনা মেহমান বলেছে? উত্তর: রাইসুল জুহালাকে

৬১। কে নিজের স্বার্থ নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত বিপদের ঝুঁকি নিতে নারাজ?

উত্তর: জগৎশেঠ।

৬২। ঘসেটি বেগম কাকে ধনকুবের বলেছে ?

উত্তর: জগৎশেঠকে ।

৬৩। সিরাজের মতে, চারিদিকে ষড়যন্ত্রের জালের মধ্যে কার প্রাসাদের বাইরে থাকাটা নিরাপদ নয়?

উত্তর: ঘসেটি বেগমের ।

৬৪। কী অমান্য করা রাজদ্রোহিতার শামিল? উত্তর: নবাবের হুকুম অমান্য করা।

৬৫। কে নবাবের সবচেয়ে বিশ্বস্ত সেনাপতি? উত্তর: মোহনলাল ।

৬৬। ঘসেটি বেগম সম্পর্কে নবাবের কী হতেন?

উত্তর: খালা হতেন ৷

৬৭। নবাব কার কাছে প্রজাদের জুলুমের জন্য কৈফিয়ৎ চেয়েছে?

উত্তর: ওয়াটসনের কাছে ।

৬৮। লবণের ইজারদার কে?

উত্তর: কুঠিয়াল ইংরেজ ।

৬৯। কলকাতায় ওয়াটস এবং ক্লাইভ কীসের সন্ধি গোপন করেছে?

উত্তর: আলীনগরের সন্ধি ।

৭০। দেশের স্বার্থের জন্য নিজেদের স্বার্থ তুচ্ছ করে আমরা নবাবের আজ্ঞাবহ হয়েই থাকব।'-এ সংলাপটি কার?

উত্তর: মিরজাফরের।

৭১ । মিরজাফর কোন জিনিসটি ছুঁয়ে প্রতিজ্ঞা করেছিল? উত্তর: কোরআন শরীফ।

৭২। কে অগ্নিগিরির মতো প্রচণ্ড গর্জনে ফেটে পড়ার জন্য তৈরি হচ্ছে?

উত্তর: মিরজাফর।

৭৩। মোহনলাল তলোয়ার নিয়ে সামনে দাঁড়ালে কার চোখে কেয়ামতের ছবি ভেসে ওঠে ছিল?

উত্তর: মিরজাফরের।

৭৪। মানিকচাঁদ কত টাকা খেসারত দিয়ে মুক্তি পেয়েছিল? উত্তর: দশলক্ষ টাকা ।

৭৫। জগৎশেঠের মতে, কার অদৃষ্টে বিপদ ঘনিয়ে এসেছে? উত্তর: নন্দকুমারের।

৭৬। কার একটি দিন মাত্র মসনদে বসবার বড় আকাঙ্ক্ষা? উত্তর: মিরজাফরের।

৭৭। কার গুপ্তচর মিরনের জীবনকে অসম্ভব করে তুলেছিল? উত্তর: মোহনলালের গুপ্তচর।

৭৮ । কে নাচগানে মশগুল থাকতেই ভালোবাসে? উত্তর: মিরন।

৭৯ । কার অনুপস্থিতির জন্য কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি সম্ভব নয়? উত্তর: উমিচাঁদের।

৮০। মিরজাফর কাকে কালকেউটে বলেছে?

উত্তর: উমিচাঁদকে।

৮১। ‘নবাবকে আমার কোনো ভয় নেই। কারণ সে আমাকে কিছুই করতে পারবে না।'- সংলাপটি কার?

উত্তর: রবার্ট ক্লাইভের ।

৮২। ‘আজ নবাবকে ডোবাচ্ছেন, কাল আমাদের পথে বসাবেন না তা কি বিশ্বাস করা যায়।'- সংলাপটি কার?

উত্তর: রবার্ট ক্লাইভের।

৮৩। চুক্তি অনুযায়ী সিরাজউদ্দৌলার পতন হলে কোম্পানি কত টাকা পাবে?

উত্তর: এক কোটি টাকা।

৮৪। চুক্তি অনুযায়ী ক্লাইভ কত টাকা পাবে?

উত্তর: দশ লক্ষ টাকা ।

৮৫। চুক্তি অনুযায়ী কলকাতার বাসিন্দারা ক্ষতিপূরণ বাবদ কত টাকা পাবেন?

উত্তর: সত্তর লক্ষ টাকা ।

৮৬। সন্ধি অনুযায়ী মিরজাফর মসনদে বসলেও রাজ্য চালাবে কে?

উত্তর: কোম্পানি। 

৮৭। আমরা এমন কিছু করলাম যা ইতিহাস হবে।' সংলাপটি কার ?

উত্তর: রবার্ট ক্লাইভের ।

৮৮। সিরাজউদ্দৌলার স্ত্রীর নাম কী?

উত্তর: লুৎফুন্নিসা ।

৮৯। সিরাজউদ্দৌলার মায়ের নাম কী?

উত্তর: আমিনা বেগম ৷

৯০। সিরাজউদ্দৌলা কার কাছ থেকে টাকা ধার নিয়েছিল?

উত্তর: ঘসেটি বেগমের কাছ থেকে।

৯১। সিরাজকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারলে কে সবচেয়ে বেশি খুশি হবে?

উত্তর: ঘসেটি বেগম।

৯২। পলাশীর যুদ্ধে ইংরেজদের পক্ষে কত সৈন্য ছিল? 

উত্তর: তিন হাজার সৈন্য ।

৯৩। পলাশীর যুদ্ধে নবাবের পক্ষে কতজন সৈন্য ছিল? 

উত্তর: পঞ্চাশ হাজার ।

৯৪। পলাশীর যুদ্ধে ইংরেজদের কামান ছিল কতটি?

উত্তর: আটটি।

৯৫। পলাশীর যুদ্ধে নবাবের কামান ছিল কতটি? 

উত্তর: ৫৩ টি।

৯৬। নবাবের মতে, কার কাছে সবকিছু যেন বড় রকমের জুয়া খেলা?

উত্তর: ক্লাইভের কাছে।

৯৭। মোহনলাল কোথায় ফিরে সিরাজকে নতুন করে আত্মরক্ষার প্রস্তুতি নিতে বলে? 

উত্তর: মুর্শিদাবাদে ফিরে।

৯৮। কার শেষ যুদ্ধ পলাশীতেই? উত্তর: মোহনলালের।

৯৯। সিরাজউদ্দৌলার প্রধান গুপ্তচর কে ছিলেন? 

উত্তর: নারান সিং ওরফে রাইসুল জোহালা।

১০০। সিরাজের মতে, কার হাতে রাজধানীর পতন হলে এদেশের স্বাধীনতা চিরকালের মতো লুপ্ত হয়ে যাবে? 

উত্তর: ক্লাইভের হাতে।

১০১। সিরাজউদ্দৌলার নানার নাম কী?

উত্তর: আলীবর্দী খাঁন ।

১০২। সিরাজের শ্বশুরের নাম কী?

উত্তর: মহম্মদ ইরিচ খাঁ।

১০৩ । দরবার কাকে কুর্নিশ করবার জন্য অধৈর্য হয়ে অপেক্ষা করছে?

উত্তর: মিরজাফরকে।

১০৪। কে মিরজাফরকে হাত ধরে তুলে না দিলে মসনদে বসবে না?

উত্তর: রবার্ট ক্লাইভ।

১০৫। মিরজাফর বাংলার মসনদের জন্য কার কাছে ঋণী? 

উত্তর: রবার্ট ক্লাইভের কাছে।

১০৬। ‘সিরাজউদ্দৌলা' নাটকে কে আত্মহত্যা করতে চায়? 

উত্তর: উমিচাঁদ।

১০৭। ২৪ পরগনার মোট কত টাকা বার্ষিক জমিদারী আয় হতো?

উত্তর: চার লক্ষ টাকার।

১০৮। সিরাজউদ্দৌলা কার সৈন্যদের হাতে বন্দি হয়েছেন ?

উত্তর: মির কাশেমের।

১০৯। সিরাজউদ্দৌলা কোথায় বন্দি হয়েছেন?

