বাংলাদেশের প্রাণিজ সম্পদ
জিডিপিতে প্রাণিসম্পদ উপ-খাতের অংশ স্বল্প হলেও দৈনন্দিন খাদ্যে মানব দেহের অত্যাবশ্যকীয় প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণে এ উপ-খাতের ভূমিকা অপরিসীম। ইতোমধ্যে প্রাণিসম্পদের উন্নয়নের জন্য সরকার বহুমুখী কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

জাত উন্নয়নের জন্য উৎপাদিত তরল ও হিমায়িত সিমেন দ্বারা কৃত্রিম প্রজনন কার্যক্রম, সম্প্রসারণ, রোগ প্রতিরোধের জন্য টিকা উৎপাদন ও বিতরণ, গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগির চিকিৎসা সেবাপ্রদান, স্বল্পমূল্যে হাঁস-মুরগির বাচ্চা সরবরাহ, খামারিদের প্রশিক্ষণ প্রদান প্রভৃতি প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়নের লক্ষ্যে গৃহীত উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর গবাদিপ্রাণী ও হাঁস-মুরগির বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করার জন্য বর্তমানে ১৭ প্রকারের টিকা উৎপাদন, বিতরণ ও প্রয়োগ করে আসছে।
প্রাণিসম্পদ বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
- গবাদি পশুর জাত উন্নয়নে পাক-ভারত উপমহাদেশে প্রথম অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন: ব্রিটিশ নাগরিক লর্ড লিন লিখগো
- বাংলাদেশের গবাদি পশুতে প্রথম ভ্রূণ বদল করা হয়: ৫ মে ১৯৯৫ সালে
- 'বাংলাদেশ গবাদি পশু গবেষণা ইনস্টিটিউট' অবস্থিত: ঢাকার সাভারে
- কেন্দ্রীয় গো-প্রজনন ও দুগ্ধ খামার অবস্থিত: ঢাকার সাভারে
- দুগ্ধজাত সামগ্রীর জন্য বিখ্যাত লাহিড়ীমোহন হাট অবস্থিত: পাবনায়
- 'বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্র' (সরকারি) অবস্থিত: করমজল, সুন্দরবন
- উন্নত জাতের গাভী: হরিয়ানা, সিন্দী, ফ্রিসিয়ান, জারসি, শাহীওয়াল, আয়ের শায়ের ইত্যাদি
- সবচেয়ে বেশি দুগ্ধ প্রদানকারী গাভীর জাত: ফ্রিসিয়ান
- উন্নত জাতের ব্রয়লার মুরগি: হাইব্রো, স্টার ব্রো, ইন্ডিয়ান রোভাব, মিনিব্রো
- মাংস ও ডিম উভয়টি পাওয়া যায়: রোড আইল্যান্ড রেড ও অস্টারলক জাতের মুরগি থেকে
- যমুনাপাড়ী ছাগলের অপর নাম: রামছাগল
- ব্ল্যাক বেঙ্গল: এক ধরনের ছাগল
- কুষ্টিয়া গ্রেড: বিশ্ব বাজারে বাংলাদেশের ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের চামড়ার নাম
- বনরুই: এক ধরনের বিড়াল
- ঘড়িয়াল দেখা যায়: পদ্মা নদীতে
- মুরগির রোগ: রাণীক্ষেত, বসন্ত, রক্তআমাশয়, কলেরা, বার্ডফ্লু ইত্যাদি
- হাঁসের রোগ: ডাক প্লেগ, রোপা
- গবাদি পশুর রোগ: গো-বসন্ত, যক্ষ্মা, ব্ল্যাক কোয়াটার, অ্যানথ্রাক্স
- Department of Livestock Services (DLS) অবস্থিত: ফার্মগেট, ঢাকা
- বাংলাদেশে অতিথি পাখি আসে: সাইবেরিয়া থেকে
- গো-চারণের বাথান রয়েছে: সিরাজগঞ্জ জেলায়
- 'রাজ কাঁকড়া' হলো: জীবন্ত জীবাশ্ম
- 'মিনিব্রো'/'হাইব্রো'/'স্টারব্রো' হলো: ব্রয়লার মুরগির উন্নত জাত
- যে সকল মুরগি কেবল মাংস উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়, তাদের বলে: ব্রয়লার
