বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার শেষ সময়ের প্রস্তুতি - Final preparation of university entrance exam
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি
প্রিয় অনুজ, আর মাত্র কয়েকটা দিন বাকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার। একমুহূর্তে নতুন করে কিছু পড়ার দরকার নেই, যেগুলো পড়া হয়েছে সেগুলোই বেশি বেশি করে রিভিশন দিতে হবে। সব বিষয় ডিপলি পড়ার দরকার নেই। আবার যেগুলো মনে হচ্ছে পারি, সেগুলোও বাদ না দেওয়া। নতুন করে শুধু সাম্প্রতিক জিকে পড়তে হবে।
বিগত পাঁচ বছরের প্রশ্ন এনালাইসিস করে সেখানে থাকা টপিকগুলোই বেশি বেশি পড়তে হবে। এক্ষেত্রে গত বছরের প্রশ্নকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ গত বছর থেকে প্রশ্নে একটা বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে।
বাংলা:
বাংলা সাহিত্য পাঠের পাশাপাশি বাংলা সহপাঠ অর্থাৎ নাটক ও উপন্যাস ভালো করে পড়ে ফেলতে হবে। নবম দশম শ্রেণীর বাংলা ব্যাকরণ নতুন এবং পুরাতন উভয়টাই একবার হলেও পড়তে হবে। এক্ষেত্রে দুইটা ব্যাকরণের মধ্যে পার্থক্যগুলো বুঝতে হবে। আর যেহেতু বিগত বছরে মুখস্ত অংশ থেকে বেশি প্রশ্ন এসেছে, এজন্য কোন বিষয়কে কম গুরুত্ব দেওয়া যাবে না।
ইংরেজি:
ইংরেজির ক্ষেত্রে গত পাঁচ বছরের টপিক গুলোই চর্চা করতে হবে। টেক্সট বুক একবার হলেও শেষ করতে হবে। আর কীভাবে পড়তে হবে, আশা করি সে বিষয়ে যথেষ্ট ধারণা হয়েছে।
জিকে:
জিকে যেহেতু বাংলা ব্যাকরণ অথবা ইংরেজি গ্রামারের মতো না, এটা মনে রাখার বিষয়। এজন্য জিকে প্রতিদিন রুটিনে রাখা আবশ্যক। গত বছর সাম্প্রতিক থেকে অনেকগুলো প্রশ্ন এসেছিল এজন্য সাম্প্রতিককে কোনোভাবেই অবহেলা করা যাবে না। যে বই অথবা শীট আছে সেটা থেকেই সাম্প্রতিক পড়া যাবে। এক্ষেত্রে একটা সাম্প্রতিক পড়ার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্ক জানতে হবে। (যেমন যদি আমরা একটা সাম্প্রতিক পড়ি যে, দক্ষিণ আফ্রিকা ইসরাইলের বিরুদ্ধে মামলা করেছে এক্ষেত্রে এটা পড়ার পাশাপাশি দক্ষিণ আফ্রিকা, ICJ, ফিলিস্তিন সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে অর্থাৎ সাধারণ সাম্প্রতিকের সাথে রিলেটেড করে পড়তে হবে)।
আর যে কয়েকদিন বাকি আছে এ সময়ের ভিতরে নিজের সক্ষমতা অনুযায়ী যে কতবার পারা যায় সময় ভাগ করে রিভাইস দিতে হবে। এবং জিকের ক্ষেত্রেও একই কথা যে বিগত কয়েক বছরের টপিক গুলোই বেশি করে পড়তে হবে এবং যে টপিকগুলো থেকে প্রতিবছর প্রশ্ন আসে সে টপিকের কোন কিছুই বাদ রাখা যাবে না।
রিটেন:
রিটেনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বিষয় হলো নিয়মিত অনুশীলন করা। রিটেনে ভালো করতে চাইলে যে কয়েকদিন সময় আছে একদিনও এমন যাবে না যে রিটেন প্র্যাকটিস করা হয়নি। এক্ষেত্রে প্র্যাকটিস করার জন্য ইংরেজি প্রত্যেকটি লেসনের শেষে যে এক্সারসাইজ অংশ আছে সেখানে থেকে ইংলিশ প্রাকটিস করা যাবে এবং বাংলার ক্ষেত্রে যে কোন সহায়ক বই বা শীট থেকে অনুশীলন করা যাবে। সবচেয়ে বড় বিষয় প্রতিদিন নিয়মমাফিক অনুশীলন করতে হবে।
যদি কোনো শীট বাকি থাকে, তাহলে সেসব শীটের সব পড়ার কোনো দরকার নেই, যে টপিকগুলো বারবার পরীক্ষায় আসে সেগুলো পড়লেই যথেষ্ট।
প্রত্যেকে নিজ স্ট্রাটেজির সাথে উপরের বিষয়গুলো সমন্বয় করে পড়বে। নিজস্ব একটা পরিকল্পনা নিয়ে পড়ালেখা করবে।
আত্ম বিশ্বাস ভালো, তবে ওভার কনফিডেন্ট পরিহার করতে হবে। পরীক্ষার আগের রাতে পর্যাপ্ত ঘুমাবে। পরীক্ষার কেন্দ্রে আগে থেকেই উপস্থিত হওয়া, পরীক্ষার খাতায় নাম, রোল লেখা থেকে শুরু করে কোনো অবস্থাতেই এক্সাইটেড হওয়া যাবে না। উত্তর করার ক্ষেত্রে যার যে বিষয়ে দক্ষতা সেটা আগে লিখবে অথবা দাগাবে।
সর্বশেষ, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার সব কিছু অনিশ্চিত ব্যাপার। এজন্য সব সময় আল্লাহর উপর ভরসা রাখতে হবে। নিজের কাছে সৎ থাকতে হবে। হতাশ না হয়ে সৃষ্টিকর্তার কাছে বেশি বেশি প্রার্থনা করতে হবে, পরীক্ষা দিতে যাওয়ার আগেও আল্লাহর কাছে কায়মনোবাক্যে দুয়া করে যেতে হবে এবং এখনকার যে নৈতিক-স্পৃহা সেটা যেন শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের চান্স পাওয়া পর্যন্ত সীমাবদ্ধ না থাকে। চান্স পাওয়ার পরেও এগুলো ধরে রাখতে হবে।