উত্তর: ভগবান গোলায় ।

১১০। বন্দি সিরাজউদ্দৌলাকে কোন কয়েকদখানায় রাখা হয়?

উত্তর: জাফরগঞ্জের কয়েদখানায়।

১১১। কার নির্দেশে সিরাজউদ্দৌলাকে হত্যা করা হয়?

উত্তর: মিরনের নির্দেশে।

১১২। কে সিরাজউদ্দৌলাকে হত্যা করে?

উত্তর: মোহাম্মদি বেগ ।

১১৩। কত টাকার বিনিময়ে মোহাম্মদি বেগ সিরাজকে হত্যা করে?

উত্তর: দশ হাজার টাকা।

১১৪। কী দিয়ে সিরাজউদ্দৌলাকে হত্যা করা হয়? 

উত্তর: ছুরিকাঘাতে।

১১৫। সিরাজউদ্দৌলা কোন জাতীয় নাটক?

উত্তর: ঐতিহাসিক নাটক ।

১১৬। মিরজাফরের দরবারে আসতে বিলম্ব দেখে অমাত্যরা কীসে লিপ্ত ছিল?

উত্তর: কৌতুকে ।

১১৭। ড্রেক কাকে কয়েদখানায় বন্দির হুমকি দেয়?

উত্তর: মার্টিনকে।

১১৮। ঘসেটি বেগম আমেনা বেগমের কোন পুত্রকে পোষ্যপুত্র রাখেন?

উত্তর: এক্রাম-উ-দ্দৌলাকে।

১১৯। সিরাজউদ্দৌলা কার পরামর্শে কোম্পানিকে লবণের ইজারদারী দিয়েছে?

উত্তর: মিরজাফরের পরামর্শে।

১২০। নৃত্য গীতের অভিনয়ে পটু ছিলেন কে ?

উত্তর: মিরন।

১২১। মিরন কাকে নৃত্য গীতের অভিনয়ে বিভ্রান্ত করতে চায়? 

উত্তর: মোহনলালকে ৷

১২২। কোন রোগে এক্রাম উ-দ্দৌলার মৃত্যু হয়?

উত্তর: বসন্ত রোগে ।

১২৩। রবার্ট ক্লাইভ কত বছর বয়সে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিতে চাকরি পান?

উত্তর: ১৭ বছর বয়সে।

১২৪। সাঁফ্রে কে ছিলেন?

উত্তর: পলাশীর যুদ্ধে নবাবের পক্ষে অংশগ্রহণকারী ফরাসি সেনাপতি।

১২৫। নবাব কলকাতা শহরের নতুন নাম দিয়েছিলেন কী? 

উত্তর: আলিনগর।

১২৬। ঘসেটি বেগম কোন প্রাসাদে বসবাস করতেন?

উত্তর: মতিঝিল।

১২৭। ওয়াটস ও ক্লাইভ কীভাবে মিরজাফরের গোপন সভায় যোগ দিয়েছিলেন?

উত্তর: ছদ্মবেশে।

১২৮। জগৎশেঠ কার উপাধি?

উত্তর: ফতেহচাঁদের।

১২৯। কোম্পানির ঘোষখোর ডাক্তার কে?

উত্তর: হলওয়েল।

১৩০। গভর্নরকে পালাতে দেখে একজন সৈন্য কী করেছিল? 

উত্তর: গুলি ছুঁড়েছিল।

১৩১। কে ইংরেজদের সাহায্য করার জন্য প্রস্তাব পাঠিয়েছিল?

উত্তর: উমিচাঁদ।

১৩২। পত্র মারফত শওকতজঙ্গকে কে পূর্ণ সমর্থন করেছিল? 

উত্তর: মিরজাফর।

১৩৩। কার গুপ্তচর ভুল সংবাদ দেয় না?

উত্তর: মোহনলালের।

১৩৪। নবাবের সারা অস্তিত্ব জুড়ে কেবল কী রয়েছে?

উত্তর: দেয়ালের ভিড় রয়েছে।

১৩৫। সিরাজউদ্দৌলার সর্বশেষ কথা কী ছিল?

উত্তর: লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ।

১৩৬। রবার্ট ক্লাইভ কাকে সেরা বিশ্বাসঘাতক বলেছে? 

উত্তর: উমিচাঁদকে।

১৩৭। তোমরা আছ বলেই বেঁচে থাকতে ভালো লাগে'-এ কথা কে বলেছে?

উত্তর: মিরন।

১৩৮। পলাশীর যুদ্ধ কবে সংঘটিত হয়?

উত্তর: ১৭৫৭ সালের ২৩শে জুন।

১৩৯। নবাবের সবচেয়ে বিশ্বস্ত ও আস্থাভাজন সেনাপতি কে? 

উত্তর: মিরমদান।

১৪০। আসর জুড়িয়ে যাওয়ার কথা কে বলেছিল?

উত্তর: রাজবল্লভ।

১৪১। ‘সিরাজউদ্দৌলা' নাটকে মোট কতটি অঙ্ক ও দৃশ্য রয়েছে?

উত্তর: চারটি অঙ্ক এবং ১২ টি দৃশ্য রয়েছে।

১৪২। কতটি দৃশ্যে সিরাজ উপস্থিত?

উত্তর: ৮ টি।

১৪৩ । নাটকে প্রায় কতটি চরিত্র রয়েছে? 

উত্তর: চল্লিশটি।

১৪৪। কার অনুমতি পেয়ে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি প্রথম সুরাটে বাণিজ্য কুঠি নির্মাণ করে?

উত্তর: মোগল সম্রাট জাহাঙ্গীর।


নাটক: সিরাজউদ্দৌলা গুরুত্বপূর্ণ অনুধাবনমূলক প্রশ্ন

১। ‘ঘরের লোক অবিশ্বাসী হলে বাইরের লোকের পক্ষে সবই সম্ভব”— বলতে কী বোঝানো হয়েছে? [ব. বো. ১৭, চ. বো. ১৬]

উত্তর: ‘ঘরের লোক অবিশ্বাসী হলে বাইরের লোকের পক্ষে সবই সম্ভব”-উক্তিটি দ্বারা স্বপক্ষের বিশ্বাসঘাতকতার দিকটিকে বোঝানো হয়েছে।

ইংরেজদের সঙ্গে যুদ্ধে রাজ অমাত্যগণ নবাব সিরাজউদ্দৌলার কর্তৃত্ব রক্ষায় জীবন উৎসর্গ করবেন বলে পবিত্র গ্রন্থ নিয়ে শপথ করেছিলেন। কিন্তু নবাবকে পরাজিত করতে গোপনে অনেকেই ষড়যন্ত্র করেছিলেন ইংরেজদের সাথে, যা তাদের কর্মকাণ্ডে প্রকাশ পেয়েছে। অমাত্যবর্গের এই বিশ্বাসঘাতকতার দিকটি প্রশ্নোক্ত মন্তব্যে প্রকাশ পেয়েছে। 


২। রবার্ট ক্লাইভ নারীর ছদ্মবেশে মিরনের বাড়ি এসেছিল কেন? [রা. বো. ১৮, কু. বো. ১৮, চ. বো ১৮, ব. বো. ১৮] 

উত্তর: নবারের দরবারে অমাত্যবর্গের সাথে ইংরেজদের ব্যক্তিগত যোগাযোগের বিষয়টি যেন নবাব বুঝতে না পারেন, এজন্য রবার্ট ক্লাইভ নারীর ছদ্মবেশে মিরনের বাড়ি এসেছিল। নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে সিংহাসনচ্যুত করতে রবার্ট ক্লাইভ এবং নবাবের অমাত্যবর্গ মিরনের বাড়িতে গোপন বৈঠক ডাকে। বৈঠকে মিরজাফর, ওয়াটস, রায়দুর্লভসহ সমস্ত বিশ্বাসঘাতকেরা উপস্থিত হয়। নবাবের গুপ্তচরেরা যেন এই গোপন বৈঠকের খবর না পায় এবং তাদের ধরতে না পারে সেজন্য রবার্ট ক্লাইভ নারীর ছদ্মবেশ ধারণ করে মিরনের বাড়িতে উপস্থিত হয়।