- ডিমপাড়া মুরগিকে লেয়ার বলে এবং সবচেয়ে বেশি ডিমপাড়া মুরগি: লেগহর্ন
- যে প্রাণী দাঁড়িয়ে ঘুমায়: ঘোড়া
- 'ব্ল্যাক কোয়াটার' হচ্ছে: গবাদিপশুর রোগ
কুমির ও ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল বিষয়ক তথ্য
বাংলাদেশের একমাত্র কুমির প্রজনন খামার ময়মনসিংহের ভালুকায়। বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো কুমির রপ্তানি করে জার্মানিতে। বাংলাদেশের একমাত্র এবং প্রথম বাণিজ্যিকভাবে কুমির উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের নাম Reptiles Farm Limited। দেশের একমাত্র সরকারি কুমির প্রজনন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হয় ২০০২ সালে।
২০১৮ সালে অধ্যাপক বজলুর রহমান মোল্লার নেতৃত্বে একদল বিজ্ঞানী 'ব্ল্যাক বেঙ্গল' ছাগলের জীবন রহস্য উন্মোচন করেন।
বাংলাদেশের কয়েকটি প্রাণী গবেষণা প্রতিষ্ঠান
| গবেষণা প্রতিষ্ঠান | অবস্থান |
|---|---|
| বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট | সাভার, ঢাকা |
| কেন্দ্রীয় গো-প্রজনন ও দুগ্ধ খামার | সাভার, ঢাকা |
| ছাগল প্রজনন কেন্দ্র | সিলেটের ঢিলাগড় |
| হরিণ প্রজনন কেন্দ্র | ডুলহাজরা, চকোরিয়া, কক্সবাজার |
| মহিষ প্রজনন ও উন্নয়ন কেন্দ্র | ফকিরহাট, বাগেরহাট |
| গাধা প্রজনন কেন্দ্র | রাঙামাটি |
| সরকারি কুমির প্রজনন কেন্দ্র | করমজল, সুন্দরবন |
| প্রথম কৃত্রিম কুমির প্রজনন কেন্দ্র | ভালুকা, ময়মনসিংহ |
| 'ছাগল উন্নয়ন ও পাঁঠা কেন্দ্র' অবস্থিত | রাজবাড়ি হাট |
| কেন্দ্রীয় হাঁস প্রজনন খামার | হাজীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ |
বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও অভয়ারণ্য
বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য: কোনো এলাকা যেখানে বন্যপ্রাণী ধরা, মারা, গুলি ছোড়া বা ফাঁদ পাতা নিষিদ্ধ এবং মুখ্যত বন্যপ্রাণীর নিরাপদ বংশ বিস্তারের লক্ষ্যে সকল প্রাকৃতিক সম্পদ, যেমন- উদ্ভিদ, মাটি ও পানি সংরক্ষণের নিমিত্তে বন ব্যবস্থাপনা করা। বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য ২৪টি। (এছাড়া সামুদ্রিক রক্ষিত এলাকা রয়েছে- ১টি)।
- সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ড মেরিন প্রোটেক্টেড এরিয়া: ১টি। (সামুদ্রিক রক্ষিত এলাকা)
- বিশেষ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এলাকা: ২টি
- রাতারগুল বিশেষ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এলাকা
- আলতাদিঘী বিশেষ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এলাকা
- ভালচার সেভ জোন বা শকুন নিরাপদ এলাকা রয়েছে: ২টি
- বাংলাদেশে সাফারি পার্ক মোট: ২টি
- দেশের প্রথম 'প্রজাপতি পার্ক' অবস্থিত পতেঙ্গা, চট্টগ্রামে। দেশের প্রথম প্রজাপতি পার্ক ও গবেষণা কেন্দ্র অবস্থিত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।
If you believe any content on our website infringes your rights, please contact us. We will review and take action promptly.