৩। ‘উমিচাঁদের লোভের অন্ত নেই'- বলা হয়েছে কেন ? অথবা, ‘দওলত আমার কাছে ভগবানের দাদামশায়ের চেয়েও বড়'- উক্তিটির দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে? [ব. বো. ১৭] 

উত্তর: অর্থের প্রতি আসক্তি প্রবল বলে উমিচাঁদের লোভের অন্ত নেই বলা হয়েছে।

‘সিরাজউদ্দৌলা' নাটকে নবাব সিরাজউদ্দৌলার অমাত্যদের অধিকাংশই ছিল অর্থলোভী ও বিশ্বাসঘাতক। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থলোভী ছিল উমিচাঁদ। অর্থের জন্য একেক সময় একেক জনের পক্ষ নিত। ঘসেটি বেগমের সঙ্গে কথা বলার এক পর্যায়ে উমিচাঁদ জানায় যে সে দওলতের পূজারি। কারণ দওলত বা অর্থ তার কাছে ভগবানের দাদামশায়ের চেয়েও বড়।


৪। ঘসেটি বেগম কেন সিরাজের ধ্বংস কামনা করেন? [ব বো. ১৭]

উত্তর: প্রতিশোধ গ্রহণের জন্য ঈর্ষাপরায়ণ ঘসেটি বেগম সিরাজের ধ্বংস কামনা করেন।

নবাব সিরাজউদ্দৌলা বাংলার মসনদে বসায় ঘসেটি বেগমের স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে যায়। এজন্য তিনি সিরাজের সুখ সহ্য করতে পারতেন না। নিজের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য তিনি

নবাবের বিরুদ্ধে ঘড়যন্ত্রে লিপ্ত হন। এই প্রতিহিংসার কারণেই ঘসেটি বেগম সিরাজের ধ্বংস কামনা করেন।


৫। ‘আমার সারা অস্তিত্ব জুড়ে কেবল যেন দেয়ালের ভিড়'-উক্তিটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা কর। [কু. বো. ১৭]

উত্তর: আলোচ্য উক্তিটির মাধ্যমে নবাব সিরাজউদ্দৌলা প্রাসাদ ষড়যন্ত্র এবং রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তার বর্তমান অবস্থা বোঝাতে চেয়েছেন।

বাংলার মসনদে আরোহণের পর থেকেই নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য প্রাসাদ ষড়যন্ত্র শুরু করেন সিরাজের খালা ঘসেটি বেগম। নবাব মসনদে বসার পর থেকেই ঘসেটি বেগমের মধ্যে প্রচণ্ড ক্ষোভ বিরাজমান ছিল, নবাব তা বুঝতে পারতেন। মিরজাফর, জগৎশেঠ, রাজবল্লভের সঙ্গে ঘসেটি বেগম সিরাজের বিরুদ্ধে গোপন ষড়যন্ত্র শুরু করেন। ওদিকে দেশের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য ইংরেজদের সঙ্গে সিরাজের দ্বন্দ্বও দিন দিন বেড়েই চলছিল। সিরাজ তাঁর বর্তমান অবস্থা বোঝাতেই লুৎফুন্নেসার কাছে প্রশ্নোক্ত উক্তিটি করেছেন।


৬। ‘ফরাসিরা ডাকাত আর ইংরেজরা অতিশয় সজ্জন ব্যক্তি, কেমন?'- উক্তিটি বিশ্লেষণ কর। [য. বো. ১৭, চ. বো. ১৬] 

উত্তর: ফরাসিরা আর ইংরেজরা এসেছে এদেশে মূলত বাণিজ্য করার নামে অবাধ লুণ্ঠন করতে, কেউ সজ্জন ব্যক্তি নন, তাদের লক্ষ অভিন্ন, সিরাজউদ্দৌলা এ কথাই বোঝাতে চেয়েছেন।

ইংরেজরা নবাব সিরাজউদ্দৌলার নিষেধ সত্ত্বেও ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গের নির্মাণ কাজ চালিয়ে যায়। ইংরেজদের এই নিয়ম বহির্ভূত কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ হয়ে নবাব ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ দখল করে নেন এবং ওয়াটস ও হলওয়েলকে বন্দি করেন। বন্দিদের কাছে নবাবের নির্দেশ অমান্যের কারণ জানতে চাইলে হলওয়েল জানায়, তারা ফরাসিদের কাছ থেকে আত্মরক্ষার জন্য দুর্গ নির্মাণ করেছিল। হলওয়েলের এ কথার প্রেক্ষিতে নবাব কটাক্ষ করে প্রশ্নোক্ত উক্তিটি করেন।


৭। কুঠির সাহেব কর্তৃক উৎপীড়িত ব্যক্তির ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে দেবার কারণ বুঝিয়ে লেখ ।

উত্তর: ইংরেজদের কাছে লবণ বিক্রি করেনি বলে কুঠির সাহেব তার লোকদের মাধ্যমে উৎপীড়িত ব্যক্তির বাড়ি-ঘ -ঘর জ্বালিয়ে দেয়।

ইংরেজেরা ইজারাদারির মাধ্যমে এদেশে লবণের ব্যবসায় করত। তারা স্থানীয় শাসকদের যাবতীয় লবণ তিন চার আনা মণ দরে পাইকারি হিসেবে কিনে সেখানে বসেই স্থানীয় লোকদের কাছে দুই টাকা আড়াই টাকা মণ দরে বিক্রি করত। জনৈক প্রজা কম দামে লবণ বিক্রি না করায় কুঠিয়ালের লোকেরা তার বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়, তার নখের ভেতর খেজুর কাঁটা ফুটিয়ে দেয় এবং তার গর্ভবতী বউকে মেরে ফেলে।


৮। সিরাজউদ্দৌলার পতন হলে কে কত টাকা পাবে বলে দলিলে সই হয়? [রা. বো, ১৭] 

উত্তর: সিরাজউদ্দৌলার পতন হলে কোম্পানি এক কোটি, কলকাতার বাসিন্দারা সত্তর লক্ষ এবং ক্লাইভ দশ লক্ষ টাকা পাবেন বলে চুক্তি হয়।

‘সিরাজউদ্দৌলা' নাটকে ষড়যন্ত্রকারীরা ক্লাইভের সঙ্গে চুক্তি করে। এ নাটকের দ্বিতীয় অঙ্কের তৃতীয় দৃশ্যে ক্লাইভের আনা দলিলে বিশ্বাসঘাতকেরা সই করে। চুক্তি অনুযায়ী যুদ্ধে সিরাজউদ্দৌলার পতন হলে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এক কোটি টাকা পাবে। এছাড়া কলকাতার বাসিন্দারা ক্ষতিপূরণ বাবদ পাবে সত্তর লক্ষ টাকা এবং ক্লাইভ পাবেন দশ লক্ষ টাকা । অন্যদের টাকা সম্পর্কে নাটকে উল্লেখ করা না হলেও এ চুক্তিপত্রে জগৎশেঠ, রাজবল্লভ, মিরন সবাই স্বাক্ষর করে।


৯। সিরাজউদ্দৌলা কম্পানি ও ইংরেজদের সম্পত্তি তহবিলে বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেন কেন?

উত্তর: ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি নবাবের আদেশ অমান্য করে অসাধু উপায়ে ব্যবসা শুরু করে বলে নবাব সিরাজউদ্দৌলা কম্পানি ও ইংরেজদের সম্পত্তি নবাব তহবিলে বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেন ।

ইংরেজরা এদেশে এসেছিল মূলত বাণিজ্য করতে। তবু তারা বাংলার বুকে নবাবের অনুমতি ছাড়াই বাণিজ্য করতে থাকে এবং রাজকর ফাঁকি দিয়ে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলে। শুধু তাই-ই নয়, তারা নবাবের বিরুদ্ধেও অস্ত্র ধারণ করে। তাই নবাব কলকাতা অভিযানের সমস্ত খরচ মেটাতে এবং ইংরেজদের দমন করতে তাদের সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।


১০। ‘আমার নালিশ আজ আমার বিরুদ্ধে'- এ উক্তির তাৎপর্য কী? [সকল বো. ১৮, য. বো. ১৬, সি. বো. ১৬]

উত্তর: প্রজাদের দুর্ভোগের জন্য কাউকে দোষারোপ না করে আত্মগ্লানি প্রকাশ করতে গিয়ে নবাব সিরাজউদ্দৌলা এ কথা বলেছেন।

উৎপীড়িত ব্যক্তিকে দরবারে ডাকার পূর্বে নবাব তাঁর পারিষদদের ডেকে তাঁদের নিজ নিজ দায়িত্ব পুনরায় স্মরণ করিয়ে দেন। এতে অসন্তুষ্ট হয়ে মিরজাফর নবাবকে প্রশ্ন করে, তিনি তাদের সন্দেহ করছেন কি না? কিন্তু নবাব কোনো অভিযোগ জানাতে চান না। বাংলার প্রজাদের সুখ- স্বাচ্ছন্দ্য বিধান না করতে পারায় নিজেকেই অপরাধী হিসেবে আখ্যা দেন তিনি। আর এ প্রসঙ্গেই তিনি নিজের বিরুদ্ধে নালিশের কথা বলেন ।


১১। ‘ব্রিটিশ সিংহ ভয়ে লেজ গুটিয়ে নিলেন— এ বড় লজ্জার কথা।'- উমিচাঁদের এ কথা বলার কারণ কী? [ঢা. বো. ১৭, দি. বো. ১৭, কু. বো. ১৬]

উত্তর: ক্যাপ্টেন ক্লেটন যুদ্ধ করতে করতে প্রাণ দেবেন প্রতিজ্ঞা করে গভর্নর ড্রেকের সাথে পরামর্শের নাম করে দুর্গ থেকে পলায়ন করলে উমিচাঁদ তার বীরত্বকে ব্যঙ্গ করে এ উক্তিটি করেন ।

১৭০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গে ইংরেজরা নবাবের বিনা অনুমতিতে সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করে। তাই নবাব ঐ দুর্গ আক্রমণ করেন। ইংরেজ সৈন্যরা নবাবের সৈন্যদের আক্রমণের মুখে দিশেহারা হয়ে পড়লে ক্যাপ্টেন মিনচিন, কাউন্সিলার ফকল্যান্ড ও মানিংহাম নৌকাযোগে দুর্গ থেকে পালিয়ে আত্মরক্ষা করে। শেষ পর্যায়ে ক্যাপ্টেন ক্লেটনও গভর্নর ড্রেকের সাথে পরামর্শের নাম করে আত্মরক্ষার্থে সব প্রতিজ্ঞা ভুলে দুর্গ থেকে পালিয়ে যান। তাই ব্যাঙ্গার্থে প্রশ্নোক্ত উক্তিটি করা হয়েছে।


১২। 'মতিঝিল ছেড়ে আমি এক পা নড়ব না।'-উক্তিটিতে ঘসেটি বেগমের কোন ধরনের মানসিকতা ফুটে উঠেছে? [দি. বো. ১৭]

উত্তর: উক্তিটিতে ঘসেটি বেগমের একগুঁয়ে মানসিকতা প্রকাশ পেয়েছে।

ঘসেটি বেগমের ঘরে উমিচাঁদ, রাজবল্লভ, জগৎশেঠ, রায়দুর্লভের উপস্থিতিতে জাঁকজমকপূর্ণ জলসা চলছিল। সেই সাথে নবাবকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য তারা গোপনে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছিল। নবাব সেখানে উপস্থিত হয়ে মতিঝিলের জলসা চিরকালের মতো ভেঙ্গে দেওয়ার ঘোষণা দেন। নবাব ঘসেটি বেগমকে তাঁর সাথে নিয়ে যেতে চাইলে তিনি রোষে চিৎকার করে ওঠেন। সিরাজের সাথে দিনি প্রাসাদে যাবেন না বলে জানিয়ে দেন প্রশ্নোক্ত উক্তিটির মাধ্যমে। যা তার জেদি ও একগুঁয়ে মানসিকতা প্রকাশ করে ।


১৩। ‘তার নবাব হওয়াটাই আমার মস্ত ক্ষতি'-উক্তিটির তাৎপর্য লেখ। [ঢা. বো ১৬]

উত্তর: সিরাজের নবাব হওয়াটা স্বার্থ হাসিলের অন্তরায় বলে ঘসেটি বেগম উক্তিটি করেছে।

ক্ষমতার প্রতি ঘসেটি বেগমের অসীম লোভ। তিনি মনে করেন সিরাজ বাংলার নবাব, আর তিনি তার প্রজা। সিরাজ তার সম্পত্তিতে হস্তক্ষেপ করেছেন, মতিঝিল থেকে তাকে বিতাড়িত করেছেন। এসব কারণে ঘসেটি বেগম সিরাজের নবাব হওয়াটাকে তার মস্ত বড় ক্ষতি বলে মনে করেন।


১৪। ‘ওর কাছে সবকিছুই যেন বড় রকমের জুয়ো খেলা কার কাছে? কেন? [সি. বো. ১৭]

উত্তর: ক্লাইভ তার মতলব হাসিলের জন্য যেকোনো অবস্থায় ঝাঁপিয়ে পড়তে পারেন বলে আলোচ্য কথাটি বলা হয়েছে। নবাবকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য মিরজাফর, রায়দুর্লভ, ক্লাইভ গোপন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন। ইংরেজদের তুলনায় নবাবের সৈন্যসংখ্যা ছিল অনেক বেশি। কিন্তু ক্লাইভের সাথে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকা সিপাহসলার যুদ্ধক্ষেত্রে ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়বে কি না সে বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে। এদিকে ক্লাইভের আরও তিনখানা চিঠি ধরা পড়ে। ক্লাইভ সিপাহসলারের জবাবের জন্য পাগল হয়ে পড়েন এবং নিজের চাওয়া হাসিল করার জন্যে যেকোনো অবস্থার ভেতর ঝাঁপিয়ে পড়তে পারেন বলে সিরাজ মন্তব্য করেন। আর এ কারণেই ক্লাইভের কাছে সবকিছুই বড় রকমের জুয়া খেলা ।


১৫। “শওকতজঙ্গ নবাব হলে সকলের উদ্দেশ্য হাসিল হবে।’- কেন? [সকল বোর্ড-১৮]

উত্তর: শওকতজঙ্গের অকমর্ণতা ও নেশাগ্রস্ততা স্বার্থান্বেষীদের উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য সহায়ক বলেই উক্তিটি করা হয়েছে। ঘসেটি বেগম, উমিচাঁদ, রাজবল্লভ, জগৎশেঠ, রায়দুর্লভ গোপনে সভা করে শওকতজঙ্গকে নবাব করার সিদ্ধান্ত দেন । জগৎশেঠ নবাব সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে শওকতজঙ্গকে সবার সমর্থনের কথা জানান এবং এর সুবিধা সম্পর্কে জানতে চান । তখন ঘসেটি বেগম বলেন, শওকতজঙ্গ আপনাদেরই ছেলে । সে নবাবি পেলে প্রকারান্তরে আপনরাই তো দেশের মালিক হয়ে বসবেন।' তারা বুঝতে পারেন যে, ভাংয়ের নেশা আর নাচনেওয়ালিদের নিয়ে ব্যস্ত, অকর্মণ্য শওকতজঙ্গ নবাব হবে নামমাত্র। আসল কর্তৃত্ব থাকবে ঘসেটি বেগমের হাতে এবং পরোক্ষভাবে দেশ শাসন করবেন রাজবল্লভ। তাহলে তাদের সবার উদ্দেশ্যই সফল হবে। প্রশ্নোক্ত বাক্যে এ কথাই বলা হয়েছে।


১৬। ‘এই অস্ত্র নিয়ে আমরা কাপুরুষ দেশদ্রোহীদের অবশ্যই দমন করতে পারব।'- এখানে কোন অস্ত্রের কথা বলা হয়েছে এবং কেন? [রা. বো. ১৭]

উত্তর: এখানে দেশকে স্বাধীন ও শত্রুমুক্ত করার জন্য নবাব সিরাজউদ্দৌলা যে অস্ত্রের কথা বলেছেন তা দেশপ্রেম ও স্বাধীনতা রক্ষার সংকল্প ৷

যুদ্ধক্ষেত্র থেকে নবাব সিরাজউদ্দৌলা দেশের স্বাধীনতা বজায় রাখার শেষ চেষ্টা করার জন্য রাজধানীতে আসেন। মুর্শিদাবাদে নবাব দরবারে দেশকে স্বাধীন ও শত্রুমুক্ত করার জন্য সিরাজউদ্দৌলার সঙ্গে সাধারণ মানুষ এবং সৈনিকদের কথাবার্তা চলে। পুনরায় সৈন্য সংগ্রহ করে শত্রুদের মোকাবিলা করার জন্য নবাব তৈরি হতে চান। অনেকে ভয় পেয়ে শহর ছেড়ে পালিয়ে যায়। দেশপ্রেমের শক্তিতে কাপুরুষ দেশদ্রোহীদের দমন করার দৃঢ়প্রত্যয় ব্যক্ত করতেই সিরাজউদ্দৌলা প্রশ্নোক্ত কথাটি বলেছেন।


১৭। 'ভিকটরি অর ডেথ, ভিকটরি অর ডেথ'- উক্তিটি বিশ্লেষণ কর। [য. বো. ১৭]

উত্তর: নবাবসৈন্যরা ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ আক্রমণ করলে ব্রিটিশ সৈন্যদের যুদ্ধে উৎসাহিত করার জন্য ক্লেটন কথাটি বলেছে।

নবাবসৈন্য দুর্গ আক্রমণ করলে দুর্গের ভেতরে ইংরেজদের অবস্থা শোচনীয় হয়ে পড়ে। টিকে থাকার জন্য যুদ্ধ না করে উপায় নেই। ক্যাপ্টেন নবাবসৈন্যদের প্রতিহত করার জন্য দুর্গপ্রাচীরের এক অংশ থেকে মুষ্টিমেয় গোলন্দাজ সৈন্য নিয়ে কামান চালাচ্ছেন। কিন্তু আতঙ্কগ্রস্ততার কারণে ইংরেজ সৈন্যদের মনে কোনো উৎসাহ ছিল না। ব্রিটিশ সৈনিকদের মনোবল বৃদ্ধি করে প্রাণপণে যুদ্ধ করার জন্য ক্লেটন বলেন, ভিক্টরি অর ডেথ অর্থাৎ যুদ্ধে জয়লাভ অথবা মৃত্যুবরণ, এই আমাদের প্রতিজ্ঞা ।


১৮। ‘আমাদের কারও অদৃষ্ট মেঘমুক্ত থাকবে না শেঠজী।- উক্তিটি বুঝিয়ে লেখ।

উত্তর: উক্তিটি ‘সিরাজউদ্দৌলা' নাটকে মিরজাফর নবাবের শক্তি ও সামর্থ্য সম্পর্কে বলেছেন।

বিশ্বাসঘাতক ও চক্রান্তকারী অমাত্যবর্গের নিকট থেকে নবাব ধর্মসাক্ষী রেখে শপথ আদায় করে নিয়েছেন যে, দেশের স্বার্থের জন্য সকলেই নবাবের পক্ষ হয়ে ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়বে। এ ঘটনার পরই মিরজাফরের প্রাসাদে চক্রান্তকারীদের গোপন বৈঠক হয়েছে। নবাবের কূটবুদ্ধি ও কৌশলে সকলেই ভীত। কারণ প্রত্যেকের ধারণা যে, তাদের চক্রান্ত নবাব ধরে ফেলবেন। মিরজাফর তখন বলেছেন, তাদের সকলেরই অদৃষ্ট নন্দকুমারের মতো হবে, যদি না দ্রুত কার্যসিদ্ধি করা যায়।


১৯। মিরজাফর উমিচাঁদকে কালকেউটে বলেছেন কেন? 

উত্তর: উমিচাঁদের ধূর্ত স্বভাব ও অর্থলোলুপতার জন্য মিরজাফর তাকে কালকেউটে বলেছেন।

শিখ বংশোদ্ভূত উমিচাঁদ ছিলেন লাহোরের অধিবাসী কলকাতায় এসে তিনি দালালি ব্যবসায়ে আত্মনিয়োগ করে মালিক হয়েছিলেন প্রভূত ধন-সম্পত্তির। পলাশির যুদ্ধে তিনি ঘন ঘন পক্ষ পরিবর্তন করে কৌশলে বাংলার নবাব ও ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কাছ থেকে প্রচুর অর্থবিত্ত অর্জন করেন। পলাশির যুদ্ধের অভিনয় মহড়ায় তাঁর এই বিশেষ ভূমিকার জন্য মিরজাফর বিদ্রুপ করে আলোচ্য উক্তিটি করেছেন।


২০। ক্লাইভ কেন সিরাজ হত্যায় মিরনকে প্ররোচিত করেছিলেন?

উত্তর: কূটকৌশলী ক্লাইভ তার পথের কাঁটা সরাতেই সিরাজ হত্যায় মিরনকে প্ররোচিত করেছিলেন।


২১। ‘প্রাণ বাঁচবে কী করে তার ব্যবস্থা নেই, কর্তৃত্ব ফলাচ্ছেন সব।'-উক্তিটির ভাবার্থ কী?

উত্তর: ‘সিরাজউদ্দৌলা' নাটকে এ উক্তির মাধ্যমে ইংরেজদের চরম অসহায়তা এবং দুরবস্থার ছবি উপস্থাপিত হয়েছে। নবাব সিরাজউদ্দৌলার সেনাবাহিনী কর্তৃক কলকাতার ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ পতনের পর ইংরেজরা কলকাতা ছেড়ে পালিয়ে ভাগীরথী নদীতে ফোর্ট উইলিয়াম জাহাজে আশ্রয় নেয়। সেখানে তারা খাদ্য বস্ত্রের চরম সংকটে পড়ে। নিজেদের মধ্যে কলহ শুরু হয়। এসবের মাঝেও ড্রেক নবাবকে আক্রমণ করার চক্রান্ত করে। মার্টিনসহ অন্যান্য সৈনিক ড্রেকের নির্দেশে যুদ্ধ করতে অস্বীকৃতি জানায়। ড্রেক মার্টিনকে বন্দি করার কথা বললে জাহাজের এক ইংরেজ নারী উপর্যুক্ত কথাটি বলেনে, যার মাধ্যমে ইংরেজদের অসহায়ত্ব ও দুর্বিসহ জীবনের কথা ফুটে উঠেছে।


২২। ‘অদৃষ্টের পরিহাস তাই ভুল করেছিলাম'—ঘসেটি বেগম কেন এ কথা বলেছে?

উত্তর: সিরাজউদ্দৌলার মসনদে বসবার বিষয়টি ঘসেটি বেগম মনে প্রাণে মেনে না নেওয়ায় আলোচ্য উক্তিটি করেছেন।

প্রতিহিংসাপরায়ণ ঘসেটি বেগম নবাব প্রসঙ্গে নবাবের মাতা আমিনা বেগমের সঙ্গে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে এ উক্তিটি করেন। তাঁর এ উক্তির বিপরীতে তাঁকে শান্ত করার জন্য আমিনা বলেন যে, 'নবাব সিরাজ তোমারও পুত্র। তুমিও কোলে-পিঠে করে তাকে মানুষ করেছ।' আমিনার এ উক্তির জবাবে ঘসেটি বেগম বলেছেন, 'যদি জানতাম- তাহলে দুধের শিশু সিরাজউদ্দৌলাকে প্রাসাদ চত্তরে আছড়ে মেরে ফেলতে বিন্দুমাত্র দ্বিধাবোধ করতাম না।'


২৩। নবাব নিশ্চিত সাধারণ গৃহস্থের ছোট সাজানো সংসার চেয়েছেন কেন?

উত্তর: রাজকর্মের ব্যস্ততার কারণে তিনি তাঁর সহধর্মিনীকে তেমন একটা সময় না দিতে পারায় যন্ত্রণাদগ্ধ হয়ে নিশ্চিত সাধারণ গৃহস্থের ছোট সাজানো সংসার চেয়েছেন।

স্বাধীনচেতা, ষড়যন্ত্র পরিব্যপ্ত, কর্মব্যস্ত তরুণ নবাব মনের দিক থেকে ছিলেন সরল, নিরহংকারী ও সাধারণ একজন মানুষ। কর্মের ভারে আদৌ তিনি সুযোগ করতে পারতেন না বেগমকে একটু একান্ত পরিবেশে সান্নিধ্য দিতে। তবুও সুযোগ পেলেই মনটা তার ছুটে যেত বেগমের কাছে। মনের দিক থেকে তিনি ছিলেন মহান প্রেমিক- সে কথারই পরিচয় মিলেছে উক্তিটির মধ্যে।


২৪। সভাসদ এবং কোম্পানির প্রতিনিধি ওয়াটস সিরাজউদ্দৌলার প্রতি কেন ক্ষিপ্ত ছিলেন?

উত্তর: জনৈক প্রজার অত্যাচারের জন্য সিরাজউদ্দৌলা প্রকাশ্য দরবারে সভাসদ ও কম্পানির প্রতিনিধির বিরুদ্ধে অভিযোগ উপস্থাপনের জন্য সকলেই ক্ষিপ্ত হলেন।

সিরাজউদ্দৌলা ছিলেন স্বাধীনচেতা নবাব। তাই তাঁর রাজ্যে ইংরেজ অপশাসন মেনে নেননি, বরং ওয়াটসের কাছে এর জবাবদিহিতা চেয়েছেন। এছাড়া সভাসদকে ধর্মীয় গ্রন্থ স্পর্শ করিয়ে দেশরক্ষায় কাজ করার আহ্বান করেছেন। এর ফলে তারা নবাবের বিরুদ্ধে ক্ষিপ্ত ছিলেন।


২৫। সিরাজউদ্দৌলা স্বাধীনতা রক্ষায় মিরজাফরকে অনুরোধ জানিয়েছিল কেন?

উত্তর: দূরদৃষ্টিসম্পন্ন সিরাজউদ্দৌলা ষড়যন্ত্রের আভাস পাওয়ায় দেশের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য মিরজাফরের কাছে অনুরোধ জানিয়েছিল।

সিরাজউদ্দৌলা ছিলেন বাংলা, বিহার, উড়িষ্যার স্বাধীন নবাব। দেশমাতৃকার স্বাধীনতা রক্ষার জন্য তিনি মিরজাফর ও অন্যান্য সেনাপতি এবং পারিষদদের নিজেদের পারস্পরিক হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে আবার দেশের কল্যাণে সংঘবদ্ধ হবার আহ্বান জানিয়েছিলেন। রাজনৈতিক সংকটে সিরাজউদ্দৌলার উল্লিখিত পদক্ষেপগুলো তাঁর দূরদৃষ্টিসম্পন্ন প্রজ্ঞারই পরিচয়। 


২৬। মিরজাফর অগ্নিগিরির মতো প্রচণ্ড গর্জনে ফেটে পড়বার জন্যে তৈরি হয় কেন ?

উত্তর: ঘৃণা আর বিদ্বেষের অসহ্য উত্তাপে মিরজাফর অগ্নিগিরির মতো প্রচণ্ড গর্জনে ফেটে পড়ার জন্য তৈরি হয়। বাংলার মসনদ দখলের লোভে সেনাপতি মিরজাফর কোম্পানির স্বার্থে কাজ করত। এজন্য সে নবাবকে পরামর্শ দেয় ইংরেজদের লবণের ইজারাদারি দিতে। এতে বাংলার জনসাধারণের স্বার্থ বিঘ্নিত হলে নবাব মিরজাফরকে কঠিন ভাষায় শাসন করেন। তাই সে অগ্নিগিরির মতো প্রচণ্ড গর্জনে ফেটে পড়ার জন্য তৈরি হয়।


২৭। ‘আমরা এমন কিছু করলাম যা ইতিহাস হবে।'-কথাটির ভাবার্থ কী?

উত্তর: ‘সিরাজউদ্দৌলা' নাটকে ইংরেজ সেনাপতি রবার্ট ক্লাইভের এ উক্তিটি নানা দিক থেকে তাৎপর্যপূর্ণ।

নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে সিংহাসনচ্যুত করে বাংলার সিংহাসন করায়ত্ত করতে চায় বিশ্বাসঘাতকের দল। তাই নিজ নিজ সংকীর্ণ স্বার্থকে বাস্তবে রূপদান করার জন্য তারা ইংরেজদের সাথে একটি ঘৃণ্য চুক্তি করে। এ ঘটনার মাধ্যমেই পাকভারত উপমহাদেশে ইংরেজদের দীর্ঘশাসনের বীজ রোপিত হয়। চুক্তিপত্রে এক এক করে জগৎশেঠ, মিরজাফর, রাজবল্লভ সবাই স্বাক্ষর দেন। এই চুক্তির মাধ্যমে বাংলার পরাধীনতার পথ সুগম হয়। এ সনদই শত্রুদের বিজয় বার্তা ঘোষণা করে ১৭৫৭ সালের ২৩শে জুন ঐতিহাসিক পলাশির প্রান্তরে । 


২৮। ‘তুমিও আমার বিচার করতে বসলে’-সিরাজউদ্দৌলা কেন লুৎফাকে একথা বলেছেন?

উত্তর: নানা ষড়যন্ত্রের শিকার সিরাজউদ্দৌলা যখন তাঁর বিশ্বাসের শেষ আশ্রয় সহধর্মিনী লুৎফ্ফার কাছে আসে তখন স্ত্রীর অনুযোগের উত্তর দিতে গিয়ে বিপর্যস্ত নবাব এ উক্তিটি যে অযথার্থ তা বোঝাতেই অভিমানী নবাব সিরাজউদ্দৌলা আলোচ্য কথাটি বলেন ।


২৯। ‘আমার শেষ যুদ্ধ পলাশিতেই।'-উক্তিটি ব্যাখ্যা কর। 

উত্তর: ‘সিরাজউদ্দৌলা' নাটকে নবাবের বিশ্বস্ত সেনাপতি মোহনলাল নবাবের উদ্দেশ্যে এ উক্তিটি করেছিলেন। মোহনলাল যুদ্ধের ব্যর্থ পরিণতি উপলব্ধি করে শেষদিকে ফিরে আসেন নবাব শিবিরে। তিনি নবাবকে জানান যে, মিরজাফর ইংরেজদের সাথে যোগ দেওয়ার অপেক্ষায় আছে। এ অবস্থায় নবাব যেন মুর্শিদাবাদ চলে গিয়ে পুনঃপ্রস্তুতি নেন শত্রু মোকাবিলায়। দেশপ্রেমের অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী মোহনলালকে যখন নবাব তাঁর সাথে যেতে বলেন তখন তিনি বলেন, ‘আমার শেষ যুদ্ধ পলাশিতেই ।'

৩০। ‘গুপ্তচরের কাজ করেছি দেশের স্বাধীনতার খাতিরে। - রাইসুল জুহালা কেন এ মন্তব্যটি করেছে?

উত্তর: দেশপ্রেমিক রাইসুল জুহালার কাছে নিজ জীবনের চেয়ে দেশ বড়, তাই দেশের স্বাধীনতা রক্ষার্থে উক্ত মন্তব্যটি করেছেন।

যখন নবাবের বিশ্বস্ত গুপ্তচর রাইসুল জুহালা ওরফে ছদ্মবেশী নারান সিংকে ক্লাইভ মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছে, তখন গুলিবিদ্ধ নারান সিং বিশ্বাসঘাতকতার দায়ে সিরাজউদ্দৌলার এসব অমাত্যকে অভিযুক্ত করে বলেছিলেন যে, তাদের বেইমানি ও মোনাফেকির চেয়ে এ মৃত্যু শ্রেয়। কারণ তিনি মারা যাচ্ছেন দেশের স্বাধীনতার জন্য ।


৩১। ‘এই প্রাণদান আমরা ব্যর্থ হতে দেব না।'-উক্তিটির ভাবার্থ কী?

উত্তর: ‘সিরাজউদ্দৌলা' নাটকে এ উক্তিটি করেছেন বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলা।

পলাশিতে যুদ্ধের নামে হয়েছে শুধু প্রতারণা আর অভিনয়। মুষ্টিমেয় দেশপ্রেমিক তাতে প্রাণ দিয়েছেন। পুনরায় যুদ্ধ করে জয়ী হয়ে, দেশের স্বাধীনতা রক্ষা করে বীরদের এহেন প্রাণদানকে নবাব অর্থবহ করে তুলতে চান। দেশের জন্য যারা শহিদ হয়েছেন তাঁদের আত্মত্যাগকে নবাব সিরাজউদ্দৌলা মহিমান্বিত করে রাখতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।


৩২। উমিচাঁদ কেন নিজেকে ‘দওলতের পূজারি' হিসেবে জাহির করেন?

উত্তর: উমিচাঁদ ছিলেন প্রচণ্ড অর্থলোভী তাই তিনি নিজেকে ‘দওলতের পূজারি' হিসেবে জাহির করেন।

লোভ মানুষকে পশুতে পরিণত করে। অর্থলোভী উমিচাঁদ অর্থের জন্য সমাজে যেকোনো ঘৃণ্য কাজ করতে পারেন। নবাব সিরাজকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য তিনি ঘসেটি বেগমের সঙ্গে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন। তারা শওকতজঙ্গকে ক্ষমতায় বসাতে চান। এক্ষেত্রে তারা ব্যক্তিগত লাভ-লোকসানের হিসাব করতে প্রবৃত্ত হন। এমতাবস্থায় উমিচাঁদ উল্লিখিত বাক্যটির মাধ্যমে ঘসেটি বেগমের কাছে প্রকাশ করেন তার অর্থলোভী মানসিকতা।


৩৩। ঘসেটি বেগম কেন সিরাজের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে হয়েছিলেন?

উত্তর: সিরাজকে ক্ষমতাচ্যুত করে শওকতজঙ্গকে সিংহাসনে বসানোর বাসনায় ঘসেটি বেগম সিরাজের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছিলেন।

ঘসেটি বেগম ছিলেন নবাব সিরাজউদৌলার বড় খালা। অনেক আগে থেকেই তার আকাঙ্ক্ষা ছিল ক্ষমতার অংশীদার হওয়া। তাই নবাব আলিবর্দি খান (মির্জা মুহম্মদ আলিবর্দি খাঁ) যখন সিরাজউদ্দৌলাকে নবাব নিযুক্ত করেন, তখন ঘসেটি বেগম তা মেনে নিতে পারেন না। তিনি নবাবের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে ওঠেন। নবাবকে ক্ষমতা থেকে সরাতে পারলে নিজের স্বার্থসিদ্ধি ঘটবে বলে তিনি মনে করেন। এজন্য ঘসেটি বেগম নবাবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন।


৩৪। ‘শুধু ওই একটি পথেই আবার আমরা উভয়ে উভয়ের কাছাকাছি আসতে পারি।'—কীভাবে? [রা. বো. ১৬] 

উত্তর: দেশবাসীর কল্যাণ, দেশের কল্যাণ প্রসঙ্গে নবাব সিরাজউদ্দৌলা তাঁর পারিষদবর্গকে উদ্দেশ্য করে আলোচ্য কথাটি বলেছেন।

‘সিরাজউদ্দৌলা' নাটকের দ্বিতীয় অঙ্কের প্রথম দৃশ্যে নবাব সিরাজউদ্দৌলা মিরজাফরের ওপর নিজের সন্ধিগ্ধ মনোভাব পোষণ করেন। এতে মিরজাফর বলেন, ‘আমাদের প্রতি নবাবের সন্ধিগ্ধ মনোভাবের পরিবর্তন না হলে দেশের কল্যাণের কথা ভেবে আমরা উৎকণ্ঠিত হয়ে উঠব।' নবাব ও দেশের কল্যাণ প্রত্যাশা করেন। তাই দেশবাসীর কল্যাণের জন্য নবাব মিরজাফরদের একতাবদ্ধ হতে বলেন। নবাবের

মতে, কেবল দেশবাসীর কল্যাণের পথেই নবাব সিরাজউদ্দৌলা ও মিরজাফর কাছাকাছি আসতে পারেন।


৩৫। ক্লাইভ কেন বলেছিলেন “No clown ever beat him?

উত্তর: মিরজাফরের সীমাহীন কাপুরুষতা ও ভাঁড়ামীপূর্ণ আচরণের কারণে ক্লাইভ উপর্যুক্ত মন্তব্যটি করেছিলেন। বাংলার মসনদ অধিকার করেও ব্যক্তিত্বহীন মিরজাফর তার ষড়যন্ত্রের দোসর ক্লাইভ হাত ধরে তাকে মসনদে বসিয়ে না দিলে সেই মসনদে বসতে চাননি। বিষয়টি দরবারের সভাসদ ও অমাত্যবর্গকে হতবাক করে। এতে ইংরেজ সেনাপতি ক্লাইভও বিস্মিত হন। ক্লাইভের কাছে মিরজাফরের স্তুতিপূর্ণ এ বক্তব্যকে চরম ভাঁড়ামিপূর্ণ মনে হয়। তাই ক্লাইভ ওটাসকে নিচু স্বরে উক্ত কথাটি বলেন।


৩৬। ‘শুভ কাজে বিলম্ব করা বুদ্ধিমানের কাজ নয়।'-বে একথা বলা হয়েছে? [ঢা. বো. ১৭]

উত্তর: কোম্পানির প্রতিনিধি ও নবাবের বিদ্রোহী পারিষদবর্গের মধ্যে যে সমঝোতা দলিল প্রস্তুত করা হয়েছে তাতে সই করা প্রসঙ্গে মিরজাফর আলোচ্য কথাটি বলেছেন।

নবাব সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার জন্য তার সিপাহসালার ও কোম্পানির প্রতিনিধিরা মিরনের বাসগৃহে একত্রিত হয়েছিল। যুদ্ধে ক্লাইভ বিজয়ী হলে কে কতটা ভাগ পাবে তা নিয়ে দলিল তৈরি করেছিল তারা। কিন্তু দলিল সই করতে গিয়ে তারা তর্কে জড়িয়ে পড়ে। তখন কালবিলম্ব না করে দলিলে সই করার মাধ্যমে নিজ স্বার্থকে পাকাপোক্ত করার জন্য মিরজাফর আলোচ্য উক্তিটি করে।


৩৭। উমিচাঁদের পাগল হওয়ার কারণ কী?

উত্তর: ক্লাইভের প্রতারণা এবং টাকার শোকই উমিচাঁদের পাগল হওয়ার কারণ ।

উমিচাঁদ নবাবের বিরুদ্ধাচরণ এবং ইংরেজদের এ শর্তে সাহায্য করতে রাজি হয়েছিল যে, নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতন হলে তাকে ২০ লাখ টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। লর্ড ক্লাইভের সঙ্গে তার এ চুক্তি হয়েছিল। কিন্তু পরে ক্লাইভ এ চুক্তির টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। তখন উমিচাঁদ উন্মাদের মতো বলেছিল, ‘ম্যাড বানিয়েছ, এখন খুন করে ফেল।'


৩৮। “সবাই মিলে সত্যিই আমরা বাংলাকে বিক্রি করে দিচ্ছি না তো?”- বক্তব্যটি বিশ্লেষণ কর। [কু. বো. ১৬, ১৭] 

উত্তর: ক্লাইভের দলিলে স্বাক্ষর দিতে গিয়ে মিরজাফর নিজের মনের শঙ্কা প্রকাশ করে এ কথা বলেছিল।

নবাবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে ইংরেজদের সঙ্গে হাত মেলায় মিরজাফরসহ নবাবের পারিষদবর্গের বেশ কয়েকজন। ষড়যন্ত্রের জন্য নিজেদের মাঝে সমঝতা দলিল তৈরি করেন লর্ড ক্লাইভ। ক্লাইভ এ দলিলে সই করতে বললে মিরজাফর উদ্বিগ্ন হয়। তার মনে হয়, নিজেদের স্বার্থের জন্য দেশের চূড়ান্ত ক্ষতি সাধন করছে না তো তারা? প্রশ্নোক্ত উক্তিটিতে মিরজাফরের সে আশঙ্কায় ফুটে উঠেছে।


৩৯। মিরজাফর আলি খান কেন ক্লাইভের হাত ধরে বাংলার মসনদে বসেছিলেন?

উত্তর: ক্লাইভের প্রতি আনুগত্য প্রকাশের জন্য মিরজাফর আলি খান ক্লাইভের হাত ধরে বাংলার মসনদে বসেছিলেন। পলাশির যুদ্ধে বিশ্বাসঘাতক নির্লজ্জ মিরজাফর ক্লাইভের সঙ্গে যোগ দিয়ে সিরাজউদ্দৌলাকে পরাজিত করেন। এরপর বাংলার নবাব পদ গ্রহণ করেন। মূলত ক্লাইভের কূটকৌশলের কারণেই তিনি বাংলার নবাব হতে পেরেছিলেন। তাই ক্লাইভের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শনের জন্য তিনি তার হাত ধরে বাংলার মসনদে বসেছিলেন।


৪০। ‘এখন আপনাকে শক্ত হতে হবে'-ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে বন্দি করে রাজধানীতে নিয়ে আসার ব্যাপারে মিরজাফরকে দ্বিধাগ্রস্ত দেখে ক্লাইভ কথাটি বলেছে।

পলাশির যুদ্ধে পরাজিত হয়ে নবাব মিরকাশেমের সৈন্যদের হাতে ভগবানগোলায় বন্দি হন। ক্লাইভ চান বন্দি নবাবকে রাজধানীতে এনে যুদ্ধাপরাধী সাজিয়ে মৃত্যুদণ্ড দিতে। এ ব্যাপারে মিরজাফর কিছুটা দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। তখন ক্লাইভ তাকে বোঝান যে তিনি এখন শাসনকর্তা। তিনি শাসন করতে পারেন, শাস্তি দিতে পারেন। এসব কাজের জন্য তাকে এখন শক্ত হতে হবে। ক্লাইভ উক্ত কথার মধ্য দিয়ে মিরজাফরকে সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে উদ্বুদ্ধ করেন।


৪১। মিরন কেন জাফরগঞ্জের কয়েদখানায় প্রবেশ করে? 

উত্তর: মিরন নিজের মনগড়া মৃত্যুদণ্ডাদেশ বন্দি নবাবকে শোনাতে জাফরগঞ্জের কয়েদখানায় প্রবেশ করে। পলাশির যুদ্ধে নবাব সিরাজের পরাজয়ের পর পাটনায় যাওয়ার পথে তাঁকে বন্দি করা হয় এবং জাফরগঞ্জের কয়েদখানায় রাখা হয়। এদিকে ইংরেজ কর্ণেল ক্লাইভ চান না সিরাজ বেঁচে থাকুক। তার প্ররোচনায় মিরন বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজকে হত্যা করতে জাফরগঞ্জ কয়েদখানায় প্রবেশ করে এবং নবাব সিরাজকে তার বানোয়াট মৃত্যুদণ্ডাদেশ শোনায়।


৪২। ক্লাইভ কেন সিরাজকে দ্রুত হত্যা করতে চেয়েছিল? 

উত্তর: গণবিক্ষোভের আশঙ্কায় ক্লাইভ সিরাজকে দ্রুত হত্যা করতে চেয়েছে।

পলাশির যুদ্ধে শোচনীয় পরাজয়ের পর স্ত্রী-কন্যাসহ নবাব পাটনার উদ্দেশে পালিয়ে যাওয়ার সময় ঘটনাক্রমে সেনাপতি মিরকাসেমের সৈন্যদের হাতে ধরা পড়েন। তারা নবাবকে সপরিবারে বন্দি করে রাজধানীতে নিয়ে আসে। তখন বাংলার মানুষের কাছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। নবাবের বন্দি অবস্থায় গণবিক্ষোভ শুরু হতে পারে ভেবে ক্লাইভ তাকে দ্রুত হত্যা করতে চেয়েছিল।


৪৩। ‘আসামির সে অধিকার থাকে নাকি?' কে, কোন প্রসঙ্গে বলেছে?

উত্তর: মৃত্যুদণ্ডপত্রে মিরজাফরের স্বাক্ষর আছে কিনা তা জানতে চাইলে মিরন কথাটি সিরাজকে বলেছে।

পলাশির যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতন হলে সিরাজউদ্দৌলা মিরকাশেমের সৈন্যদের হাতে বন্দি হন । তাঁকে জাফরগঞ্জ কয়েদখানায় রাখা হয়। ক্লাইভের প্ররোচনায় মিরন সিরাজউদ্দৌলাকে হত্যার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। কয়েদখানায় মিরন মোহাম্মদি বেগকে নিয়ে উপস্থিত হয়। মিরন নবাবকে মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত হতে বলে। তখন নবাব মিরজাফরের স্বাক্ষর করা দণ্ডাদেশপত্র দেখতে চান। নবাবের কথার উত্তরে মিরন বলে, 'আসামির সে অধিকার থাকে নাকি?'


৪৪। ইনি নবাব না ফকির'-মিরজাফর সম্পর্কে ক্লাইভের এ উক্তির কারণ কী? [সকল বোর্ড ১৮]

উত্তর: মিরজাফরের কাপুরুষোচিত আচরণের জন্য লর্ড ক্লাইভ উক্তিটি করেছে। বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতনের পর পূর্ব চুক্তিমতো নবাব হয় বিশ্বাসঘাতক ও ক্ষমতালোভী মিরজাফর। রাজদরবারে এসে মিরজাফর সিংহাসনে না বসে সিংহাসনের হাতল ধরে কর্নেল ক্লাইভের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। এতে মিরজাফরের ব্যক্তিত্বহীনতার বহিঃপ্রকাশ ঘটে। আর তা দেখেই ক্লাইভ প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি করে।


৪৫। মোহাম্মদি বেগ সিরাজকে হত্যা করবে এ কথা সিরাজ বিশ্বাস করতে পারেন নি কেন?

উত্তর: সিরাজের পিতা-মাতা মোহাম্মদি বেগকে সন্তানস্নেহে মানুষ করেন বলে স্নেহের ঋণের কথা স্মরণ করে সিরাজকে হত্যা করতে পারবে না ।

ঘাতক মোহাম্মদি বেগ কারাকক্ষে বন্দি সিরাজউদ্দৌলার দিকে লাঠি হাতে এগিয়ে আসতে থাকলে সিরাজ যুগপৎ ভীত ও বিমূঢ় হয়ে পড়েন। মোহাম্মদি বেগের মতো ব্যক্তি, যে শৈশব থেকে উপকার পেয়েছে সিরাজউদ্দৌলার পিতা-মাতার কাছ থেকে, সে সিরাজউদ্দৌলাকে হত্যা করতে আসবে, এটি তাঁর কাছে অবিশ্বাস্য বলে মনে হয়েছিল।


৪৬। ‘আমাকে খুন করে ফেলো- আমাকে খুন করে ফেলো”- উমিচাঁদ এ কথা বলেছে কেন?

উত্তর: প্রতারিত উমিচাঁদ অর্থ না পেয়ে উন্মাদের মতো উক্ত কথাটি বলেছে।

উমিচাঁদ নবাবের বিরুদ্ধাচরণ এবং ইংরেজদের এ শর্তে সাহায্য করতে রাজি হয়েছিল যে, নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতন হলে তাকে ২০ লাখ টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। লর্ড ক্লাইভের সঙ্গে তার এ চুক্তি হয়েছিল। কিন্তু পরে ক্লাইভ এ চুক্তির টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। তখন উমিচাঁদ উন্মাদের মতো বলেছিল, 'ম্যাড বানিয়েছ, এখন খুন করে ফেল।'



সম্পূর্ণ ফাইলটি পিডিএফ পেতে নিচের ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করুন।



নিত্য নতুন সকল আপডেটের জন্য জয়েন করুন

Telegram Group Join Now
Our Facebook Page Join Now
Class 8 Facebook Study Group Join Now
Class 7 Facebook Study Group Join Now
Class 6 Facebook Study Group Join Now
Join our Telegram Channel!
Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.